
ছবি: সংগৃহীত
পশ্চিমা ও পূর্ব বিশ্বে পারিবারিক কাঠামোর মধ্যে বিভাজন বহু আগেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল, যা ভিন্ন অর্থনীতি ও সামাজিক মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। পশ্চিমা সমাজে পারমাণবিক (নিউক্লিয়ার) পারিবারিক মডেল গড়ে ওঠে, যা স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরতার উপর জোর দেয়। অন্যদিকে, পূর্বে সমাজে সম্প্রসারিত (একত্রিত) যৌথ পরিবার প্রাধান্য পায়, যা পুরুষ উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে গঠিত এবং বহু-প্রজন্মের বসবাসের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল।
পশ্চিমা পরিবার সাধারণত ছোট আকারের ছিল এবং বিবাহের গড় বয়স ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি। শিল্পায়নের ফলে এই কাঠামো আরও পরিবর্তিত হয় এবং বিবাহ একটি অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হয়। অন্যদিকে, রাশিয়া, ভারত ও চীনের মতো দেশগুলোর পারিবারিক গঠন পুরুষ বংশধারার উপর নির্ভরশীল ছিল, যেখানে পুরুষরা পারিবারিক সম্পত্তি ও উত্তরাধিকার নিয়ন্ত্রণ করত এবং বিবাহ প্রায়শই পারিবারিকভাবে নির্ধারিত হতো।
তবে, বিশ্বায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে পারিবারিক কাঠামোর মধ্যে সাদৃশ্য দেখা যাচ্ছে। একসময় শুধুমাত্র পশ্চিমা সমাজে প্রচলিত পারমাণবিক পরিবার বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করেছে এবং ঐতিহ্যবাহী সম্প্রসারিত পারিবারিক কাঠামোর স্থান দখল করেছে। জাপানের মতো দেশে ঐতিহ্যগত পারিবারিক কাঠামো ইতিমধ্যে ভেঙে পড়তে শুরু করেছে, যেখানে নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার প্রতি বেশি আগ্রহী এবং বিবাহের প্রতি কম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পূর্ব ও পশ্চিম উভয় সমাজেই পারিবারিক ব্যবস্থাগুলো ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের উত্থান, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সামাজিক নিয়মের পরিবর্তনের ফলে একক পরিবার, বিলম্বিত বিবাহ এবং উচ্চতর বিবাহ বিচ্ছেদের হার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সারা বিশ্বে প্রচলিত পারিবারিক মডেলগুলোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
চলমান এই রূপান্তর ইঙ্গিত দেয় যে স্থিতিশীল পারিবারিক কাঠামো হুমকির মুখে রয়েছে এবং পরিবারগুলো কিভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবে, তার ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।
তথ্যসূত্র: https://www.qeios.com/read/9E8XH1
আবীর