
ছবি : সংগৃহীত
প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় কিছু প্রাণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা কৃত্রিম কীটনাশকের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে প্রাকৃতিকভাবে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এমনই দশটি প্রাণী প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
১. পিঁপড়ে:
পিঁপড়েরা এফিড, শুঁয়োপোকা ও পোকামাকড় শিকার করে কীটপতঙ্গের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাদের সুসংগঠিত উপনিবেশ এবং খাদ্য অনুসন্ধানের কৌশল কৃষি ক্ষেত্র ও উদ্ভিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক।
২. বাদুড়:
বাদুড় নিশাচর কীটশিকারি, যারা রাতের বেলায় প্রচুর পরিমাণে মথ, পোকামাকড় ও অন্যান্য উড়ন্ত কীটপতঙ্গ খেয়ে ফেলে। ফলে ফসল রক্ষা পায় এবং কীট বাহিত রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
৩. ফড়িং:
ফড়িং দক্ষ উড়ন্ত শিকারি, যারা মশা, মাছি এবং অন্যান্য উড়ন্ত কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে। এদের উপস্থিতি সুস্থ পরিবেশের প্রতীক, কারণ তারা বাতাসে ভাসমান কীটপতঙ্গের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে।
৪. ব্যাঙ:
ব্যাঙ প্রাকৃতিক কীটশিকারি হিসেবে পরিচিত। তারা মশা, মাছি ও বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করে।
৫. লেডিবার্ড (গুবরে পোকা):
লেডিবার্ড বা লেডিবাগ এফিড নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। যদিও এদের কিছু প্রাকৃতিক শত্রু যেমন পাখি ও পরজীবী বোলতা আছে, তবে ফসল ও শোভাময় উদ্ভিদ রক্ষায় এদের ভূমিকা অপরিসীম।
৬. টিকটিকি:
বিশেষত গেকো প্রজাতির টিকটিকিরা মাছি, তেলাপোকা এবং মাকড়সা শিকার করে। কীটনাশকের পরিবর্তে এদের সংরক্ষণ করলে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে প্রাকৃতিক উপায় বজায় থাকে, বিশেষত উষ্ণ আবহাওয়ার অঞ্চলে।
৭. পেঁচা:
পেঁচা, বাজপাখি ও অন্যান্য শিকারী পাখি ইঁদুর ও পোকামাকড় খেয়ে কৃষি জমি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। এদের শিকারী স্বভাব কীটনাশকের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে আনে।
৮. মাকড়সা:
মাকড়সা নীরব কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। এরা জাল বিছিয়ে মাছি, মশা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ ধরে ফেলে, যা বাড়ি ও বাগানের জন্য উপকারী।
৯. আবাবিল (Swallow):
আবাবিল ও ব্লুটিট পাখিরা মশা, শুঁয়োপোকা ও অন্যান্য ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল ও গাছের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। ফলে পরিবেশবান্ধব পোকা নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
১০. ব্যাঙাচি (Toad):
ব্যাঙাচিরা শামুক, গুঁইসাপ ও বিভিন্ন পোকামাকড় খেয়ে বাগানের জন্য উপকারী পরিবেশ তৈরি করে। এদের খাদ্যাভ্যাসের ফলে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে বাগান রক্ষায় সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক কীটনাশকের গুরুত্ব
এই প্রাণীগুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদের সংরক্ষণ করলে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশবান্ধব কৃষি ও উদ্যানতত্ত্বকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
সূত্র: ন্যাচার গার্ডিয়ানস
মো. মহিউদ্দিন