ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বৃহস্পতিবার ঢাকায় দিনভর বৃষ্টি

ঘূর্ণিঝড় দানা ঢাকা থেকে বহুদূরে ছিল। তবে এর প্রভাব থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকতে পারেনি রাজধানী শহর। বৃহস্পতিবার সারাদিনই ছিল অন্ধকার। সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। মরা মাছের চোখের মতো ঘোলা হয়ে ছিল আকাশ। সন্ধ্যার অনেক আগেই চারপাশ অন্ধকারে ডুবেছিল। আর বৃষ্টি তো থামার নাম নেয়নি। জীবিকার প্রয়োজনে যারা ঘরের বাইরে ছিলেন দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল তাদের। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আগের দিনও ঘামে ভিজেছেন। আর ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ভিজেছেন বৃষ্টিতে।

লম্বা সময় ধরে ভিজতে থাকা রিক্সাচালকদের হাত ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল। শীতে কাঁপছিলেন অনেকে। কিন্তু জীবন থেমে থাকে না। এ অবস্থায়ই যাত্রী পরিবহন করেছেন তারা। চাকরিজীবীদের একটি অংশ ছাতা নিয়ে বের হয়েছিলেন। বাকিদের কাকভেজা হতে হয়েছে। কেউ কেউ সম্পূর্ণরূপে ভিজে গিয়েছিলেন। বৃষ্টির হাত থেকে অফিসের দরকারি কাগজপত্র রক্ষার, ডেলিভারিম্যানদের পার্সেল রক্ষার যুদ্ধ দিনভর চোখে পড়েছে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে অসুখ-বিষুখও ঢের হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর বেধে যেতে পারে। তাই অন্তত মাথাটা বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন অনেকে।

এক মোটরসাইকেল চালক হঠাৎ সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তার দিকে তাকাতেই হাসি পেল। অভিনব কায়দায় পলিথিন দিয়ে মাথা পুরোটা মুড়িয়ে নিয়েছিলেন তিনি। অদ্ভুত দেখালেও তার উদ্যোগটির প্রশংসা না করে পারা যায়নি। সুস্থ থাকতে হলে একটু তো সতর্ক হতেই হবে। বৃষ্টির দিনে কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিল যানজটও। গাড়ি তেমন চলছিল না। প্রধান প্রধান সড়কে স্থির হয়েছিল চাকা। সব মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড় দানা যা দান করে গেছে তা ঢাকাবাসীর জন্য সুখকর ছিল না। 
বাতাসের মানে উন্নতি ॥ ঢাকায় বিচিত্র দূষণ। বাতাসের মানও বরাবরই খারাপ। তবে বৃহস্পতিবার এই মানের কিছুটা উন্নতি হয়। বৃহস্পতিবার বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল ৭৭তম। শহরের বাতাসের মান ছিল ‘মাঝারি’ পর্যায়ে। বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা তাৎক্ষণিক আইকিউএয়ারের সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর।’ ৩০১  থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়। সংস্থাটির মতে, সকাল ১০টায় দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় বাংলাদেশের একিউআই স্কোর ছিল ৫৪। অন্যদিকে ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের করাচি ও লাহোর যথাক্রমে ২৬৫, ১৯৮ ও ১৯২ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করে।

×