ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ২৩:০২, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে নিম্নবিত্ত মানুষও ডিম খান। সেই ডিমের বাজারেও এখন আগুন

আলোচনার কত যে ইস্যু এখন! একটা শেষ হতে না হতেই আরেকটা এসে হাজির। তবে ঢাকার সাধারণ নাগরিকরা দ্রব্যমূল্যের রকেট গতি নিয়েই বেশি চিন্তিত। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম হুহু করে বাড়ছে। বেড়ে চলেছে। কাঁচামরিচের ঝালের কথাই ভাবুন, ছোঁয়া যায় না! কিন্তু বাঙালি রান্না কাঁচালঙ্কা ছাড়া হবে? তাই বেশি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে। সবজি কিনতে গিয়েও খালি হয়ে যাচ্ছে পকেট। আলু টমেটো পটোল করলা ঢেঁড়স মুলা লাউ চালকুমড়া ফুলকপি বাঁধাকপি বা শিম বরবটি- কোনটি কিনবেন?

গুনতে হবে বাড়তি টাকা। বর্তমান উচ্চমূল্য দেখে গণমাধ্যমেও  সবজিকে উল্লেখ করা হচ্ছে ‘বিলাসী পণ্য’ হিসেবে। আর ডিম নিয়ে তো একেবারে কেলেঙ্কারি অবস্থা! ক্রেতারা বাজারে গিয়ে দাম শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠছেন। সবসময় যারা মাছ মাংস কিনতে পারেন না, আয় সীমিত যাদের, তারা এই আমিষ পদটি কিনে খান। আমিষ ছাড়াও ডিমে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদান।

কুসুমে থাকে স্নেহ পদার্থ, লৌহ। ফলে পুষ্টি চাহিদা পূরণে সব বয়সের মানুষকেই ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। রাজধানীর নি¤œবিত্ত মানুষেরাও দিনে অন্তত একটি ডিম খেয়ে অভ্যস্ত। মধ্যবিত্তরা সকালে নাস্তার টেবিলে রুটি বা পরাটার সঙ্গে দুইটি ডিম পোচ বা মামলেট রাখেন। বাসায় তরকারির ভালো ব্যবস্থা না থাকলেও অনেকে চট করে একটা ডিম ভেজে ভাত খেয়ে উঠে যান। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ডিমের বাজার অস্থির।

ঢাকার যে কোনো এলাকা থেকে এক ডজন ডিম কিনতে হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়! প্রতি পিস ডিমের দাম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা। এ অবস্থায় ডিম নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ হচ্ছে। এমনকি সরকারি নানা উদ্যোগের মধ্যেই দুইদিন ডিম বিক্রি বন্ধ রেখে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন তেজগাঁওয়ের পাইকারি বিক্রেতারা! বর্তমানে তারা ফিরলেও, সরকারের বেঁধে দেওয়া যৌক্তিক দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম।

অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে দাম কমানোর। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। বিরক্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, ‘ডিম কি মেশিন দিয়ে তৈরি করব?’ কী একটা অবস্থা! তবে অবস্থা যাই হোক, দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে। আপাতত এ বিষয়টিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।  
প্রকৃতিতে শীতের আগমনী ॥ প্রকৃতিতে এখন শীতের আগমনী। হেমন্তের মিষ্টি সময়টা চলে এসেছে। বৃহস্পতিবার প্রিয় ঋতুর আনুষ্ঠানিক সূচনা হলো। এখন থেকে বদলাতে থাকবে প্রকৃতি। ভ্যাপসা গরমটা ধীরে ধীরে কমে যাবে। ¯িœগ্ধ অনুভূতি দেবে সূর্যের আলো। একটু একটু করে ঢুকবে শীত। গ্রামবাংলায় এরই মাঝে শিশির ঝরতে শুরু করেছে। দেখা যাচ্ছে কুয়াশা।

শহর ঢাকায়ও হেমন্তের ভাব স্পষ্ট। সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগ মুহূর্তে কিছুটা শীত শীত লাগে। কোনো কোনো রাতে চাইলে ফ্যান বন্ধ করে ঘুমানো যায়। হেমন্তের এই পর্বটা শেষ হলেই শীতকাল শুরু হয়ে যাবে। শীতের জন্য অপেক্ষা করে না কোন বাঙালি! ঢাকাবাসী আরও বেশি উদ্গ্রীব। কারণ যানবাহনের ইঞ্জিন, কলকারখানা ইত্যাদির কারণে রাজধানী শহরটি উত্তপ্ত হয়ে থাকে অধিকাংশ সময়। শীতকাল তাই আশীর্বাদ। ভীষণ উপভোগ্য। তো, প্রস্তুত হয়ে যান। সময় গণনা শুরু করে দিন। শীত আসছে!

×