ছবি: সংগৃহীত
একে অপরের দিকে গোবর ছুড়ছেন কয়েকশো গ্রামবাসী। সারা গায়ে গোবর মাখামাখি করেও খুশিতে মাতোয়ারা তারা। অদ্ভুত মনে হলেও এমনই একটি উৎসব পালন হয় ভারতের কর্ণাটক ও তামিলনাড়ু রাজ্যের সীমান্তবর্তী গ্রাম গোমাতাপুরায়। দীপাবলি উপলক্ষে পুরো গ্রামবাসী একে অপরের দিকে গোবর ছোড়েন। সারা গায়ে গোবর মাখামাখি করে খুশিতে আত্মহারা হয়ে লাফালাফি করেন।
দিওয়ালির রাত শেষ হতেই এমন ছবি দেখা যায়। গোবর খেলায় মাতেন গ্রামের বাসিন্দারা। গোবর খেলা খেলেই দিওয়ালির উৎসবে ইতি টানে গোমাতাপুরার বাসিন্দারা।
গোবরের গন্ধে যতই নাক বন্ধ হয়ে আসুক না কেন, তা নিয়ে যেন ভ্রুক্ষেপ নেই গোমাতাপুরার বাসিন্দাদের। তাদের কাছে এটা এক চিরাচরিত প্রথা। যুগ যুগ ধরে এ ভাবেই দীপালির উৎসব শেষ করেন গ্রামবাসীরা। গোবর-যুদ্ধের একটা নামও রয়েছে, গোরেহব্বা পর্ব।
গোরেহব্বা পর্বের দিন বেশ আটঘাট বেঁধে প্রস্তুতি শুরু করেন গোমাতাপুরার বাসিন্দারা। গোবর খেলার ‘রসদ’ সংগ্রহে নামেন গ্রামের পুরুষরা। দুপুর হতেই গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে গোবর সংগ্রহের কাজে নামেন তারা। স্বাভাবিক ভাবেই গরু-মহিষদের মালিকদের বাড়িতেই ভিড় হয় বেশি।
গোবর সংগ্রহের পালা শেষে সে সব শুদ্ধিকরণ এবং পুজোপাঠও করা হয়। ট্রাক-ট্রলি যে যাতে পারেন, তাতে গোবর ভরে নিয়ে যান গ্রামের মন্দিরের পুরোহিতের কাছে। এর পর শুরু হয় গোবরপুজো। প্রথামাফিক পুজোর পর পুরোহিতের আশীর্বাদ নিয়ে গোবর খেলায় নামেন গ্রামের পুরুষরা।
খেলা শুরুর আগে প্রচুর ট্রাক ও ট্রলি বোঝাই গোবর নিয়ে যাওয়া হয় একটি ফাঁকা মাঠে। সেখানেই সকলের সংগৃহীত গোবর একে একে ঢালা হয়।
গোবর খেলায় শামিল হতে একে একে মাঠের ধারে জড়ো হতে থাকেন গ্রামের পুরুষরা। জুটে যায় কম বয়সি ছেলেরাও। এর পরই শুরু হয় যুদ্ধ! যুদ্ধের রসদ হিসাবে গ্রামের ছেলেদের হাতে হাতে উঠে আসে গোবরের গোলা। তা বানিয়ে পরস্পরের দিকে ছুড়তে থাকেন তারা।
গোমাতাপুরার বাসিন্দারাই গোরেহব্বা পর্বে শামিল হন। এই যুদ্ধ দেখতে কম ভিড় হয় না। প্রতি বছরই দূরদূরান্তের বাসিন্দাদের ভিড় উপচে পড়ে গ্রামের মাঠে। তাদের কাছে গোরেহব্বা কোনও উৎসবের থেকে কোনও অংশে কম নয়।
তাবিব