ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

দুনিয়ার যে ৪ নদীর উৎস জান্নাতে!

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দুনিয়ার যে ৪ নদীর উৎস জান্নাতে!

মহান আল্লাহ তার অতুলনীয় সৃষ্টিকুশলতায় মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন আর সেই সৃষ্টির অন্যতম হলো পৃথিবী কোরআনের বর্ণনায় স্থান পেয়েছে পৃথিবীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাহার ও বৈচিত্র পৃথিবীকে যে উপাদান গুলো দিয়ে সাজিয়েছেন তার মধ্যে একটি হল নদ নদী ।  পৃথিবীকে শোভা রয়েছে এমনও কিছু নদী রয়েছে যার উৎপত্তি জান্নাতে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজে গিয়ে জান্নাতের চারটি নদী দেখে দুটি বাহ্যিক ও দুটি অভ্যন্তরীণ বাহ্যিক। দুটি নদী দুনিয়ায় প্রবাহমান নীল ও ফোরাত সহি মুসলিম শরীফের হাদিসে চারটি নদীকে জান্নাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে বর্ণনা করা হয়েছে। 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পৃথিবীতে এমন চারটি নদী প্রবাহিত হয়েছে যেগুলো জান্নাতের নদীগুলোর অন্তর্ভুক্ত। এ নদীগুলো শুধু ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং তাদের ঐতিহাসিক ও  আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ইসলামের ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধ করেছে । ফোরাত নদী যা ইউপ্রিটিয়াস রিভার নামে পরিচিত ২৮০০km দীর্ঘ এই নদীটি তুর্কি সিরিয়া ও ইরাকের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে । আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন কেয়ামতের আগে শুকিয়ে যাবে এই ফোরাত নদী। ইতোমধ্যে এই নদী শুকানো শুরু করেছে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত সংগঠিত হবে না যতক্ষণ নাফরাত নদী শুকিয়ে যায় এবং তার মাঝ থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় উন্মোচন হয়। মানুষ এই স্বর্ণের জন্য যুদ্ধ করবে এবং প্রতি ১০০ জনের মাঝে ৯৯ জনই মারা যাবে এবং তারা প্রত্যেকেই ভাববে হয়তো আমি সেই বেঁচে যাওয়া একজন। 

মিশরের নীলনদের উৎস ছিল এক মহারহস্য নীল নদটি সহি মুসলিমে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নীল ও ফোরাত জান্নাতের নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে নীল নদ। ইসলামের ঐতিহ্যের সঙ্গে সবচেয়ে বিখ্যাত সংযোগ হলো নবী মুসা আলাইহিস সালামের গল্প তার মা ফেরাউনের আদেশ থেকে তাকে রক্ষা করার আশায় একটি ঝুড়িতে রেখে নীল নদীতে ভাসিয়ে দেন যা অবশেষে ফেরাউনের পরিবারের কাছে পৌঁছে যায়। নবী হওয়ার যাত্রা শুরু হয় সেখান থেকেই তুরস্কের জয়হাল নদী সহি মুসলিমে জয়হাল নদীকে জান্নাতের নদীগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পৃথিবীতে আমরা যেসব উপহার উপভোগ করি তা জান্নাতের অফুরন্ত দানের একটি ক্ষুদ্র ঝলক। এ নদী পূর্ব তারাস পর্বতমালার নূরহাক পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ৫০০km প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্য সাগরে গিয়ে মিশেছে।  এটি প্রাচীনকাল থেকে একটি প্রাকৃতিক সীমানা ও বিভিন্ন সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে পরিচিত ছিল তুরস্কের সিহান নদী যেটি সেরাস নামেও পরিচিত সিলিসিয়া অঞ্চলের দীর্ঘতম নদী এটি যা প্রায় ৫৬০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্যসাগরে মিশেছে । 

প্রাচীন লেখকরা সিহান নদী সম্পর্কে বিশদভাবে লিখেছেন, এটি সিলিসিয়া অঞ্চলের সভ্যতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ নদীটি কৃষি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এখানে গম ভুট্টা বার্লি তুলা ফল এবং সবজি চাষ করা হয় । স্থানীয় অর্থনীতির একটি বড় অংশ অন্য এক বর্ণনায় আছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সিহান ও জয়হান ফোরাত এবং নীল প্রত্যেক নদী জান্নাতের নদ-নদী সমূহের অন্যতম । জান্নাতের নদীমালার মধ্যে একটির নাম কাউসার জাসি বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হজ রূপে দান করা হয়েছে। যেখানে হতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতকে কিয়ামতে পানি পান করাবেন। সুবৃহৎ হজ ও কাউসার নহর থাকবে। জান্নাতি সরাবে পরিপূর্ণ যে পবিত্র সারাব বা পানীয় দুধের চেয়েও সাদা বরফের থেকেও শীতল মধুর চেয়েও মিষ্ট এবং মিশকের চেয়েও সুগন্ধময়। হাদিসে বলা হয়েছে যে, একবার সে পানি পান করবে তাকে আর কোনদিন পিপাসা স্পর্শ করবে না ।
 

রাজু

×