.
শীত বাঙালির ভীষণ পছন্দের। সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে এই ঋতুর জন্য অপেক্ষা করেন। ভেতরে ভেতরে চলে নানা প্রস্তুতি। সময়টা উপভোগ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না কেউ। ফলে এখন গতি পেয়েছে অভ্যন্তরীণ পর্যটন। সমুদ্রের টানে কক্সবাজারে ছুটে যাচ্ছে মানুষ। পাহাড় দেখতে যাচ্ছে রাঙ্গামাটি বান্দরবান খাগড়াছড়ি বা সিলেটে। অন্যান্য পর্যটন এলাকাগুলোতেও ভিড় বেড়ে কয়েক গুণ হয়ে গেছে। আশপাশের দেশগুলোতেও বেড়াতে যাচ্ছেন অনেকে। শীতে দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি বনভোজনের আয়োজন করা হয়। সারাদেশেই এ ধরনের নানা আয়োজন চোখে পড়ছে এখন। আর শীতকালের পিঠাপুলি, পায়েস, খেজুরের রস ইত্যাদির কথা তো বলাই বাহুল্য। বাসা বাড়িতে, দোকানে, রাস্তার ধারে রীতিমতো উৎসব চলছে।
তবে প্রিয় বলেই হয়তো দ্রুত ফুরিয়ে যায় শীতের কাল। শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যায়। এই যেমন এবারের শীত ঠিকমতো অনুভবই করতে দেয়নি। বাইরের জেলাগুলোতে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে শীতের প্রভাব বরাবরের মতোই বেশি ছিল। বাকি জেলাগুলো অত টের পায়নি। সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছে ঢাকা। রাজধানী শহরে শীতের বালাই নেই। পৌষের প্রায় পুরোটাজুড়ে হাল্কা শীত ছিল অথবা নাতিশীতোষ্ণ কেটেছে। আর এখন তো মাঘ। মাঘের শীতে নাকি বাঘ পালায়। বাস্তবে বিড়ালও দৌড়াচ্ছে না। বরং শীতের কাল শেষ হতে চলেছে। সামনে শীত বাড়লেও তা বেশি দিন স্থায়ী হবে বলে মনে হয় না। বরং শীতের বিদায়ে বসন্তের আগমনী গান বাজতে শুরু করেছে।
বিবর্ণ গাছে উঁকি দিচ্ছে নতুন পাতা। কচি কিশলয়ে সূর্যকিরণ এসে পড়তেই কেমন চিক্চিক্ করে উঠছে। বিচিত্র ফুলে ভরে উঠছে বাগান। প্রিয় ফুল গোলাপের মৌসুম এখন। বিভিন্ন রঙের গোলাপ ফুটে আছে। লাল হলুদ মেরুন- আরও কত রং! একসঙ্গে এত রং দেখতে কী যে ভালো লাগছে! চন্দ্রমল্লিকারও অনেকগুলো রং। ফুলের দোকানে গেলে পছন্দ করে কেনা যাচ্ছে। আছে গ্লাডিওলাস সূর্যমুখী ডালিয়া জার্বেরা, স্যালভিয়া। গাঁদা ফুলের আছে আলাদা আকর্ষণ। বসন্তের রংটা এ ফুলে বিশেষভাবে দৃশ্যমান হয়। দেখলেই ফাগুন যে আসছে, মনে পড়ে যায়। কোথায় দেখবেন? চট্ করে একবার রমনাপার্কে চলে যান। ঢাকার এই সবুজ উদ্যানে গাঁদা ফুলের বিশাল বাগান আছে। এত বড় বাগান, এত ফুল ফুটে আছে নিজ চোখে না দেখলে তা কারও বিশ্বাসই হবে না। নিজের চারপাশেও তাকাতে পারেন, নানা রঙে রূপে সাজছে প্রকৃতি। জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্ত আসছে!