শিশুকে এমন শিক্ষা দেওয়া উচিত যা তাকে আদর্শ মানুষ
শিশুকে এমন শিক্ষা দেওয়া উচিত যা তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে এবং তার জীবনে সফলতা আনবে। এজন্য কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রেখে খুব সাবধানে তাদের তা শিখানো উচিত-
টিভি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমানে শিশুরা প্রচুর সময় ব্যয় করে। তবে এ সময় যেন দৈনিক এক ঘণ্টার বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ভিডিও গেমস ও মোবাইল ফোনেও যেন সব মিলিয়ে দিনে এক ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় না করে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি সাহিত্য বহির্ভূত বই পড়তে দিন এবং এক পাতা সারাংশ লেখা অভ্যাস করান। সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য শারীরিক অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এ কারণে প্রতিদিন অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট দৌড়ঝাঁপ করে খেলতে দিন। শিশুর আদর্শ ভবিষ্যৎ জীবন কেমন হবে সে সম্পর্কে লিখতে দিন। তাকে জনহিতকর কাজের বিষয়ে উৎসাহিত করুন। সঞ্চয় করতে শেখান। যে কোনো দরকারে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকার বিষয়টি শিশুকে শেখানো খুবই প্রয়োজনীয়। ভবিষ্যতে সে যেন কোনো বিপদে পড়লে তাদের সহায়তা নেয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করুন। এছাড়া অন্য কারও বিপদে যেন সে পাশে দাঁড়ায় তাও বুঝিয়ে দিন। যে কোনো বিষয়ে কারও কাছে উপকৃত হলে ধন্যবাদ দেওয়া শেখান। ভুল হতেই পারে।
আর সে ভুলগুলোতে সে যেন হতাশ না হয় সেজন্য তাকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে হবে। ভুল মেনে নেওয়ার পাশাপাশি এক ভুল যেন বারবার না হয় সেজন্যও তাকে সতর্ক হওয়ার শিক্ষা দিন। কারো সঙ্গে ভুল করে কোনো অযাচিত ব্যবহার করে ফেললে ক্ষমা চাইতে শিখান। রাগ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এ বিষয়টি ছোটবেলা থেকেই তাকে শেখাতে হবে। এজন্য বাবা-মায়েরও রাগ প্রকাশে সংযত হতে হবে। কারণ বাবা-মায়ের থেকেই সে সব বিষয় শেখে। শিশুর সঙ্গে মুখোমুখি আলাপে নানা বিষয় নিয়ে আসুন। এক্ষেত্রে ফোন বা অন্য কোনো মাধ্যম খুব একটা কার্যকর নয়। সময় ব্যবহারের বিষয়টি জানান। দৈনিক কাজের তালিকা তাকেই তৈরি করতে দিন। এটি তাকে মেনে চলার উপায় জানান।
যে আদব কায়দাগুলো শেখাতে কখনো ভুলবেন না
বাড়িতে একটি শিশু থাকা মানেই সারা ঘরে খুশির জোয়ার বয়ে যাওয়া। পরিবারের সদস্যদের আনন্দ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয় ঘরে থাকা ছোট্ট শিশুটি। আর মা-বাবা দুজনেই যদি কর্মরত হন, তবে তো কথাই নেই! সেই ঘরে বাচ্চার আদর চারগুণ বেড়ে যায়। বাচ্চা যখন যা আবদার করে মা-বাবা তাই সামনে এনে হাজির করেন। শাসন কী জিনিস, বাচ্চা তার কিছুই বুঝে না।
ছোট বয়সে সব ঠিক থাকলেও সমস্যাটা একটু বড় হলেই বুঝা যায়। বাচ্চা যখন বিগড়ে যেতে শুরু করে, তখন বাড়ির লোক বোঝেন কী ভুলটাই না করেছেন। আপনিও যদি এমন করে চলেন তাহলে তা বন্ধ করুন। বাচ্চাকে সঠিকভাবে মানুষ করাটা বেশি দরকার। তাই তাকে সঠিক আচার-আচরণ শেখান। আজকাল অনেক বাচ্চাই প্রচুর কথা বলে, অন্যের কথা শোনে না। অন্যের কথা শুনতে শেখান। সব সময় আলাপচারিতা যে দু’পক্ষের হয়, তা বুঝান।
একা বড় হওয়ার জন্য অনেক শিশুরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যায়। কারও সঙ্গে দেখা করার বিষয়টাতে অনেক সময় অনীহা প্রকাশ করে। এটা দূর করানো অভিভাবকের কাজ। তা না হলে, সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে কারও সঙ্গে দেখা হলে যার যার ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সালাম ও কুশলাদি বিনিময় করতে শিখান। বাকিটা সে নিজে শিখে যাবে। বাচ্চাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের শিক্ষাদিন। কেউ কিছু উপহার দিলে, বা কোনো কিছু সাহায্য করলে ধন্যবাদ বলতে বলুন। এই ভদ্রতা ছোট থেকে শেখা খুবই দরকার। অনেক সময় বন্ধু বা পরিজনদের সঙ্গে পুনর্মিলনী হয়ে থাকে।
এমন জায়গায় কেমন আচরণ করা উচিত তার জানাতে হবে। আজকাল সবাই ফোনের ওপর ভরসা করেন। তা কারও খবর নিতে হোক কিংবা জরুরি কাজে। বাচ্চাদের হাতেও ছোট থেকেই মোবাইল রয়েছে। এই ফোনে কিভাবে কথা বলতে হয় বাচ্চাকে শেখান। কেউ ফোন করলে কেমন করে উত্তর দিতে হয়, কিংবা নিজে কোথাও ফোন করলে কিভাবে কোন টোনে কথা বলতে হয়, শিক্ষা দিন। এটাও একটা নিয়মের মধ্যে পরে।