ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

গ্রামীণ ঐতিহ্যের সেই নকশিকাঁথা আজ স্মৃতি 

চাইরো পাইড়ে আঁকে  কন্যা পুষ্প  রাশি রাশি...

মোরসালিন মিজান 

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

চাইরো পাইড়ে আঁকে  কন্যা পুষ্প  রাশি রাশি...

.

প্রথম বাঙালি মহিলা কবি চন্দ্রাবতী লিখেছিলেন, সীতার গুণের কথা কি কহিব আর,/কন্থায় আঁকিল কন্যা চান সুরুজ পাহাড়।/আরও যে আঁকিল কন্যা হাসা আর হাসি।/চাইরো পাইড়ে আঁকে কন্যা পুষ্প রাশি রাশি...। তবে শুধু সীতার একার নয়, প্রায় সব বাঙালি নারীর কন্থা, মানে, কাঁথা সেলাইয়ের গুণ ছিল একসময়। পরম যত্ন অসীম ধৈর্য এবং দক্ষতার সঙ্গে নকশিকাঁথা বুনতেন বাংলার নারীরা। আজ সেই চর্চা অনেক ক্ষেত্রে হারিয়ে গেছে। তবে নকশিকাঁথার ঐতিহ্য বা গৌরবের কথা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। এই যেমন এখন মাঘের শীতে খুব কম মানুষই নকশিকাঁথা ব্যবহার করছেন। কিন্তু নকশিকাঁথা ব্যবহারের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার মতো নয়। নকশিকাঁথা সুচিশিল্পের ইতিহাস যারপরনাই প্রাচীন। লোক জীবন ও সংস্কৃতির মৌলিক উপাদান। 
সংস্কৃত শব্দ ‘কন্থা’ থেকে ‘কাঁথা’ শব্দের উৎপত্তি। প্রাকৃত শব্দ ‘কথ্থা’ থেকেও এর উৎপত্তি হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হয়। আঞ্চলিক উচ্চারণে নামটি সামান্য বদলে গিয়ে হয় কেতা, খেতা বা কাতা। আজকের প্রজন্ম জেনে হয়তো অবাকই হবে যে, ব্যবহার করতে করতে পুরনো ও নরম হয়ে যাওয়া দেশীয় তাঁতের শাড়ি দিয়ে এই কাঁথা তৈরি করা হতো। এই একটিই মূল উপকরণ। মায়ের বা পরিবারের অন্য নারীদের প্রায় ছিঁড়ে যাওয়া শাড়ি ব্যবহার করা হতো কাঁথা তৈরিতে। এগুলো ছিল সাধারণ কাঁথা। সাধারণ ব্যবহারের জন্য প্রতি ঘরে রাখা হতো।   
তবে নকশিকাঁথা সাধারণ কাঁথার তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষণীয়। অনেক বেশি যত্নে তৈরি করা। কাঁথাতে যখন সুঁই সুতার সাহায্যে চমৎকার নকশা করা হয় তখন সেটি হয়ে উঠে নকশিকাঁথা। এ ধরনের কাঁথা তৈরির বেলায় ব্যবহারিক দিকের তুলনায় গ্রামীণ নারীদের শিল্পরুচি ও সৃজনশীলতা অধিক প্রাধান্য পেত। প্রিয়জনের হাতের স্পর্শ লেগে থাকত কাঁথায়। 
ঠিক কবে থেকে, কোথায়, কীভাবে নকশিকাঁথা তৈরি শুরু হয়েছিল সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না। প্রাচীন তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী, বৌদ্ধধর্ম প্রচারের প্রারম্ভিককালে নকশিকাঁথা শিল্পের বিশেষ প্রসার ঘটেছিল। তখন ধর্ম প্রচারকগণ তত্ত্বকথা শোনাতে নানা ধরনের প্রতীকের আশ্রয় নিতেন। এসব প্রতীক ও ছবি ক্রমশ স্থান করে নিতে থাকে নকশিকাঁথায়। একইভাবে কাঁথায় ফুটে ওঠতে থাকে মহাভারত। আসতে থাকে বেদ-উপনিষদের বাণী। এমনকি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রভাব কাঁথায় এসে পড়েছিল। এভাবে বিভিন্ন সময় ও কালের স্মৃতি ধারণ করে আসছে নকশিকাঁথা। 
গবেষকদের মতে, একসময় বাংলাদেশের প্রায় সব গ্রামের সব ঘরেই নকশিকাঁথা হতো। রমণীরা গৃহস্থালি কাজের ফাঁকে ফাঁকে মনোযোগ দিয়ে সুঁই সুতার কাব্য রচনা করতেন। সারা বছরই হতো এ কাজ। বিশেষ করে বর্ষাকালে গৃহবন্দি সময়টির সর্বোত্তম ব্যবহার করতেন মেয়েরা, মায়েরা। পরিবারে বউ-ঝিদের সুচিশিল্পের জ্ঞানকে বিশেষ প্রতিভা বিবেচনা করে সুখ্যাতি করা হতো। 
গবেষকদের মতে, প্রথমত নিজেদের ব্যবহারের জন্যই শৌখিন বধূরা, কন্যারা নকশিকাঁথার কাজ করতেন। একইসঙ্গে তা প্রিয় ও পছন্দের মানুষকে উপহার দেওয়া হতো। উপহারের নকশিকাঁথাকে নান্দনিক ও আকর্ষণীয় করতে প্রচেষ্টার অন্ত ছিল না তাদের। গাঁয়ে বিয়েতে নকশিকাঁথা উপহার দেওয়ার রীতি প্রচলিত ছিল। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনকেও উপহার দেওয়া হতো নকশিকাঁথা। মা প্রিয় সন্তানের জন্য যতœ করে নকশিকঁথা সেলাই করতেন। স্বামীর জন্য কাঁথা তৈরি করতে সুঁই সুতা নিয়ে বসতেন স্ত্রী। নবজাতকের জন্য নকশিকাঁথা করতেন নানি, দাদি, খালারা, ফুফুরা। শিশুর জন্মের আগেই দূর-দূরান্ত থেকে কাঁথা তৈরি করে নিয়ে আসতেন আত্মীয়রা। এভাবে পারিবারিক স্নেহ আবেগ ও ভালোবাসার বহির্প্রকাশ ঘটত কাঁথায়। 
কাঁথা তৈরির জন্য প্রথমে একাধিক শাড়ি কয়েক পরত করে মেঝেতে বিছিয়ে বড় বড় ফোঁড়ের সাহায্যে আটকানো হতো। শাড়ির অপেক্ষাকৃত ভারি পাড় থেকে সংগ্রহ করা হতো বিভিন্ন রঙের সুতা। শাড়ির দৈর্ঘের সমান সুতা সুঁইয়ে গেঁথে নিয়ে নকশা তৈরির কাজ করতেন রমণীরা। জাতিতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের ধারায় নকশিকাঁথায় তিন ধরনের মোটিফ পরিলক্ষিত হয়। প্রথমত, মানুষ ও পশুপাখি। দ্বিতীয়ত, ফুল, লতাপাতা ও গাছের মোটিফ। তৃতীয়ত, নানা প্রকার জ্যামিতিক নকশা। 
নকশিকাঁথা নিয়ে গবেষণার কাজ করেছেন পারভীন আহমেদ। নকশিকাঁথা তৈরির প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করে তার বলেছেন, খুব চেনা জগৎ থেকে ফর্ম সংগ্রহ করে তা সুঁই সুতায় বুনে নিতেন নারীরা। উঠোনের ফুল গাছ, লতা, পাতা, পাখিকে সুতায় বুনতেন। নদীর মাছ, পালতোলা নৌকা, দৌড়ের  ঘোড়া, হাতি, বাইসাইকেল, অ্যারোপ্লেন- কিছুই বাদ যেত না। এমনকি আকাশের চাঁদও কাঁথায় তুলে ধরা হতো। লোক মুখে শোনা গল্প কিচ্ছা কাহিনীর নানা চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা হতো। ধরা দিত রূপকথার পরীরা। নারীর মনের কল্পনা প্রেম বিরহ বিয়োগ ব্যথার গুরুত্বপূর্ণ স্মারক হয়ে উঠত নকশিকাঁথা। এখানে বিস্তার ঘটত লোকায়ত ভাবনার। সমকালীন সমাজ সভ্যতা সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেত। বিস্ময়কর শোনালেও সত্য  যে, আগে ড্রইং করে নেওয়ার কোনো বিষয় শিল্পীদের মাথায় ছিল না। চোখের দেখা আর মনের খেয়াল কল্পনা কাঁথার গায়ে ফুটিয়ে তুলতেন শৌখিন নারীরা। ফলে এক কাঁথার সঙ্গে অন্যটির নকশা মিলত না। প্রতিটি কাঁথাই স্বতন্ত্র শিল্পকর্মের রূপ লাভ করত। পুরনো কাপড়ে গড়া প্রকৃত নকশিকাঁথার রং হতো অপেক্ষাকৃত কম উজ্জ্বল। তবে সরল সৌন্দর্যটা দারুণ আকৃষ্ট করত বলে উল্লেখ করেছেন পারভীন আহমেদ। 
পরবর্তীতে নকশিকাঁথা নিয়ে গবেষণা করেছেন নিয়াজ জামানও। তিনি জানান, নকশিকাঁথার ফোঁড় পাইড় নকশা ও ব্যবহার অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন নাম হয়। ফোঁড় অনুযায়ী নামগুলো এ রকম : বরকা ফোঁড়,  তেরসি ফোঁড়, বাঁশপাতা ফোঁড়, কইতা ফোঁড় ও বিছা ফোঁড়। পাইড়ের নামে নকশিকাঁথার নাম রাখা হয়েছে তোলো পাইড়, তাস পাইড়, নয়নলতা, নারিকেল পাতা ও নৌকাবিলাস। 
নিয়াজ জামানও কাঁথার পাইড়ের কিছু নাম সংগ্রহ করেছিলেন। এসব নামের মধ্যে রয়েছে ধানের শীষ বা খেজুর ছড়ি, বিজে, মকী, চোখ, তাবিজ মাছ, পিঁপড়ার সার, তাগা, মই, গোট, চিক, নোলক, বিছা, আনাজ ও শামুক। ব্যবহারও বহুবিধ। শীতে ব্যবহার করা হতো লেপ কাঁথা। বালিশের ওপর বিছানো হতো বয়তন। জায়নামাজ হিসেবে ব্যবহারের জন্য জায়নামাজ কাঁথা। বসার জন্য আসন কাঁথা। আয়না চিরুনি রাখার জন্য আর্শিলতা, পান-সুপারি রাখার জন্য পানকাঁথা। মূল্যবান জিনিসপত্র ও কাপড় বেঁধে রাখার জন্য বোচা কাঁথা। কুরআন শরীফ রাখার জন্য গিলাফ কাঁথার ব্যবহার হতো। গালিচা, দেওয়ালচিত্র, মাফলার, চাঁদোয়া ইত্যাদিতেও নকশিকাঁথার ব্যবহার ছিল বলে নিজের লেখায় উল্লেখ করেছেন তিনি।  
এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম হাতে লেখা কপিতে নকশিকঁাঁথা মোটিফ ব্যবহার করা হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, নকশিকাঁথার সৌন্দর্যগুণের কারণেই এই কদর। এত মর্যাদা। 
পারভীন আহমেদের মতে, নকশিকাঁথা পেইন্টিংয়ের মতোই একটি স্বতন্ত্র আর্ট ফর্ম। গ্রামীণ নারীরা ৭০ রকমের ফোঁড় ব্যবহারে অনন্য সাধারণ শিল্পকর্ম গড়তেন। এ জন্য তারাও শিল্পী। শিল্পকর্ম করতেন বলেই প্রচুর সময় লাগত। এক বা দুই বৈঠকে শেষ করার সুযোগ ছিল না। সূক্ষ্ম কাজ। একটু একটু করে কাজ এগিয়ে  নেওয়া হতো। একা এবং কয়েকজন মিলে দীর্ঘদিন ধরে একটি কাঁথা সেলাই করতেন। এমনও হতো যে, বছরের পর বছর ধরে এক কাঁথা সেলাই করা হচ্ছে। তবু শেষ হচ্ছে না। মা যে কাঁথায় সেলাই শুরু করেছিলেন, মৃত্যুর পর মেয়ে তা শেষ করেছেন। এমন ইতিহাস থেকে পরিষ্কার যে, নকশিকাঁথার প্রতি বাংলার নারীদের নিবেদন ছিল অকল্পনীয়। 
গবেষক নিয়াজ জামানও বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন কাঁথার সঙ্গে মিশে থাকা প্রেমানুভূতির ওপর। তার মতে, কাঁথার গায়ে বাংলার নারীদের সরল চিন্তা ও সৌন্দর্য চেতনার পাশাপাশি যে প্রেমস্পর্শ লেগে থাকে তার কোনো তুলনা হয় না। 
তবে আজকের বাস্তবতা ভিন্ন। বহুবিধ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথ ধরছে নকশিকাঁথা সুচিশিল্প। নিয়াজ জামান দুঃখ এবং ক্ষোভের সঙ্গে বলছিলেন, এখন তো বুড়ো মহিলারাও সালোয়ার কামিজ পরেন। টিনেজ মেয়েরা তরুণীরা অভ্যস্ত হচ্ছে জিন্স টি-শার্টে। এ অবস্থায় শাড়িই তো থাকবে কিনা, সন্দেহ। আর শাড়ি না থাকলে নকশিকাঁথা আসবে কোথা থেকে? 
এদিকে, গ্রামের ছবিটাও বদলে গেছে। ব্যস্ততা বেড়েছে নারীদের। নকশিকাঁথা তৈরি করার মতো সময় ও ধৈর্য তাদের নেই। অর্থনৈতিক অবস্থাও তুলনামূলকভাবে ভালো। তাই নকশিকাঁথা তৈরি বা ব্যবহার মারাত্মক কমে গেছে। শহরে কাঁথার জায়গাটি আগেই দখল করে নিয়ে নিয়েছিল চায়নিজ কম্বল। পরে এসেছে কমফোর্টার। গ্রামেও বাজার থেকে কিনে আনা কম্বল কমফোর্টার ব্যবহৃত হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করা সাধারণ শ্রমিকটি এখন ছুটিতে দেশে ফেরার সময় কম্বল আনতে ভুল করেন না। সর্বোপরি নকশিকাঁথা নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা নেই। সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই। এমন নানা বাস্তবতায় হারাতে বসেছে নকশিকাঁথার ঐতিহ্য। অবশ্য শহরের ফুটপাতে অলিতেগলিতে ‘নকশিকাঁথা আছে’ বলে প্রায়শই হাঁকডাক দেন বিক্রেতারা। এগুলো আসলে নকশিকাঁথার মূল বৈশিষ্ট্য ধারণ করে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন শাড়ি ব্যবহার করা হয়। হাতের সেলাইয়ের পরিবর্তে বেছে নেওয়া হয় অ্যাম্ব্র্রয়ডারি। পারভীন আহমেদের ভাষায়, শহরে হরহামেশা যা পাওয়া যাচ্ছে তা আদৌ নকশিকাঁথা নয়। নকশিকাঁথার আদি রূপ এসব কাঁথায় অনুপস্থিত। এগুলো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব প্রোডাক্ট। ম্যাস প্রোডাক্ট করতে গিয়ে তারা ট্রেসিংয়ের প্রবর্তন করেছে। এর ফলে এক ডিজাইনের শত শত পিস কাঁথা তৈরি হয়ে যাচ্ছে নিমিষেই। নকশিকাঁথার মূল বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এটি যায় না। সৌন্দর্য রক্ষিত হয় না। বাণিজ্যিকভাবে তৈরি এসব কাঁথা হয় নতুন কাপড়ে। উজ্জ্বল রঙের কাপড় ও নতুন সুতায় সেলাই করা হয়। এভাবে নকশিকাঁথা আর নকশিকাঁথা হয়ে নেই। দুর্লভ হয়ে পড়েছে প্রাচীন এই সূচিশিল্প। 
অথচ এই নকশিকাঁথা  নিয়ে কত শত গল্প-কবিতা গাঁথা রচিত হয়েছে একময়! পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের ‘নকশিকাঁথার মাঠ’ পাঠ করলে এখনো জলে দু’চোখ ভিজে যায়। বিয়োগান্তক লোককাহিনীতে দেখা যায়, প্রেমিক স্বামী রুপার প্রতিক্ষায় থেকে থেকে মৃত্যু হয়েছে স্ত্রী সাজুর। মৃত্যুর আগে রুপার জন্য নিজ হাতে তৈরি করা নকশিকাঁথা নিজেরই কবরে বিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিল সে। কবির ভাষায় : ‘রুপা এক দিন ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেল দূর দেশে,/তারি আশা-পথে চাহিয়া চাহিয়া বউটি মরিল শেষে।/মরিবার কালে বলে গিয়েছিল- তাহার নকশিকাঁথা,/কবরের গায়ে মেলে দেয় যেন বিরহিণী তার মাতা...।’ শেষ ইচ্ছামতো তার কবরে নকশিকাঁথাটি ঠিক বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল!   

×