ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১

মায়ের ওপর বড় কোন শেফ নাই:মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মায়ের ওপর বড় কোন শেফ নাই:মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, আজকের অনুষ্ঠানে অনেক শেফের কথা বলা হলেও কিন্তু আমি মনে করি প্রতিটি বাড়িতে একএকজন শ্রেষ্ঠ শেফ রয়েছে।

প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন মায়ের ওপর বড় কোন শেফ হয়? কিন্তু অনেক সময় বিজ্ঞাপনে যখন দেখানে হয় মায়ের রান্নার মত স্বাদ, মায়ের রান্না যখন পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করে তখন তা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

উপদেষ্টা আজ বিকালে বানানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্কে তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের আয়োজনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় "এসো দেশ বদলাই পৃথিবী বদলাই"  শিরোনামে বাংলার ভোজ বাংলাদেশি  ঐতিহ্যবাহী খাবার উৎসব "বাংলাদেশ সেফ সম্মেলনে" প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

দেশীয় খাবারকে সংস্কৃতির অংশ উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের পর আমাদের কাছে নতুন বাংলাদেশ এসেছে; আর নতুন দেশে তরুণরা আমাদের পথ দেখিয়েছে। এই তরুণদের সাথে দেশীয় খাবারের পরিচয় করে দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী প্রজন্ম যদি দেশীয় খাবারের সাথে পরিচিত না হয়; তখন মনে হবে তরুণরা দেশে থেকেও যেন দেশে নাই। তাই দেশীয় খাবারের প্রতি সন্তানদের আগ্রহ সৃষ্টি করার দায়িত্ব প্রতিটি অভিভাবকের।

উপদেষ্টা বলেন, ১লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ  আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। বৈশাখে ইলিশের ব্যান পিরিয়ড থাকে আর তখন ব্যাপকভাবে ইলিশ খাওয়ার প্রতি আগ্রহ দেখা যায়। আমাদের সংস্কৃতি হলো চৈত্র সংক্রান্তি। এসময় মাছ-মাংস ছাড়া বিভিন্ন রকমের শাক দিয়ে রান্না করা হয় আর এগুলোই বাঙালি সংস্কৃতি।

ট্যুরিজম বোর্ডের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে উপদেষ্টা বলেন, শেফ বলে নারীদের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করা হচ্ছে। ঘরে রান্না করলে রাধুনি আর ড্রেস পরে রান্না করলে শেফ বলা হয়। এইযে পার্থক্য তা আমাদের দূর করতে হবে। শেফদের শিল্পীর মর্যাদাদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি শেফ একেকজন শিল্পী। তাদের নিজস্ব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ফলে রান্নার বৈচিত্র্য দেখা যায়। তাই তারা শিল্পীর মর্যাদা প্রাপ্তির যোগ্যতা রাখে।

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ইন্ড্রাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী (গ্রেড-১) আবু তাহির মুহাম্মদ জাবের, এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ইন্ড্রাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল শাহিদ হোসেন শামীম।

উপদেষ্টা পরে ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যন্ড রিসোর্ট, লে মেরিডিয়ান, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, ক্রাউন প্লাজা, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল, ওয়েস্টিন, রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন ও সিক্স সিজনস হোটেলের এক্সিকিউটিভ শেফদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।

উল্লেখ্য, কোন এলাকায় কোন খাবার জনপ্রিয়, স্বাদই বা কেমন- এমন সব প্রশ্নের উত্তর মিলছে ঢাকার বনানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্কে। সত্তরটি স্টলে দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশের ইলিশ, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ি চমচম, ছানামুখী, সুন্দরবনের মধু, কুমিল্লার রসমালাইসহ নানাবিধ দেশি খাবার ও পাহাড়ি খাবারের প্রদর্শনী, বিপণন ও উপভোগের ব্যবস্থা রয়েছে। বনানীর এ মাঠে, দক্ষ কালিনারী প্রফেশনাল ও উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে এই উৎসব হচ্ছে।

শিহাব

×