.
স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সে বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের গতি বাড়লেও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা এবং দেশের গ্রাহকের চাহিদা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। শুক্রবার সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত তথ্য ও দপ্তর সম্পাদক মো. আরিফ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
এতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ওকলার গত ২৫ এপ্রিল স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সের ফলাফলে দেখা যায়, বাংলাদেশের অবস্থান নেমে ১২২তম অবস্থানে চলে এসেছে। এটি তাদের মার্চ ২০২৪ সালের স্পিড টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল। অথচ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল তাদের তথ্যমতে ১০৬তম। যেখানে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থান দেখানো হয়েছে ১৬তম। পরীক্ষায় দেখা যায়, ইন্টারনেট ডাউনলোডের স্পিড ছিল ২৪ দশমিক ৫৯ এমবিপিএস। আর আপলোড গতি ছিল ১১ দশমিক ৫৩ এমবিপিএস।
গত ১০ অক্টোবর হোগলার স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স প্রতিবেদন এই লক্ষ্য করলাম বাংলাদেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ডাউনলোড গড় ইন্টারনেটের গতি ২৭.৭৬ এমবিপিএস। আর গড় আপলোড প্রতি ১১ দশমিক ২২ এমবিপিএস। মোবাইল ইন্টারনেট ল্যাটেন সি দেখানো হয়েছে ২৫ মিলি সেকেন্ড।
এপ্রিল থেকে অক্টোবর শুরুতে তাদের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ক্রমান্বয়ে উন্নতি হয়েছে যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ৮৯তম। যেখানে আগের প্রতিবেদনে ছিল ১০৬ অর্থাৎ ১৭ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে বিশ্বের সর্বোচ্চ গতির দেশ আরব আমিরাতের গড় ডাউনলোড গতি ৩৯৮ এমবিপিএস। সেখানে ২৭. ৭৬ বা ২৪ এমবিপিএস আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ওকলার এ তথ্য যদিও আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, ওকলা স্পিড টেস্টের স্যাম্পল সংগ্রহের জন্য যে সকল ডিভাইস ব্যবহার করে থাকে তার স্যাম্পল সংগ্রহের ডিভাইসের তথ্য অনুযায়ী সে সকল ডিভাইস ব্যবহারকারী বাংলাদেশে মাত্র ৫ থেকে ৮ শতাংশ।
আমাদের দেশের গ্রাহকরা যে ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করে থাকে সেই সকল ডিভাইস দিয়ে যদি ইন্টারনেটের গড় ডাউনলোড বা আপলোড পরিমাপ করা হয়, সেখানে গড়গতি পাওয়া যাবে পাঁচ থেকে দশ এমবিপিএস। প্রান্তিক পর্যায়ে কিংবা ভবনের অভ্যন্তরে আবার ইন্টারনেটের গতি নিষ্ক্রিয় থাকে। বহুতল ভবনে কিংবা পুরাতন ঢাকা এমনকি সংসদ ভবনের ভেতরেও ইন্টারনেটের গতি ৫ এমবিপিএস।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্রমবর্ধমান গ্রাহকের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটের গতি যেভাবে বৃদ্ধি হওয়া উচিত সে অনুযায়ী বৃদ্ধি পায়নি। ফলে গ্রাহক অসন্তোষ এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইন্টারনেটের ডাটা থাকলেও ইন্টারনেটের গতি না থাকায় অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে ইন্টারনেটের ডাটা। মোবাইল ইন্টারনেট সেবা খাতে অনেক বৈষম্য ও সংকট যেমন চলমান আছে ঠিক একইভাবে সঠিক নজরদারি কমিশনের আন্তরিকতা ও জবাবদিহিতা ঘাটতি থাকা অন্যতম কারণ। পাশাপাশি অপারেটরদের মনোপলি বা তাদের ব্যবসার দিকে কেবল নজর থাকার কারণে সেবার মান বাড়ছে না।
বর্তমানে ইন্টারনেট উচ্চগতি থাকা কেবলমাত্র দেশের গ্রাহকদের জন্য নয়, দেশের শিল্প উন্নয়ন আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যেও জরুরি। এ ব্যাপারে সরকার বিশেষ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।