ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তপ্পিান্ন গলি

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বায়ান্ন বাজার তপ্পিান্ন গলি

দিগন্ত বিস্তৃত কাশবন জানান দিচ্ছে শারদ উৎসবের সময় এসেছে

অনেকদিন পর একটা উৎসবের হাতছানি। হ্যাঁ, শারদ উৎসব আসন্ন। আর মাত্র ক’টা দিন। এরপরই মর্ত্যে আগমন ঘটবে আনন্দময়ীর। কৈলাশ থেকে বাপের বাড়ি আসবেন দেবী। ধূপের গন্ধ ঢাকের আওয়াজ শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে চারপাশ। শারদীয় দুর্গোৎসবে পূজার যে আনুষ্ঠানিকতা সেটি কেবলই হিন্দু সম্প্রদায়ের। তবে উৎসব সবার। উদার অসাম্প্রদায়িক বাঙালি সমাজ ‘ধর্ম যার যার/উৎসব সবার’ নীতি অনুসরণ করবে। এখন সে প্রস্তুতিই চলছে। পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ২ অক্টোবর মহালয়া। এদিন দেবীপক্ষের সূচনা হবে।

৯ অক্টোবর দেবীর বোধন এবং ষষ্ঠী পূজা। মহাষষ্ঠীর দিন থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল আয়োজন শুরু হবে। এরপর মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী। ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন আয়োজনের ইতি ঘটবে। যতদূর জানা যাচ্ছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ২০৫ ম-পে দুর্গোৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। রাজধানীতে জাতীয়ভাবে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হবে ঐতিহ্যবাহী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। রমনা কালীমন্দিরেও বরাবরের মতো ঘটা করে দুর্গোৎসব আয়োজনের কথা রয়েছে। বনানী কলাবাগান খামারাবাড়িসহ ঢাকার আরও কিছু এলাকায় তৈরি করা হবে অস্থায়ী ম-প। তবে পূজার সময়টাতে অস্বস্তি বাড়ানোর চেষ্টাও কম দেখা যায় না।

সাম্প্রদায়িক অপশক্তি প্রায়ই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করে বসে। প্রতিমা ভাঙচুর করে। উৎসবের কয়েকজন আয়োজক এবং প্রতিমা শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, এবার তারা আরও বেশি উৎকণ্ঠা বোধ করছেন। কেন? জানতে চাইলে তাদের উত্তর : সরকার পরিবর্তনের পরপরই আমাদের মন্দিরে হামলা হয়েছে। বাসা বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হয়েছে। এরপর বড়সড় প্রতিবাদ। প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার আশ্বাস। আমরা তাই উৎসবের কাজ মোটামুটি শুরু করতে পেরেছি। কিন্তু পূজার সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেই নিরাপদ বোধ করছেন না।

এ অবস্থায় আবার দেখুন, উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে নতুন করে ঝামেলা হচ্ছে। ওখানে যে মাঠে পূজার আয়োজন করে আসছিলাম আমরা, এবার নাকি সেটি হতে দেওয়া হবে না। হঠাৎই কিছু লোক বলছে, মাঠে ঈদের নামাজ পড়া হয়। তাই দুর্গোৎসব করা চলবে না। মিছিল করছে তারা। উস্কানিমূলক বক্তব্যও দিচ্ছে। এসব কারণে ভয় থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকার যদি কার্যকর উদ্যোগ নেয় তাহলেই কেবল আনন্দঘন পরিবেশ দুর্গোৎসব করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে তারা।

বৃষ্টিতে বাড়তে পারে ডেঙ্গু ॥ ভারি বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীতে। বৃহস্পতিবার সারাদিনই ছিল বৃষ্টি। বাইরে থেকে ভিজে বিকেলে অফিসে ঢুকে সন্ধ্যায় যখন লিখতে বসেছি, আকাশ একইরকম কাঁদছিল। আশ্বিনে শ্রাবণের বৃষ্টি। ছন্দটাও তেমনই ছিল। তবে ছন্দ যতটা পুলকিত করেছে তার চেয়ে বেশি ভুগিয়েছে জলজট। ঢাকার অপেক্ষাকৃত নিচু রাস্তাগুলো সহসাই তলিয়ে গিয়েছিল।  এখানে ওখানে নষ্ট হয়ে পড়েছিল সিএনজি অটোরিক্সা। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাপক ভুগান্তিতে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। এদিকে অতি বৃষ্টির কারণে বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব।

অনেকদিন ধরে এই জ্বরে ভুগছিলেন রাজধানীবাসী।  সরকারি তথ্য মতেক, চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭ হাজার ৩৮৪ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ১৪১ জন। আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮২৯ জন। বৃষ্টি বাড়ায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান। তাই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আসুন একটু সতর্ক হই। সুস্থ থাকি।

×