.
প্রতিটি ছবির ভেতর রয়েছে পৃথক পৃথক গল্প। সেই গল্পে উঠে এসেছে নিপীড়িত মানুষের কথা থেকে বিশ্বের নানা প্রান্তে চলমান আন্দোলন সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উন্নত বিশ্বের মানুষের শরণার্থী জীবনের বেদনার্ত দৃশ্যকল্প।
ক্যামেরাবন্দি হয়েছে পরিবেশগত সংকটের কারণে আমাজন নদীর তীরে খরার ফলে আদিবাসী জেলেদের বিপন্ন জীবনের দুর্দশার চিত্র। রয়েছে মিয়ানমারের স্বৈরতান্ত্রিক সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামের ছবি। আছে চিলির মাপিউচেই নামের আদিবাসীদের শোষণ ও নিপীড়নের শিকার হওয়ার ছবি। এভাবেই বিশ্বের নানা প্রান্তের ঘটনাবহুল অধ্যায়কে ধারণ করেছে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রদর্শনী। বিশ্বব্যাপী ভ্রমণরত এই প্রদর্শনীটি নানা দেশ ঘরে এবার এসেছে। বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয়, তথ্যবহুল এবং অনুপ্রেরণামূলক আলোকচিত্রে সজ্জিত এই প্রদর্শনী এখন ঠাঁই নিয়েছে পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনের দৃক গ্যালারিতে।
রবিবার হেমন্তের বিকেলে প্রদর্শনীটি কৌতূহল নিয়ে অবলোকন করছিলেন এক দর্শনার্থী। প্রতিটি আলোকচিত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলেন সামিরা পারভীন নামের এক কর্মজীবী নারী। আলাপচারিতায় এই দর্শক বলেন, এই শিল্পায়োজনটি আমার কাছে গুরুত্ববহ। কারণ, এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিশ্বের ঘটনাবহুল নানা অধ্যায় উঠে এসেছে। এমনকি ছবির মাধ্যমে অজানা অনেক ঘটনাও জানতে পারছি। আলোকচিত্রের সূত্র ধরে ওই ঘটনার সঙ্গে যেন নিজেও সম্পৃক্ত হচ্ছি। তাছাড়া এই আয়োজনকে কেবলই একটা প্রদর্শনী বলা যায় না। এক অর্থে এটি হচ্ছে আলোকচিত্র সাংবাদিকতার মাস্টার ক্লাস। বিশ্বব্যাপী ঘটনাবহুল অধ্যায়ের দেখা মেলে এই প্রদর্শনীতে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে নানা আন্দোলন-সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধরা দিয়েছে আলোকচিত্র। অন্যদিকে গণমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে। এ কারণেই ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রদর্শনীকে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আলোকচিত্রের আয়োজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর বাইরে বর্তমানে বিশ্বের আলোকচিত্র সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশের ফটো সাংবাদিকরা।
সব মিলিয়ে ৬৬টি আলোকচিত্রে সজ্জিত হয়েছে এই প্রদর্শনী। বিশ্বব্যাপী ভ্রমণরত এই প্রদর্শনীটিতে ১৩০টি দেশের ৩ তাহাজার ৮৫১ আলোকচিত্রীর ৬১ হাজার ৬২টি আলোকচিত্রের মধ্য থেকে ৬৭তম বার্ষিক ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও নির্বাচিত আলোকচিত্রসমূহ প্রদর্শিত হচ্ছে। আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের উন্মুক্ত থাকবে।