ছবি: সংগৃহীত।
তেলাপোকার দুধ শুনলেই অনেকের মনে অস্বস্তি কিংবা বিতৃষ্ণা আসতে পারে। তবুও, একটু মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করুন, কারণ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে হয়তো আপনারও এটি উপকারে আসতে পারে। ভাবছেন, “গরুর দুধ খেয়ে তো বড় হয়েছি, মুরগি ও গরুর মাংস খেয়ে অভ্যস্ত, কিন্তু তেলাপোকার দুধ!” শুনেই কি আপনার অস্বস্তি বেড়ে যাচ্ছে? কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, গরুর দুধের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে এই তেলাপোকার দুধে।
তাহলে কিসের দেরি? তেলাপোকা খুঁজে বের করার কাজে এখনই নেমে পড়া যাক!
তেলাপোকা দেখলেই যাদের ঘৃণা আসে, তারা ভাবছেন কীভাবে সেই তেলাপোকা থেকে দুধ সংগ্রহ করা সম্ভব? তাহলে, নিশ্চয়ই আপনাদের মনে একটি প্রশ্ন আসছে: "তেলাপোকা কবে থেকে তাদের শরীরে দুধ তৈরি করছে? তারা তো স্তন্যপায়ী প্রাণী নয়!"
এখানে মনে রাখতে হবে, সব তেলাপোকা এই কাজটি করতে পারে না। বিশেষত, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া একটি বিশেষ প্রজাতির তেলাপোকা, প্যাসিফিক বিটল তেলাপোকা, যারা নিজেদের শরীরে দুধ তৈরি করতে সক্ষম। অন্যান্য তেলাপোকাদের মতো এগুলো ডিম পাড়ে না, বরং সরাসরি গর্ভে সন্তান জন্ম দেয়। জন্মের পর, মা তেলাপোকা তাদের সন্তানদের পুষ্টি সরবরাহের জন্য নিজের শরীরের মধ্যে একটি সাদা তরল তৈরি করে, যা আসলে তাদের দুধ।
বিজ্ঞানীরা এই তরলটি বিশ্লেষণ করেছেন এবং দেখতে পেয়েছেন, এতে প্রোটিন, চর্বি ও লিপিডের সুষম মিশ্রণ রয়েছে, যা অত্যন্ত উপকারী। আশ্চর্যের বিষয়, এই দুধের একটি একক প্রোটিন স্ফটিকের পরিমাণ মহিষের দুধের তুলনায় তিন গুণ এবং গরুর দুধের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে।
তাহলে, তেলাপোকা নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হয়তো কিছুটা বদলাতে হতে পারে। জীবনের অনিশ্চিত পথ ধরে একদিন হয়তো তেলাপোকার দুধ আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় জায়গা করে নেবে!
নুসরাত