মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের সাভার গ্রামের বাসিন্দা আবদুল লতিফের ছেলে তরুণ উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলামের ঘরজুড়ে অসংখ্য লোহার খাঁচা। রং-বেরঙের বাহারি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত তার খামার। এক সময়ের শখ আজ তার স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখিয়েছে।
গার্মেন্টসকর্মী শহিদুলের পাখির প্রতি ভালোবাসা ছাত্রজীবন থেকেই। ২০২১ সালে মাত্র ৩ হাজার টাকা দিয়ে এক জোড়া বাজরিগার কিনে শুরু করেছিলেন এই যাত্রা। ধীরে ধীরে সেটাই রূপ নিয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। এখন তার খামারে রয়েছে ১৫ প্রজাতির প্রায় ৫০ জোড়া পাখি। রয়েছে ইন্ডিয়ান রিংনেক টিয়া, লাভ বার্ড, ককাটেইল, জাপানিজ বাজরিগার, ইংলিশ বাজরিগার, ফিঞ্চসহ নানা জাতের পাখি। পাশাপাশি কবুতর, কোয়েল পাখি, চিনা মুরগি, টাইগার মুরগি ও ফাউমি জাতের মুরগিও পালন করছেন তিনি।
প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এই খামার থেকে প্রতি মাসে গড়ে অর্ধলাখ টাকার পাখি বিক্রি করেন শহিদুল। সব খরচ বাদ দিয়ে তার মাসিক আয় ২০ হাজার টাকার মতো। শখের পাখি পালন যে বেকারত্ব দূর করার পথ হয়ে উঠতে পারে, শহিদুল এখন তারই উদাহরণ। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেক তরুণই আগ্রহী হয়ে উঠছেন পাখি পালনে। শুধু ব্যবসাই নয়, শহিদুলের খামার এখন দর্শনার্থীদের জন্যও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। নানা এলাকা থেকে মানুষ আসে তার খামার দেখতে, পাখির সৌন্দর্য উপভোগ করতে। পাখি প্রেমিক সালাম মিয়া বলেন, পাখি পালনে যেমন আনন্দ, তেমনই আছে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা। শহিদুলের উদ্যোগ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকে শুরু হলেও শহিদুল আজ বাণিজ্যিকভাবে সফল এক উদ্যোক্তা। তার উদ্যোগ প্রমাণ করে, সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রম থাকলে শখই হয়ে উঠতে পারে সফলতার সিঁড়ি।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইমরান হোসেন জানান, অল্প পুঁজিতে পাখি পালন করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। শহিদুলের মতো যে কেউ আগ্রহী হলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।