ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

বিদেশে পড়তে যাওয়ার এক বছর আগে ধাপে ধাপে যা করা জরুরি

প্রকাশিত: ০২:৫০, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিদেশে পড়তে যাওয়ার এক বছর আগে ধাপে ধাপে যা করা জরুরি

ছবি : সংগৃহীত

বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অনেক শিক্ষার্থীরই থাকে, তবে এই যাত্রা সহজ নয়। সঠিক প্রস্তুতি না নিলে আবেদন, ভিসা ও অ্যাডমিশনের বিভিন্ন পর্যায়ে জটিলতার মুখে পড়তে হতে পারে। তাই যারা বিদেশে পড়তে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এক বছর আগেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

বিদেশে পড়তে যাওয়ার আগে নীচের ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা উচিত—

১. সার্টিফিকেটের নামের মিল নিশ্চিত করুন

বিদেশে পড়তে গেলে আপনার সকল একাডেমিক ও সরকারি কাগজপত্রে (যেমন, জন্মসনদ, পাসপোর্ট, সার্টিফিকেট, NID) নামের বানান ও তথ্য সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করা জরুরি। সামান্য একটি ভুলের জন্য ভিসা আবেদন আটকে যেতে পারে।

২. পাসপোর্ট তৈরি বা সংশোধন করুন

যদি পাসপোর্ট না থাকে, তবে এখনই আবেদন করুন। পাসপোর্টের তথ্য একাডেমিক সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) সঙ্গে মিলিয়ে নিন। কোনো তথ্য ভুল থাকলে দ্রুত সংশোধন করুন।

৩. একাডেমিক ডকুমেন্ট সংগ্রহ করুন

SSC, HSC, অনার্স, মাস্টার্সসহ পূর্ববর্তী সকল পরীক্ষার মার্কশিট ও সার্টিফিকেট সংগ্রহ করুন। অনেক সময় পুরোনো কাগজপত্র আনতে সময় লাগতে পারে, তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিন।

৪. সার্টিফিকেট সত্যায়িত করান

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সার্টিফিকেট সত্যায়িত করিয়ে নিন। বিদেশে আবেদন ও ভিসা প্রক্রিয়ার জন্য এটি বাধ্যতামূলক হতে পারে।

৫. IELTS বা TOEFL প্রস্তুতি নিন

যদি ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করতে চান, তবে IELTS/TOEFL পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিন। ভালো স্কোর না পেলে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সম্ভব হবে না।

৬. স্কলারশিপ ও অন্যান্য পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন

যদি স্কলারশিপ চান, তবে GRE, GMAT, SAT, ACT-এর মতো আন্তর্জাতিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন।

৭. রেকমেন্ডেশন লেটার সংগ্রহ করুন

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হলে আপনাকে ভালোভাবে চেনেন এমন দুই বা তিনজন শিক্ষকের কাছ থেকে রেকমেন্ডেশন লেটার সংগ্রহ করুন।

৮. স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP) লিখুন

আপনার পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে SOP লিখতে হবে, যা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৯. বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করুন

পছন্দের দেশ ও বিষয় বিবেচনা করে কমপক্ষে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিন। টিউশন ফি, কোর্সের গুণগত মান, আবাসন ব্যবস্থা ইত্যাদি বিবেচনায় রাখুন।

১০. বাজেট পরিকল্পনা করুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও বিদেশে থাকা-খাওয়ার খরচ হিসাব করুন এবং সে অনুযায়ী বাজেট তৈরি করুন।

১১. আবেদন প্রক্রিয়া ও সময়সীমা সম্পর্কে জানুন

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবেদন ডেডলাইন মেনে চলুন এবং সময়মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন।

১২. ভলেন্টিয়ার কাজে যুক্ত হন

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় ভলেন্টিয়ারিং অভিজ্ঞতা অনেক ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা দেয়। তাই আগেভাগে কোনো সামাজিক বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে যুক্ত হওয়া ভালো।

১৩. রান্না শেখা জরুরি

বিদেশে গিয়ে খরচ কমাতে হলে নিজে রান্না শেখা দরকার। নিয়মিত খাওয়া যায় এমন কিছু সহজ খাবার বানানো শিখে নিন।

১৪. ড্রাইভিং শেখা ও লাইসেন্স সংগ্রহ করুন

যদি বিদেশে যান এবং গাড়ি চালানোর পরিকল্পনা থাকে, তাহলে ড্রাইভিং শেখার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করুন।

১৫. কম্পিউটার স্কিল বাড়ান

মাইক্রোসফট অফিস, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট, ওয়ার্ডপ্রেস বা প্রোগ্রামিং স্কিল থাকলে পড়াশোনা ও চাকরির ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, বিদেশে পড়তে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হলে আগেভাগে পরিকল্পনা করা অত্যন্ত জরুরি। উপরোক্ত ১৫টি ধাপ অনুসরণ করলে ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং বিদেশের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া যাবে। তাই এক বছর আগেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করুন এবং সময় নষ্ট না করে কাজগুলো সম্পন্ন করুন!

মো. মহিউদ্দিন

×