সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন ইন্টারনেট জগতে মানুষের বিচরণ বাড়ছে। সব বয়সী ও প্রায় সব পেশার মানুষই কম-বেশি ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। স্ট্যাটিস্টার তথ্য মতে, বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৫.৪৫ বিলিয়ন। বাংলাদেশেও দিন দিন বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা। গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল, ১৩ কোটি এক লাখ। ২০২৪ এর শেষ দিকে এসে তার আরো বেড়ে যাওয়ার কথা।
ইন্টারনেট ব্যবহার যেমন দিন দিন বাড়ছে, তেমনি ইন্টারনেট কেন্দ্রিক অপরাধও দিন দিন বাড়ছে। ভার্চুয়াল জগতে তৈরি হয়েছে ভয়ঙ্কর সব অপরাধ গলির। যেখানে বিচরণ ঘটলে একটি মানুষ চার দেয়ালের ভেতর থেকেও অনেক বড় বড় অপরাধে লিপ্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই আমাদের উচিত, আমাদের সন্তানরা যেন, ইন্টারনেট জগতের এমন গলিতে প্রবেশ না করে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা। কেননা হাদিস শরীফে এসেছে, তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক (দায়িত্বশীল) এবং তোমারা প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। ... একজন পুরুষ তার পরিবারের রক্ষক, সে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।.. (বুখারি, হাদিস : ৫১৮৮)
বর্তমানে উঠতি বয়সী ছেলে/মেয়েরা ইন্টারনেটের প্রতি বেশি আসক্ত। ভার্চুয়াল দুনিয়ার মরীচিকা তাদের বেশি আকর্ষণ করে। বিকৃত বিনোদন, ফ্রিতে দামি দামি ডিজিটাল প্রডাক্ট হাতিয়ে নেওয়া কিংবা শর্টকাটে বড় লোক হওয়ার স্বপ্ন তাদের কখনো কখনো ইন্টারনেটের এমন অন্ধকার জগতে নিয়ে যায়, তা তাদের ঈমান ও জীবন দুটোকেই হুমকিতে ফেলে দেয়। ইন্টারনেটের তেমনই একটি ভয়ংকর জগত হলো ডার্ক ওয়েব।
ডার্ক ওয়েব হলো, অনলাইন ভিত্তিক ভয়ংকর অপরাধ জগত্। যা মানুষের কল্পনার চেয়েও ভয়ংকর। ডার্ক ওয়েব ব্যবহারকারীরা নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রেখে নানা ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। যেমন, হ্যাকিং, মাদক বিক্রি, অস্ত্র বিক্রি, কপিরাইট লঙ্ঘন, চোরাচালান, গুপ্ত হত্যা, পর্নোগ্রাফি, মানব পাচারের মতো ভয়াবহ অপরাধ পরিচালনা করে।
ডার্ক ওয়েব-এ বেশির ভাগ উঠতি বয়সী ছেলে/মেয়েরা যায় মূলত বিভিন্ন মূল্যবান ডিজিটাল পণ্য, যেমন, দামি সফটওয়্যার, বেস্ট সেলার বই, সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা, গান ইত্যাদির পাইরেটেড কপি ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যায়। যেহেতু এসব কপিরাইট লঙ্ঘন করা হয়, পরিচয় গোপন রেখে, তাই দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপও নেওয়া যায় না। অথচ ডিজিটাল পণ্যের স্বত্ব সেই পণ্যের নির্মাতার হক। তা পাইরেসি লঙ্ঘন করে ব্যবহার কিংবা বাজারজাত করা অন্যের হক নষ্ট করার শামিল। রাসুল (সা.) বলেছেন, কারো সম্পদ তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাকি)
ফুয়াদ