ছবি: সংগৃহীত
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু রাজ্যে কুকুরের মাংস জনপ্রিয় খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডের আদিবাসীরা ঐতিহ্যগতভাবে কুকুরের মাংস খেয়ে থাকেন।
হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যানুসারে, নাগাল্যান্ডে প্রতি বছর অন্তত ৩০ হাজার কুকুর খাওয়া হয়। এসব কুকুরকে কাঁচাবাজারে জীবন্ত বিক্রি করা হয় এবং পরে কাঠের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর বিবিসি'র।
সেখানকার মানুষ বিভিন্ন রকম পদে কুকুরের মাংস রান্না করে খায়। তবে এই মাংস খেয়ে জলাতঙ্কের ঘটনাও ঘটেছে।
কুকুরের প্রতি এই নৃশংসতার প্রতিবাদে ভারতের পশুপ্রেমীরা কুকুরের মাংস বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৪ জুলাই নাগাল্যান্ডে কুকুরের মাংস বিক্রি, হত্যা এবং পরিবহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় কয়েকজনকে আটকও করা হয়।
তবে সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু হয়। নাগাল্যান্ডের প্রভাবশালী সামাজিক সংগঠন নাগাহোহোসহ একাধিক সংগঠন দাবি করে, কুকুরের মাংস খাওয়া তাদের আদিবাসী সংস্কৃতির অংশ। তারা এ নিষেধাজ্ঞাকে তাদের কৃষ্টির ওপর আঘাত বলে আখ্যা দেয়।
এই দাবি প্রত্যাখ্যান করায় আদিবাসীরা গৌহাটি হাইকোর্টের নাগাল্যান্ড বেঞ্চে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
মামলাকারীরা অভিযোগ করেন, তারা কোহিমা পুর নিগমের লাইসেন্স নিয়ে কুকুরের মাংস বিক্রি করছিলেন, কিন্তু সেই লাইসেন্স বাতিল না করেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর আদালত রাজ্য সরকারকে এ বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে বলে। তবে সরকার হলফনামা জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গৌহাটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নিষেধাজ্ঞার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে। ফলে আপাতত নাগাল্যান্ডে কুকুরের মাংস বিক্রি, আমদানি ও মাংস কাটা চালু রয়েছে।
ভারত ছাড়াও চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডের কিছু অঞ্চলে কুকুর খাওয়ার প্রথা প্রচলিত, যদিও তা ব্যাপক নয়।
এম.কে.