সন্তান লালন-পালন প্রত্যেক পিতামাতার জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সন্তান যখন ভুল করে অনেক পিতামাতা ভাবেন কীভাবে সন্তানকে সঠিক পথে পরিচালিত করা যায়। অনেকে বকাঝকা বা মারধর করেন। যা কোন সমাধান নয়। বকাঝকা বা মারধর ছাড়াই শিশুদের শাসন করা যায়। এখানে ৭টি কার্যকরী উপায় দেওয়া হলো-
১. শুরু থেকেই স্পষ্ট নির্দেশনা দিন
শিশুরা যখন জানে তাদের থেকে কীরকম আচরণ প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তখন তাদের ভুল করার সম্ভাবনা কম থাকে। সহজভাবে নিয়মগুলি ব্যাখ্যা করুন এবং প্রয়োজন মতো বারবার মনে করিয়ে দিন। উদাহরণস্বরূপ, বলতে পারেন, আমরা খেলনা গুছিয়ে রাখি খেলার পর বা ঘরে আমরা নিচু স্বরে কথা বলি।
২. ভালো আচরণকে উৎসাহিত করুন
তাদের কী করতে হবে সেটা বারবার বলার পরিবর্তে, তারা কী ভালো করছে তা খেয়াল করুন এবং পুরস্কৃত করুন। প্রশংসাসূচক কথা, আলিঙ্গন বা ছোট পুরস্কার (যেমন স্টিকার) দিয়ে ভালো আচরণকে উৎসাহিত করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি তারা খেলনা ভাগাভাগি করে বা বাড়ির কাজে সাহায্য করে, তখন বলুন, তুমি আজ কী চমৎকারভাবে খেলনা ভাগ করেছ, আমি খুব খুশি!
৩. টাইম-আউটের পরিবর্তে টাইম-ইন ব্যবহার করুন
টাইম-আউট অনেক সময় শিশুদের একা অনুভব করাতে পারে। এর পরিবর্তে টাইম-ইন ব্যবহার করুন, যেখানে আপনি এবং শিশু একসঙ্গে বিরতি নিন। শিশুর সঙ্গে বসে কয়েকটি গভীর শ্বাস নিন এবং কেন একটি আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়, তা আলোচনা করুন।
৪. তাদের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দিন
শিশুরা অনেক সময় নিয়ন্ত্রণের অভাব অনুভব করলে খারাপ আচরণ করে। সহজ কিছু পছন্দের সুযোগ দিয়ে তাদের ক্ষমতায়িত করুন। উদাহরণস্বরূপ, তাড়াতাড়ি জুতো পরে নাও বলার বদলে বলুন, তুমি আজ লাল জুতো পরবে, না নীল জুতো?
৫. আপনি যেভাবে চান, সেই আচরণ নিজে দেখান
আপনি যেভাবে আচরণ চান, সেটাই শিশুর সামনে মডেল করুন। কঠিন পরিস্থিতিতেও শান্ত এবং শ্রদ্ধাশীলভাবে আবেগ পরিচালনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি চান যে শিশুটি "অনুগ্রহ করে" এবং "ধন্যবাদ" বলুক, তাহলে আপনি নিজেও এগুলো নিয়মিত বলুন।
৬. শান্ত থাকুন এবং শোনার সময় দিন
প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে শিশুর কাছে জানতে চান তারা কী অনুভব করছে। কোনো রকম বিচার ছাড়াই তাদের কথা শোনা উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি শান্ত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বলুন, আমি দেখছি তুমি রেগে আছ। তুমি কি বলতে পারো কেন? এটি দেখায় যে আপনি তাদের যত্ন নিচ্ছেন এবং তাদের আবেগ পরিচালনায় সাহায্য করতে চান।
৭. সমস্যা সমাধানের দক্ষতা শেখান
শুধু বলার পরিবর্তে শিশুকে সমস্যার সমাধান খুঁজতে সাহায্য করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি তারা কোনো বন্ধুর খেলনা নিয়ে নেয়, জিজ্ঞাসা করুন, আমরা এটা কীভাবে ঠিক করতে পারি? অথবা পরের বার আমরা কীভাবে ভাগ করে নিতে পারি? সমস্যা সমাধানের দক্ষতা শেখানো তাদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করে এবং নিজেরাই সমস্যা সমাধান করতে শেখায়
মুজাহিদ