ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

ধাত্রী বর্ণিল করে ধরিত্রীকে

উপকারী গাছের  ক্ষুদ্র লাল  ফুল

মোরসালিন মিজান 

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

উপকারী গাছের  ক্ষুদ্র লাল  ফুল

.

সবাই দেখেছেন বা চেনেন, না, ধাত্রী এমন ফুল নয়। ধাত্রী বা ধাই কম চেনা- জানা ফুলগুলোর একটি। ভরা মৌসুমে লাল রঙের ফুলে গাছ ভর্তি হয়ে যায়। পাতা আছে বটে, ফুলে যৌক্তিক আধিপত্য। ধাত্রী বর্ণিল করে ধরিত্রীকে। শাখা-প্রশাখা যতদূর বিস্তৃত হয় ততদূর পর্যন্ত ফুল। ছোট ছোট ফুলের বিপুল সমাবেশ। কী যে ভালো লাগে! পাহাড়ি পরিবেশে গাছ ভালো হয়। পাহাড়ের ঢালে জন্মায়। তবে সমতলেও আছে। ফুল ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে প্রস্ফুটিত অবস্থায় দেখা যায়। এখন এই জানুয়ারিতেও ফুটে আছে। দেখার জন্য অন্য কোথাও না যেতে পারলে রাজধানীর রমনা পার্কে ঢুকে পড়ুন। কতশত গাছ সবুজ উদ্যানে। অযুত ফুল। এর পরও ধাত্রী খুঁজে নিতে সমস্যা হবে না। মিরপুরের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে গাছ আছে। ফুল ফুটেছে কি না, ঘুরে দেখে আসতে পারেন। 
এই গাছের আরও কিছু নাম আছে। যেমন ফায়ার ফ্লেম বুশ। শিনাজিটিয়া। উডফোর্ডিয়া। প্রাচীন গাছের উল্লেখ আছে পুরাণে। সংস্কৃত নাম অগ্নিজ্বালা, বহ্নিশিখা, ধাতকী, ধাউরি, পর্বতী, তা¤্রপুষ্পী, বহ্নিজ্বালা, অগ্নিবালা, ধাত্রীপুষ্পীকা এবং ধাতুপুষ্পী। কোন নামের কী অর্থ কে বলবে! আপাতত সেদিকে না যাই। সাধারণ ফুলপ্রেমীদের চেনার সুবিধার্তে বলি, ধাই গাছের আদি নিবাস ভারত। বর্তমানে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আছে। এটি গুল্মজাতীয় পর্ণমোচী উদ্ভিদ। ঝোপঝাড়ের মতো বেড়ে ওঠে। উদ্ভিদবিদদের মতে, শাখা- প্রশাখা ৫ থেকে ১২ মিটার পর্যন্তু উঁচু হয়। বিস্তৃত হয় চারপাশেই। ছাল মসৃণ, বাদামি। পাতা লম্বায় ৫ থেকে ৭ সেমি.। মূল আকর্ষণ, আগেই বলেছি, ফুল। লাল রঙের ফুল লম্বা ডালের প্রায় পুরোটাজুড়ে গুচ্ছাকারে ফুটে থাকে। রক্তিম পুষ্পদ-ে চোখ আটকে যাবে আপনারও। 
সৌন্দর্যের পাশাপাশি ধাই বা ধাত্রীর আছে ভেষজ গুণ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করেন যারা তারা বহুবিধ গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের বিশেষ উপকারে আসে। এ কারণেই ধাত্রী নামকরণ। শরীরের ক্ষতস্থানে ধাইফুল চূর্ণ ছিটিয়ে দিলে মুহূর্তেই ফল পাওয়া যায়। আরও বেশ কিছু রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় ধাত্রী। এসবের বাইরে ফুল, পাতা ও ডাল থেকে রঙ তৈরি করা হয়। সব মিলিয়ে ধাত্রীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আবশ্যকতা আছে বৈকি! 

×