ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১

মাতৃত্বকালীন ভাতায়

কুচক্রীদের নজর

প্রকাশিত: ১৯:১৫, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

মাতৃত্বকালীন ভাতায়

মাতৃত্ব যে কোন নারীর আজন্ম লালিত স্বপ্ন। শুধু তাই নয় দেশের আগামির প্রজন্মের ও সূতিকাগার। সময়টা শুধু স্পর্শকাতরই নয় সেখানে আর্থিক সংযোগ ও মূল্যবান বিষয়। দেশের সরকার পরিচালনায় যারা অধিষ্ঠিত তাদেরও দৃষ্টি থাকে নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে স্বাচ্ছন্দ্যে যেন নতুন ভবিষ্যত পৃথিবীর আলো দেখবে। বাংলাদেশ এখনও গ্রাম নির্ভর শস্য শ্যামল প্রান্তর। সিংহভাগ মানুষ বাস করে গ্রামে। যারা দারিদ্র্যসীমার নীচে জীবন ধারণ করে। দৈনন্দিন সংসার চালানোয় যাদের দায় হয়ে যায় সেখানে মাতৃত্বের আকাক্সিক্ষত সময়ে বাড়তি খরচ ও জরুরী হয়। সঙ্গতকারণে জনগণের সরকারের একটা বিশেষ নজর থাকে তাদের জন্য বাড়তি কিছু আর্থিক ব্যবস্থাপনা করা যায় কিনা। অর্থাৎ অর্থবিত্তে পিছিয়ে পড়া সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক নারীদের স্বাস্থ্য পরিচর্যা থেকে শুরু করে আগত সম্ভাবনায় প্রজন্মের জন্যও ভাবনা চিন্তা যোগ হয়। তাই অপেক্ষাকৃত দরিদ্র গর্ভকালীন নারীদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত ভাতাও প্রদান এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। সেখানে নারী ও শিশু কল্যাণ বান্ধব কিছু প্রকল্প হাজির করা হয় সংশ্লিষ্টদের সামনে। তার মধ্যে মাতৃত্বকালীন ভাতা এক অবিস্মরণীয় প্রকল্প। যা দুঃস্থ নারীর গর্ভকালীন সময়ের অনন্য সুযোগ। তবে যে কোন মহৎ কাজ যেমন শুরু করা প্রয়োজনের তাগিদে, চাহিদায়। তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া ও নারী শিশুকে ন্যায্য পাওনা থেকে কত যে পিছিয়ে দিচ্ছে নিয়তগণ মাধ্যমে তা প্রকাশ পাওয়া উপস্থিত পরিস্থিতির নির্মমতা। অর্থাৎ সাহায্য যেমন দৃশ্যমান পাশাপাশি কতিপয় কুচক্রীর হাতে তা আত্মসাত ও এক প্রকার উল্টো রথ। প্রতারক চক্র তো এগিয়ে থাকে প্রভাব প্রতারণা কিংবা অন্যের ন্যায্যতা উপর কতভাবে আচড় বসানো যায়। সেটাই প্রকাশিত হযেছে রাজশাহীর বাগমারায়। প্রায়ই আড়াই হাজার নারীর মাতৃত্বকালীন অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মা ও শিশুর উপর এক অযাচিত অনাবশ্যক আঁচড় বসিয়ে যাচ্ছে। মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মূল কার্যক্রম ‘মা ও শিশু সহায়তা কর্মযোগের’ আওতাধীন অন্তসত্ত্বা নারীদের জন্য মাসিক ভাতার প্রচলন হয়ে আসছে দীর্ঘকালীন। ৮০০ টাকা করে পান গর্ভকালীন নারীরা। যাদের জন্য এমন মহান কর্মদ্যোতনা তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত ভাতা পেয়ে যান। গর্ভবর্তী নারীরা স্থানীয় কর্মকর্তার কাছ থেকে ভাতা পেয়ে থাকেন। বাগমারার ইউনিয়ন ও পৌরসভা মিলিয়ে অর্থবিত্তে পিছিয়ে পড়া প্রায়ই ৫ হাজার ৩৯৩ জন অন্তসত্তা নারী এমন ভাতার সাথে সম্পৃক্ত আছেন। এই ভাতা তাদের মাতৃত্বকালীন সময়ের এক অনন্য আর্থিক সংস্থান। প্রতিমাসে ৯৮ জন গর্ভবর্তী নারীকে এই কর্মযোগে অন্তর্ভুক্ত করা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মাতৃ স্বাস্থ্য ও আগামীর প্রজন্মের উপর যথাযথ নজর দেওয়া। তবে গত ৬ মাস থেকে অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্তের নারীরা তাদের মাসিক এই ভাতা না পাওয়ার অসহনীয় চিত্র উঠে আসছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সমস্যাটা মূল জায়গা কেন্দ্র থেকেই হচ্ছে। স্পষ্ট করা হয় কেন্দ্রীয়ভাবে অনিয়ম করার কারণে নারীরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কারণ যথাযথ অধিদফতর ছাড়া স্থানীয়ভাবে এমন অর্থ লোপাট অসম্ভবের পর্যায়। তবে এটাও উঠে আসে ভাতভোগীদের হিসেব নম্বর পরিবর্তন করে কোন এক চক্র অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ভাতা মূলত দেওয়া হয় দরিদ্রসীমার নীচে বাস করা গর্ভবর্তী নারীদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি আর সুষম স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের জন্যই। অধিদপ্তরই এমন মহৎ কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। তাছাড়া আগত প্রজন্মের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যাতে কেনা যায় সেটাও ভাতা প্রদানের অন্যতম লক্ষ্য। গত কয়েক মাস ধরে ভাতা না পাওয়ায় শুধু মা নন তার নবজাতকেরও অনেক প্রাসঙ্গিক খবর চালাতে হিমশিম খাবার দুরাবস্থা। তবে বিষয়টি আদ্যপান্ত খতিয়ে দেখছেন উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অপরাজিতা প্রতিবেদক

×