![১৬ বছর ধরে স্বামীর অপেক্ষায় স্ত্রী, ভালোবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত ১৬ বছর ধরে স্বামীর অপেক্ষায় স্ত্রী, ভালোবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/৩-88-2502141751.jpg)
ছবি: সংগৃহীত।
ঠুনকো কারণে সম্পর্ক ছিন্ন করার যুগে ঠাকুরগাঁওয়ের বেবী আক্তার গড়েছেন ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ। স্বামীর অনুপস্থিতিতে শ্বশুরবাড়িতে কাটিয়েছেন দীর্ঘ ১৬ বছর, যেখানে তাঁকে সহ্য করতে হয়েছে নানা প্রতিকূলতা।
২০০৯ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ী জোতপাড়া গ্রামের মোতাহার হোসেন মানিক বিডিআরে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে ছুটিতে বাড়ি ফিরে পরিবারে পছন্দে পাশের গ্রামের বেবী আক্তারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে বিয়ের মাত্র ১৪ দিনের মাথায় কর্মস্থলে ফিরে যান মোতাহার। এরই মধ্যে ঘটে যায় পিলখানা হত্যাকাণ্ড। সে মামলার আসামি হিসেবে তাকে ১৬ বছর কাটাতে হয় কারাগারে।
মোতাহার হোসেনকে বিনা বিচারে ১৬ বছর কারাগারে থাকতে হয়। এই দীর্ঘ সময়ে বেবী আক্তার স্বামীর জন্য প্রতীক্ষা করেছেন শ্বশুরবাড়িতেই। এ সময় পরিবার ও সমাজের নানা চাপ এবং কটু কথা সত্ত্বেও তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
বেবী আক্তার বলেন, "পরিবার থেকে ফিরে যাওয়ার জন্য অনেক চাপ ছিল। কিন্তু আমার বাবার ভাইদের সহায়তায় এই প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠেছি। নানা মানুষের নানা কথা শুনতে হয়েছে, কিন্তু ভালোবাসার শক্তি আমাকে দৃঢ় রেখেছে। আমার বিশ্বাস ছিল যে সত্য একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে, এবং শেষ পর্যন্ত আমরা জয়ী হয়েছি।"
সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোতাহার। দীর্ঘদিন পর স্ত্রীর সঙ্গে পুনর্মিলিত হয়ে তিনি বলেন, "১৬ বছর অনেক দীর্ঘ সময়। আমার স্ত্রী যেভাবে এই সময়টায় আমার জন্য অপেক্ষা করেছে, তা খাঁটি ভালোবাসা ছাড়া সম্ভব নয়। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাকে এমন একজন জীবনসঙ্গী দিয়েছেন।"
মোতাহার আরও বলেন, "কারাগারে থাকা অবস্থায় বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। তবে আজ এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছে। আমরা এখন একসঙ্গে আছি, যা আল্লাহর অশেষ রহমত।"
সায়মা ইসলাম