
ছবিঃ সংগ্রহীত
বিশ্বের কঠোরতম নিরাপত্তাবেষ্টিত কারাগার বলতে অনেকেই আলকাট্রাজ বা গুয়ান্তানামো বে-এর কথা ভাবতে পারেন। তবে বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্রের এডিএক্স ফ্লোরেন্স সুপারম্যাক্স কারাগারটি এতটাই সুরক্ষিত যে, এখান থেকে আজ পর্যন্ত কেউ পালাতে পারেনি এবং সম্ভবত কখনো পারবেও না।
এই কারাগারে বন্দিরা দিনে ২৩ ঘণ্টা একাকী একটি ছোট সেলে বন্দি থাকে এবং মাত্র এক ঘণ্টার জন্য বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পায়—সেটাও লোহার খাঁচার ভেতরে! সেলের জানালাগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে বন্দিরা বুঝতে না পারে যে তারা কারাগারের কোন অংশে অবস্থান করছে।
এখানে বন্দিদের প্রতি মাসে মাত্র একটি ফোন কল করার অনুমতি দেওয়া হয় এবং কেবলমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে চিঠি গ্রহণ করতে পারে। কেউ পালানোর চেষ্টা করলে, এক বোতাম চেপেই ১৪টি রিমোট কন্ট্রোলড দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। বন্দিদের খাবারও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়, যাতে রক্ষীদের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগাযোগ না থাকে।
কোথায় অবস্থিত এই ‘নরকের কারাগার’?
এডিএক্স ফ্লোরেন্স কারাগারটি যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। এটি ১৯৯৪ সালে চালু করা হয় মূলত অতি বিপজ্জনক বন্দিদের জন্য, যারা অতীতের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত কারাগার থেকেও পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল।
কারাগারটি ৪৯ একর জমির উপর নির্মিত এবং ২৪ ঘণ্টা সশস্ত্র প্রহরীদের টহল, মোশন সেন্সর, ইলেকট্রনিক বাউন্ডারি ও উন্নত নজরদারির আওতায় থাকে।
কাদের রাখা হয়েছে এই কারাগারে?
এডিএক্স ফ্লোরেন্সে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধীরা। এখানে বন্দি রয়েছেন—
✅ ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারীরা
✅ কুখ্যাত মাফিয়া ডন এল চাপো, যিনি অতীতে কঠোর নিরাপত্তার কারাগার থেকেও পালিয়েছিলেন
✅ সিরিয়াল কিলার, সন্ত্রাসী ও অন্যান্য চরম বিপজ্জনক অপরাধীরা
পালানো কেন অসম্ভব?
কারাগারটি মরুভূমি ও পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত, তাই পালানোর পর লুকানোর কোনো উপায় নেই। পুরো কারাগারে উন্নত সেন্সর, ক্যামেরা ও রোবটিক টহল ব্যবস্থা রয়েছে। বন্দিদের একাকী রাখা হয়, যাতে তারা গোপনে কোনো পরিকল্পনা করতে না পারে।
এতটাই গোপনীয়তা বজায় রাখা হয় যে, আজ পর্যন্ত কোনো সাংবাদিক বা গণমাধ্যম এই কারাগারের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পায়নি। বাইরের বিশ্ব কেবল বন্দিদের নাম জানতে পারে, কিন্তু তারা কেমন আছে বা কীভাবে দিন কাটাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অজানা।
এডিএক্স ফ্লোরেন্স শুধুমাত্র একটি কারাগার নয়—এটি একটি নিখুঁত নিরাপত্তা বলয়, যেখানে প্রবেশ করা যেমন কঠিন, পালানো তার চেয়েও অসম্ভব!
ইমরান