ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফখরুল

সংস্কার এবং নির্বাচনের মধ্যে কোনো  বিরোধ নেই

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:১৯, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

সংস্কার এবং নির্বাচনের মধ্যে কোনো  বিরোধ নেই

.

রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশের কোনো কিছুই ‘ঐকমত্য ছাড়া গ্রহণযোগ্য হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার সকালে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এসব রিপোর্ট নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এজন্য যে, পুরো রিপোর্ট আমাদের কাছে এসে পৌঁছেনি।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। দেশে হাল ধরার পর অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে। চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি প্রথম ধাপের ছয় কমিশনের মধ্যে চারটির প্রতিবেদন জমা পড়েছে। এ মাসের মধ্যে বাকি দুই কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে সরকার যে বলেছে এবং পরিকল্পনা করেছে, রিপোর্টগুলো পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা আলোচনা করবে এবং তারপরেই সিদ্ধান্ত হবে।’ জুলাই-আগস্টের মধ্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু কোনো কোনো পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এই দাবিটি অবাস্তব। এতো দ্রুত নির্বাচন ও সংস্কার সম্ভব নয়।এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বরাবর এক কথা বলে এসেছি যে, সংস্কার এবং নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। সংস্কারও চলবে, নির্বাচন হবে এবং যে দল সরকারে আসবে তারা সংস্কারগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে বলতে পারি যে, আমরা প্রতিটি সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির বিপরীত অবস্থানে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তাদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটির, যারা ইতোমধ্যে দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।সংগঠন দুটি সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে। তার আগে তারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চায়। অন্যদিকে ‘প্রয়োজনীয়’ সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলেরও একই অবস্থান। জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে।
দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তিনি যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসেছিলেন, তখন তিনি একটি আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে সমস্ত ক্ষেত্রে নতুন করে সংস্কার কাজ শুরু করেছিলেন। জিয়াউর রহমান প্রথম বাংলাদেশে সংস্কার শুরু করার বিষয়টি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি বদ্ধ অর্থনীতিকে মুক্ত বাজার অর্থনীতির পরিকল্পনা চালু করেন, কৃষিতে বিপ্লব হয়েছিল।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক,  আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, এস এম জাহাঙ্গীর, সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মদিনের উপলক্ষে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থকরা মিছিল ও বিভিন্ন স্লোগানসহকারে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে সমবেত হতে থাকেন।

×