ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সবাই আগের ইসিকে বিচারের আওতায় আনার কথা বলেছেন

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:২২, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

সবাই আগের ইসিকে বিচারের আওতায় আনার কথা বলেছেন

.

সবাই বিগত নির্বাচন কমিশনকে বিচারের আওতায় আনার কথা বলছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচন কমিশনগুলো বিতর্কিত ও কলঙ্কজনক নির্বাচন করে শপথ ভঙ্গ করেছে। তারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনার কথা বলছে প্রায় সবাই। আর সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে।
রবিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সুশীল সমাজের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন সুজন সম্পাদক।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আজকের আলোচনাটা ভিন্ন ছিল। তারা অনেক অভিজ্ঞ, তারা শিক্ষক, তারা গবেষক, তাদের এসব বিষয়ে গভীর জ্ঞান আছে। তাদের সঙ্গে আমরা সত্যিকার অর্থে একটা ডায়ালগ করেছি। আমরা তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি। আজকের আলোচনা থেকে যেটা সুস্পষ্ট হলো যে, সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে হবে, শক্তিশালী করতে হবে। বিশেষ করে আর্থিক স্বাধীনতা দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘না’ ভোটের বিধানের ব্যাপারে তারা সবাই একমত। রাজনৈতিক দল ও গণতন্ত্রের ব্যাপারেও তারা একমত। রাজনৈতিক দলের মধ্যে যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হয়, তাহলে রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে এটা আশা করা যায় না।
সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যাপারে অনেক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সরাসরি নির্বাচনের ব্যাপারে অনেকে বলেছে এবং রাষ্ট্রপতি পদকে আরও শক্তিশালী করার কথা বলেছে। নারীদের সরাসরি নির্বাচন এবং তাদের নির্বাচনী এলাকা থাকতে হবে এবং প্রত্যক্ষ নির্বাচন করার পক্ষে সবাই মতামত দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের আইন পরিবর্তন করতে হবে। মূলত এসব বিষয়েই আলোচনা হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, সদস্য মো. আব্দুল আলীম, জেসমিন টুলীসহ বৈঠকে অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) চেয়ারম্যান ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসাইন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামানসহ সংস্কার কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ‘না’ ভোট রাখাসহ তিন প্রস্তাব দিয়েছেন নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান অভিনেতা ইলিয়ান কাঞ্চন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রার্থীদের মধ্যে কাউকে পছন্দ না হলে যেন ‘না’ ভোট দেওয়া যায়। নির্বাচনে কারও প্রতি অন্যায় হলে তিনি মামলা করেন। সেই মামলা নিষ্পত্তি হতে হতে টার্ম (নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ) চলে যায়। তখন ওই লোক বিচার পান না। তাই নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটা বিচারের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। যাতে নির্বাচন কমিশনই দ্রুততার সঙ্গে সেটার বিচার করতে পারে এবং ওই লোক বঞ্চিত না হয়। ভুক্তভোগী তার অধিকার ফিরে পেতে পারে।
এ অভিনেতা বলেন, বিগত সরকারের সময় নির্বাচন কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনসহ (ইভিএম) নানা কিছু কিনে অনেক টাকা তছরূপ করেছে। যার কারণে সাধারণ মানুষের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা থাকে না। স্বচ্ছতা কীভাবে নির্বাচন কমিশনের মধ্যে আনা যেতে পারে, সেটার ব্যবস্থা করেন। না হলে জনগণের আস্থা ফেরত আসবে না। নাহলে মনে করবে এরাও আগের মতোই।
এদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান বলেন, সভায় আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মত এসেছে। কেউ কেউ বলেছেন, এটা মিশ্র পদ্ধতিতে আসা উচিত। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ করা, স্বচ্ছভাবে দলীয় অর্থায়ন করা, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব অংশীজনের সক্রিয় সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সভায় নির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং ‘না’ ভোটের প্রসঙ্গ এসেছে বলেও জানান তিনি।

 

×