প্রতি বছর বাড়ছে এভারেস্টের উচ্চতা!
বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। যা তিব্বতীয় ভাষায় চোমোলুংমা নামেও পরিচিত। গত ৮৯ হাজার বছরে প্রায় ১৫ থেকে ৫০ মিটার (৫০ থেকে ১৬৪ ফুট) উচ্চতায় বেড়েছে। ইউরেশীয় প্লেটের সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি এই পর্বত প্রতিবছর ২ মিলিমিটার করে উচ্চতায় বাড়ছে।
নেচার জিওসায়েন্সের একটি গবেষণা অনুযায়ী, নদীর ভূমিকা ও ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার সংমিশ্রণে এভারেস্টের উচ্চতা বৃদ্ধির এ ঘটনাটি ঘটছে।
অরুণ ও কোশি নদী শুধু ভূমি ক্ষয় করে না বরং তারা এভারেস্টের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রকৌশলেও ভূমিকা রাখে। নদীগুলোর সৃষ্ট বিশাল গিরিখাত ভূত্বকে একটি চাপ সৃষ্টি করে, যা পর্বতের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রভাব
১. আইসোস্ট্যাটিক রিবাউন্ড:
ওজন কমার সঙ্গে ভূ-পৃষ্ঠ উপরে ওঠার প্রক্রিয়াকে আইসোস্ট্যাটিক রিবাউন্ড বলা হয়। এই শক্তি প্রতিবছর এভারেস্টের উচ্চতায় প্রায় ২ মিলিমিটার যোগ করে। ভূতাত্ত্বিক ড. জিন-জেন দাই এই প্রক্রিয়াকে ভেসে ওঠা একটি নৌকার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
২. প্রতিবেশী পর্বতের প্রভাব:
এভারেস্টের প্রতিবেশী মাকালু ও লোথসে পর্বতও নিয়মিত উচ্চতায় বাড়ছে। মাকালু প্রতি বছর ২.২ মিলিমিটার হারে বেড়ে উঠছে, যা অঞ্চলটিতে একটি প্রাকৃতিক ভারসাম্য তৈরি করছে।
৩. পৃথিবীর স্থিতিস্থাপকতা:
এভারেস্টের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেমন, স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলে হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে ভূমি ধীরে ধীরে উঁচু হয়ে উঠছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এভারেস্টের এই বৃদ্ধি চিরকাল স্থায়ী হবে না। ভূত্বকের ভারসাম্য বদলালে উচ্চতা কমতেও পারে। পৃথিবীর গতিশীল প্রকৃতি কখনো পর্বতের উচ্চতা বাড়াবে, আবার কখনো তা কমাবে।
আশিকুর রহমান