ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

জাপানে কেন ডাস্টবিন নেই!

জলি রহমান

প্রকাশিত: ১৭:৪৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৮:২৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাপানে কেন ডাস্টবিন নেই!

জাপানের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তা

জাপানিরা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে কোনো খাবার খান না। জাপানের কোথাও কোনো ডাস্টবিন নেই। কিংবা বাড়ির ময়লাও কেউ রাস্তার পাশে জমা করে রাখতে পারেন না। জাপানিরা পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে এতটাই সচেতন যে, যত ক্ষণ না সঠিক ভাবে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা সম্ভব, তত ক্ষণ তাঁরা সেই ময়লা আবর্জনা নিয়ে রাস্তায় বেরোন না। জাপানের অধিবাসীরা  বাড়ির ডাস্টবিনে রাখা আবর্জনা নিয়ে যখন-তখন বাইরে বেরোতে পারেন না। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে এবং নির্দিষ্ট সময়ে এলাকায় আবর্জনা পরিষ্কার করতে আসেন কর্মীরা। তখনই সকলকে আবর্জনা নিয়ে বেরোনোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সে কারণেই রাস্তাঘাটে চলতে-ফিরতে কোথাও ময়লা ফেলার ডাস্টবিন চোখে পড়ে না ।

শুধুই কি দেশটিকে পরিষ্কার রাখার জন্যই এমন ব্যবস্থা নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো গল্প। জাপানিদের একটি নিজস্ব ধর্ম আছে, তা হলো ‘শিনতো’। এর মূল মর্মবাণীই হলো পরিচ্ছন্নতা। এই সাংস্কৃতিক নিয়মটি জাপানি সমাজে গেঁথে আছে গভীর ভাবে ।জাপানে আবর্জনা পাত্র দেখতে না পাওয়ার আর একটি কারণ হল নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ। দু’দশক আগে ১৯৯৬ সালে টোকিওর সাবওয়েতে হয়েছিল সারিন গ্যাসের এক রাসায়নিক হামলা। এই অন্তর্ঘাতের সঙ্গে জড়িত ছিল জাপানের এক গুপ্ত সংঘ, নাম অম শিনরিকো।
হামলায় ৫৪ জন গুরুতর আহত হয়েছিলেন এবং আরও ৯৮০ জন এই গ্যাসের প্রভাবে পরবর্তী সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানা যায়। মৃত্যু হয় ১৩ জনের। সারিন এক ধরনের রাসায়নিক মরণ গ্যাস। বর্ণ, গন্ধ বা স্বাদহীন এই তরল রাসায়নিক বাতাসের সংস্পর্শে এলে বাষ্পের মতো মিশে যায় মুহূর্তেই। আর সেই বিষাক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিলেই আক্রান্ত হয় মানুষ।সেই রাসয়নিক হামলার পর থেকেই ‘পাবলিক ট্র্যাশ ক্যান’ কে জাপানের প্রকাশ্য স্থান থেকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলা হয়। বিস্ফোরক বা অন্যান্য বিপজ্জনক জিনিসগুলো লুকিয়ে রাখার জায়গা হিসেবে আবর্জনা পাত্র  ব্যবহৃত হতে পারে এই আশঙ্কায় জাপানের রাস্তাঘাট থেকে ডাস্টবিন অদৃশ্য হয়ে যায়। জাপানের বর্জ্য হ্রাস ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের চাবিকাঠি এটাই। এ কারণেই বিশ্বের অন্যতম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেশের তালিকায় শুরুতেই আছে জাপান।
 

 

রাজু

×