
ছবিঃ সংগৃহীত
নিজের তৈরি প্লেনে আকাশে উড়ছে মানিকগঞ্জের অজপাড়া গাঁয়ের এক যুবক। রানওয়েতে চক্কর দিয়েই আকাশে উড্ডয়ন করে তার বিমান। এর আগে দেশে অনেকে তৈরি করলেও, উড়াতে পারেনি কেউ। তাই এলাকায় রীতিমত হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন জুলহাস।
চার বছর আগে শখের বসে রিমোট কন্ট্রোল (আরসি) প্লেন তৈরি করা শুরু করেছিলেন এই উদ্যমী তরুণ। বেশ কয়েকটি সফল আরসি প্লেন তৈরির পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন আরও বড় কিছু করার। গবেষণা ও প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় তিনি একের পর এক প্রায় ১৫০টিরও বেশি আরসি প্লেন তৈরি করেন এবং সফলতা পান।
সেখান থেকেই জন্ম নেয় নতুন স্বপ্ন—নিজের তৈরি আল্ট্রালাইট বিমান আকাশে ওড়ানোর। দুই বছর আগে শুরু হওয়া এই প্রকল্প প্রথমবার সফল না হলেও তিনি হাল ছাড়েননি। এক বছরের কঠোর পরিশ্রমে এবার তৈরি করেছেন পরীক্ষামূলক একটি আল্ট্রালাইট বিমান, যা ঝুঁকিহীনভাবে আকাশে উড়তে সক্ষম।
বিমানের প্রযুক্তিগত বিবরণ
- মোট ওজন: ১০০ কেজি (পাইলটসহ ১৬০ কেজি)
- উইংসস্প্যান (ডানা): ৩২ ফুট
- বডির দৈর্ঘ্য: ১৮ ফুট
- উপাদান: ৮০% অ্যালুমিনিয়াম, ১০% স্টেইনলেস স্টিল, ১০% লোহা
- কভারিং: বিশেষ ফ্যাব্রিক
- ইঞ্জিন: ৭ হর্সপাওয়ারের পানির পাম্প ইঞ্জিন
- জ্বালানি: পেট্রোল বা অকটেন
- জ্বালানি দক্ষতা: ১ লিটার পেট্রোলে ২৫-৩০ কিলোমিটার চলতে সক্ষম
- সর্বোচ্চ গতি: ৭০ কিলোমিটার/ঘণ্টা
- উড্ডয়ন গতি: ৪৫ কিলোমিটার/ঘণ্টা
বিশ্বের অন্যান্য আল্ট্রালাইট বিমানের তুলনায় যেখানে ৪০-৫০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়, সেখানে মাত্র ৭ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দিয়ে এই বিমান উড়ানোর নজির গড়েছেন তিনি। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও এমন একটি সফল উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।
এই দেশীয় প্রযুক্তির বিমান ভবিষ্যতে আরও উন্নত করা সম্ভব হলে এটি বাংলাদেশের বিমান গবেষণা ও ব্যক্তিগত বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে পারে।
ইমরান