ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আয়নাঘর উন্মোচনের দাবি

গুম হওয়া ৬৫ ব্যক্তির  সন্ধান চায় পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গুম হওয়া ৬৫ ব্যক্তির  সন্ধান চায় পরিবার

গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফেরতের দাবিতে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বজনরা

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৪ বছরে নিখোঁজ ও গুম হওয়া ৬৫ ব্যক্তির সন্ধান চেয়েছে পরিবারগুলো। সেই সঙ্গে তারা এসব ঘটনায় জড়িত র‌্যাব, ডিবি ও পুলিশের জড়িত সদস্যদের শাস্তি দাবি করেছেন। পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আয়নাঘর উন্মোচনের দাবিও জানিয়েছেন তারা। 
সোমবার ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ গুম পরিবার’ এর ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক ও লেক্সাস গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন।
অধিকাংশ গুম, অপহরণ ও খুনের সঙ্গে র‌্যাবের সংশ্লিষ্টরা জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যতগুলো গুম, খুন, অপহরণ হয়েছে। তার শতকরা ৭০-৮০ শতাংশ লোক র‌্যাবের। ক্রসফায়ারের নামে নাটক সাজিয়ে বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ মারা হয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। প্রতিটি সোর্সের আমরা বিচার চাই। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র‌্যাবকে নতুন বাহিনী হিসেবে রূপান্তর করা হউক। 
তিনি আরও বলেন, জল্লাদের আয়নাঘর কোথায় কোথায় বানানো হয়েছে, বাংলাদেশে কতটি আয়নাঘর আছে? তা আমরা জানতে পারিনি। বাংলাদেশে যদি আয়নাঘর থাকে তাহলে বিচার বিভাগ, আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব আয়নাঘর উন্মোচন না করা হলে সন্দেহভাজন সব আয়নাঘর ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে এবং সব আয়নাঘর ভেঙে গুড়িয়া দেওয়া হবে।
স্বজনহারা শারমিন আক্তার চাঁদনী বলেন, ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজশাহী থেকে আমার ভাইকে র‌্যাব-৫ এর সদস্যরা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা থানায় থানায় ঘুরেও কোনো প্রতিকার পাইনি। সবাই বলেছে, এটা অনেক ওপরের বিষয়। আর খোঁজাখুঁজি করে লাভ নাই। 
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরে চাঁদনী আরও বলেন, অবিলম্বে গুম ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের টর্চার সেল বা আয়নাঘরের মতো বন্দিশালাসমূহ থেকে নিঃশর্ত মুক্ত করা এবং নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফেরত দিতে হবে। ছেলের সন্ধান চেয়ে বৃদ্ধ বাবা মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, আমি আমার ছেলেকে নিয়ে ঢাকার সদরঘাটে লেবারের কাজ করতাম। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহানের লোকদের সঙ্গে আমার ছেলে সাদি হাওলাদারের ঝগড়া হয়।

সেটাকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে পিরোজপুর থেকে র‌্যাব আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও আমার সোনাধন (ছেলে) বাবাকে পেলাম না। কেউ আমার ছেলের সন্ধান দেয় না। যার কাছে গেছি, সবাই বলে আপনার এটা অনেক ওপর মহলের ঘটনা। খোঁজাখুঁজি করে লাভ নাই। আপনার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। ঘটনার পর থেকে কতবার থানা পুলিশ ও র‌্যাবের কাছে গেছি। কেউ আমাগো দিকে তাকায় নাই। সবাই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিছে। সরকার পতনের পর থেকে অনেকেই আয়নাঘর থেরে বেরিয়ে আসছে। আমার ছেলে কই। আমার বাবার খোঁজ দিবো কে? সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন স্থান থেকে নিখোঁজ হওয়া পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

×