ডাইনোসর
নতুন এক দৈত্যাকার ডাইনোসর প্রজাতির সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। নতুন প্রজাতির এই ডাইনোসরের নামকরণ করা হয়েছে 'টেমেরির্যাপ্টর মার্কগ্রাফি'। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাওয়া জীবাশ্মের হারিয়ে যাওয়া চিত্র আবিষ্কার করে এই প্রজাতির সন্ধান পান গবেষকরা।
গবেষকরা দাবি করছেন, এসব ডাইনোসর ৯৫ মিলিয়ন বছর আগে মিশর অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত। এরা ৩৩ ফুট (১০ মিটার) লম্বা। গ্রহে ঘুরে বেড়ানো বৃহত্তম স্থল মাংসাশী প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি ছিল এই প্রজাতির ডাইনোসর।
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯১৪ সালে মিশরের পশ্চিম মরুভূমির বাহারিয়া মরূদ্যানে প্রথম এই ক্রিটেসিয়াস ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান পান। ১৯৪৪ সালে জার্মানির বাভারিয়ান স্টেট কালেকশন ফর প্যালিওন্টোলজি অ্যান্ড জিওলজিতে (বিএসপিজি) বোমা হামলার পর পুড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত জীবাশ্ম সেখানেই ছিল।
গবেষকরা সম্প্রতি জার্মানির টুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউয়েন আর্কাইভে জীবাশ্মগুলোর অজানা ফটোগ্রাফগুলো খুঁজে পান। এসব ফটো ১৯৪০ এর দশকের প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছিল।
ছবিগুলো দেখে প্রথমে জীবাশ্মগুলোকে 'কারচারোডন্টোসরাস' নামে একটি বৃহৎ আকৃতির ডাইনোসরের প্রজাতি বলে মনে করা হয়েছিল। তবে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এদের একটি শিং, একটি বর্ধিত ফ্রন্টাল মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো দেখে খটকা বাধে।
বিএসপিজির ডক্টরাল শিক্ষার্থী ম্যাক্সিমিলিয়ান কেলারম্যান লাইভ সায়েন্সকে বলেন, নতুন ছবিগুলো পেয়ে প্রথমে আমি কিছুটা বিভ্রান্ত ছিলাম এবং তারপরে খুব উত্তেজিত হয়ে যাই। আমরা যত বেশি দেখেছি, তত বেশি পার্থক্য আমরা খুঁজে পেতে শুরু করি।
গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) পিএলওএস ওয়ান জার্নালে গবেষকরা তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন। জার্মান জীবাশ্মবিদ আর্নস্ট স্ট্রোমার (১৮৭১-১৯৫২) মিশরীয় জীবাশ্মগুলো নিয়ে প্রথম গবেষণা চলান। তিনি ভেবেছিলেন, জীবাশ্মগুলো আলজেরিয়ায় আবিষ্কৃত একটি ডাইনোসরের সাথে মিলে যায়। ওই প্রজাতির ডাইনোসররা তাদের দাঁতের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।
গবেষকরা সাধারণত জীবাশ্মগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করে এটিকে ডাইনোসরের নতুন প্রজাতি হিসেবে প্রবর্তন করবেন না বলেও জানিয়েছেন। তবে গবেষণার লেখকরা বলেন, এটি একটি 'ব্যতিক্রমী ঘটনা'।
প্রসঙ্গত, ১৯১৪ সালে বাহারিয়া মরুদ্যান থেকে ডাইনোসর খননকারী জার্মান জীবাশ্ম সংগ্রাহক রিচার্ড মার্কগ্রাফের সম্মানে এই প্রজাতির নাম রাখা হয়েছে।
শহীদ