বিয়ের নিমন্ত্রণে যাবেন, কিন্তু উপহার কি দেবেন? এ যে কেবল উপহার নয়, আশীর্বাদও। আর তাই সাধ ও সাধ্যের মাঝে সমন্বয় করে আপনজনের বিয়েতে মনমতো একটা উপহার দেওয়ার চেষ্টা সবাই করে থাকেন। আগে বিয়েতে স্বর্ণের গহনা, শাড়ি, কাঠের ফার্নিচার, কাঁসার তৈজসপত্র ইত্যাদি দেওয়ার প্রচলন বেশি ছিল। আবার নগদ অর্থ দিতেন কেউ কেউ। তবে দিন বদলেছে। আর তার সঙ্গে মিলিয়ে বদলেছে উপহারের রকমফের। তাই উপহার কেনার সময় নতুন যারা বিয়ে করতে যাচ্ছেন তাদের প্রয়োজন আর শখ মাথায় রেখেই উপহার কেনা ভালো। চলুন জেনে নেই কি ধরনের উপহার দেবেন-
সাংসারিক জিনিসপত্র: নতুন সংসারে তো সবকিছুই লাগবে যেমন- ধরুন ওয়াটার ফিল্টার, ননস্টিক হাঁড়ি-পাতিলের সেট, হটপট, ব্লেন্ডার, জুসার, গ্রাইন্ডার, টোস্টার, রাইস কুকার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, ইস্ত্রি, বিছানার চাদর, কুশন কভার, কম্বল, ফুলদানি, কার্পেট, ডিনার সেট ইত্যাদি। ঘর সাজানোর টুকিটাকি, পেইন্টিং, আয়না, টেবিল ল্যাম্প, ফটো ফ্রেম, কফি মগ সেট, ছুরি-চামচের সেট- এগুলোও ভীষণ দরকারি ও মানানসই উপহার নতুন দম্পতিদের জন্য। কনের জন্য পারিজাত ডিজাইনের জুয়েলারি বক্স একটি সুন্দর উপহার হতে পারে।
বর-কনের জন্য: শাড়ি বা গহনা দেওয়ার চল অনেক আগে থেকেই চলছে। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী এই গিফট আপনি দিতেই পারেন। এ ছাড়া আজকাল অনেক সুন্দর সুন্দর পার্স এসেছে মেয়েদের। বিয়ের কনে যদি আপনার কাছের কেউ হয় তাহলে তার পছন্দের বিশেষ কোনো মেকআপ কিট খুব ভালো ও আনন্দদায়ক উপহার হবে। আপনি যদি বরের জন্য উপহার পছন্দ করেন তাহলে ঘড়ি, পাঞ্জাবি বা শার্ট-প্যান্ট পিস খুব মানানসই গিফট। তবে এসব জিনিস এমন কোথাও থেকে কেনা উচিত যাতে পরে দরকার হলে চেঞ্জ করে নিতে পারেন। কাপড় উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে আগে থেকে জেনে নিন বর-কনে কি ধরনের পোশাক আর রং পছন্দ করে।
মধুচন্দ্রিমার টিকিট: নবদম্পতির মধুচন্দ্রিমার জন্য সবচেয়ে বেশি যা লাগবে তা হলো টাকা। তাই এমন যদি হয় যে তাদের জন্য হানিমুনের টিকিট কেটে উপহার দিলেন- তবে কিন্তু তারা ভীষণ খুশি হবে। এ কাজটা নিকট আত্মীয়ের মধ্যে থেকে কেউ করলে বেশি ভালো। চাইলে কয়েকজন মিলেও করতে পারেন।
দলবল মিলে দিতে পারেন: অফিস কলিগ বা বন্ধুরা কয়েকজন মিলে একটু বড়সড় উপহারও দিতে পারেন। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে অনেক কিছুই আপনি পছন্দ করতে পারেন। মোবাইল সেট বা ক্যামেরা হতে পারে পারফেক্ট গিফট। ডিজিটাল অ্যালবাম অল্প খরচের মধ্যে দারুণ হয়। এ ছাড়াও এলইডি টেলিভিশন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, এমনকি ছোটখাট কোনো আসবাবও হতে পারে অন্যরকম একটা উপহার। ডিএসএলআর ক্যামেরাও উপহার দিতে পারেন যদি তাদের কারও ছবি তোলার শখ থাকে।
উপহার যখন বই: বই কখনও পুরনো হয় না। আপনার বিবাহযোগ্য বন্ধুটি পড়ুয়া গোত্রের হলে প্রিয় লেখকের বা তার পছন্দের ঘরানার বই উপহার দিন। বিয়ে যেহেতু, একটি বই না দিয়ে কয়েকটিই দিন বরং! সুন্দর মলাটে করে কার্ডে শুভেচ্ছা জানিয়ে কিছু কথা লিখে দিতে পারেন।
দিতে পারেন বৃক্ষ: মৃৎ শিল্পের দোকানে বিভিন্ন দামের বনসাই, ছোট অ্যাকুয়ারিয়াম, ঘরে টিকে থাকে এমন গাছ পাওয়া যায়। চাইলে সেগুলো দিতে পারেন। ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে গাছগুলো বেশ কাজে আসবে। আর বন্ধুর যদি গাছ-গাছালির শখ থাকে, তার নতুন সংসার সাজানোর জন্য কিছু গাছ উপহার দিতেই পারেন। বর্ণিল টবে করে দিতে পারেন, দেখতে ভালো লাগবে তাতে। খুব গতানুগতিক না হোক, উপহার হিসেবে অন্য অনেক জিনিসের চেয়ে গাছ ঢের বেশি ভালো।
এ ছাড়া নানান ডিজাইনের সুগন্ধী মোমও উপহার দিতে পারেন। মনে রাখবেন উপহার উপহারই। আর মানুষ উপহার দেয়, দেয়ার আনন্দে। কাজেই যতটুকু দিলে আনন্দ পাবেন তার চেয়ে বেশি কিছু না করাই ভালো। আর হ্যাঁ, উপহার দিতে গিয়ে কখনোই প্রতিযোগিতায় নামবেন না যেন।
বিয়ের উপহারে ভিন্নতা
শীর্ষ সংবাদ: