ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুবক হারুন আসাদ মির্জার সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের সূত্র ধরে কক্সবাজারের তরুণী সার্জিনা আফরিন আমিরার জীবন নাটকীয় মোড় নেয়। এই ভালোবাসার গল্প আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং শেষ পর্যন্ত তা বিচারালয়ের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়।
ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে হারুন ও আমিরার মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, যা একসময় প্রেমে রূপ নেয়। তবে আমিরার পরিবারের কাছে সম্পর্কটি প্রকাশ পেলে তাদের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা। পরিবারের চাপ এবং মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে আমিরার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়, কেড়ে নেওয়া হয় তার মোবাইল ফোন এবং তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়।
এই পরিস্থিতিতে আমিরার সঙ্গে যোগাযোগের সব পথ বন্ধ হয়ে গেলে ভালোবাসার টানে হারুন বাংলাদেশে ছুটে আসেন। অনেক চেষ্টা করেও আমিরার সঙ্গে দেখা করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। হাইকোর্টে রিট আবেদন করে হারুন তার প্রেমিকাকে মুক্ত করে তার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার আবেদন জানান।
হাইকোর্ট রিট শুনানির প্রাথমিক পর্যায়ে আমিরা এবং তার বাবা-মাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। আজকের শুনানিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন। শুনানি শেষে আদালত আমিরার পড়াশোনার সুযোগ নিশ্চিত করতে তার বাবা-মাকে নির্দেশ দেন এবং তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। পাশাপাশি বাবা-মা ও মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেন।
আদালত আরও নির্দেশ দেন, আমিরার পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনো আপস করা যাবে না এবং তাকে পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মার্কিন যুবক হারুন আসাদ মির্জাকে নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়েও মৌখিক নির্দেশ দেন আদালত।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন হারুন এবং তার হয়ে লড়াই করা আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানান। এই মামলার রায় শুধু ভালোবাসার জয়কেই প্রতিষ্ঠিত করেনি, বরং মৌলিক অধিকার রক্ষার বিষয়েও একটি উদাহরণ স্থাপন করেছে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/wVobA0zYC1Q?si=9Zltxus8iU37zaAV
এম.কে.