ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

যে বাজারে কেনাবেচা হয় রাজা-বাদশা

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

যে বাজারে কেনাবেচা হয় রাজা-বাদশা

গাধার হাট। ছবি: ইন্টারনেট থেকে

এটি পাকিস্তানের করাচির প্রাণবন্ত এক হাট। এ হাটে বিক্রি হয় রাজা বাদশা। ভাবছেন তা আবার কিভাবে সম্ভব ? শুধু তাই নয়, এদের জন্য আয়োজন করা হয় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। যদিও এই রাজা বাদশা কোনো মানুষ নয়, বরং গাধা। ঐতিহ্য, জীবিকা ও স্থানীয় অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে গাধা কেনাবেচার হাট। 

যা শুধু হাট নয়, বরং বেঁচে থাকার এক সংগ্রামের গল্প। যেখানে গাধারা শুধুমাত্র বাহন নয়, বরং অনেকের জীবন-জীবিকার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

এই গাধার ব্যবসায়িক প্রথার সঙ্গে জড়িয়ে আছে মজার কিছু দিক। কিছু এলাকায় গাধাদের জন্য আয়োজন করা হয় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, যেখানে গাধাদের সাজিয়ে তোলা হয় রঙিন রঙে, তাদের লেজের নকশা করা হয়, কিছু গাধার পায়ে চামড়ার তৈরি চপ্পল পরানো হয় যাতে তারা আরামদায়কভাবে চলাফেরা করতে পারে। অনেক মালিক শখের বশে গাধার নাম রাখেন রাজা, বাদশাহ, গোলাপীসহ নানারকম নাম।

শুধু তাই নয়, করাচি ও লাহোরের মতো বড় শহরগুলোতে গাধাদের জন্য বিশেষ হাসপাতাল এবং ক্লিনিকও আছে, যেখানে গাধাদের চিকিৎসা দেওয়া হয় বিনামূল্যে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এই ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত করার জন্য আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। গাধাদের জন্য এমন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও রয়েছে, যেখানে নতুন মালিকদের শেখানো হয় কীভাবে গাধার যত্ন নিতে হয় এবং তাদের সঠিকভাবে কাজে ব্যবহার করতে হয়।

এক সময় গাধার গাড়ি করাচির হাট-বাজারের অন্যতম প্রধান পরিবহন ছিল। এছাড়া ব্যবহৃত হয় পণ্য পরিবহন, কৃষিকাজ এবং শহরের ছোটখাটো কাজে।

স্থানীয়দের কেউ কেউ বাবা-দাদার আমল থেকেই যুক্ত গাধার ব্যবসায়। তবে আজ পরিস্থিতি বদলেছে। অনেকেই চান তাদের সন্তানরা পড়াশোনা করে অন্য কোনো পেশায় যুক্ত হোক, কারণ গাধার ব্যবসা এখন আর আগের মতো লাভজনক নয়। এছাড়া যান্ত্রিক যানবাহনের উদ্ভাবন ও শহরের আধুনিকায়নের ফলে গাধার ব্যবসায় দেখা দিয়েছে সংকট। মানুষ দ্রুতগতির ও আধুনিক যানবাহন পছন্দ করায় চাহিদা কমছে গাধার গাড়ির।

এসআর

×