ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

ইহুদি ভোটারদের প্রলুব্ধ  করতে ট্রাম্পের মন্তব্য

কমলা হ্যারিস জিতলে ধ্বংস হয়ে যাবে ইসরাইল

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৩০, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কমলা হ্যারিস জিতলে ধ্বংস হয়ে যাবে ইসরাইল

.

এবার ইসরাইল ইস্যু নিয়ে কমলা হ্যারিসকে সমালোচনায় বিদ্ধ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইলের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার লাস ভেগাসে রিপাবলিকান পার্টির ইহুদিদের এক সমাবেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন। স্যাটেলাইট ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জয়ী হলে ইসরাইলের অস্তিত্বই শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ইসরাইল রাষ্ট্র হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের সঙ্গে  যেন টিকে থাকে, তা নিশ্চিত করতে আমি কাজ করব। তবে তিনি (কমলা) প্রেসিডেন্ট হলে আপনাদের সেটি থাকবে না, ধ্বংস হয়ে যাবে। খবর আলজাজিরা সিএনএন অনলাইনের। 

ইহুদি ভোটারদের প্রলুব্ধ করার জন্য এই মরিয়া ধরনের প্রচার নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে ট্রাম্পকে নিয়ে। তবে এর আগে তার মধ্যপ্রাচ্য নীতির কারণে ইহুদি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে না পারায় বেশ হতাশ হয়ে পড়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। নিজের হতাশা প্রকাশ্যে এনে তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ইসরাইলপন্থি নীতি অনুসরণের আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও ইহুদি ভোটাররা ঝাঁকে ঝাঁকে তার শিবিরে যোগ দিচ্ছেন না। ট্রাম্প বলেন, আমি বুঝতে পারছি না যে, কেউ কীভাবে তাদের (কমলা) সমর্থন করতে পারে। ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি এটি ক্রমাগত বলি যে, যদি আপনি তাদের (কমলা) সমর্থন করেন এবং আপনি যদি ইহুদি হন, তাহলে আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে এবং এর চিকিৎসা প্রয়োজন। তারা আপনাদের প্রতি অত্যন্ত বিরূপ আচরণ করেছেন।

ট্রাম্প বলেন, খোলাখুলিভাবে বলতে গেলে, চার বছরে অন্য যেকোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে ইসরাইলের জন্য আমি অনেক বেশি কাজ করেছি। তা সত্ত্বেও মাত্র ২৫-২৬ শতাংশ ইহুদি আমাকে ভোট দিয়েছিলেন। বছর আশা করছি ৫০ শতাংশ ভোট পাব। সর্বশেষ জুনে মার্কিন ইহুদিদের মধ্যে জরিপ চালানো হয়। এই জরিপেও পিছিয়ে পড়েন ট্রাম্প। তার প্রতি মাত্র ২৪ শতাংশ ইহুদি ভোটার সমর্থন দেন। এর আগে রাশিয়া কমলা হ্যারিসের জয় চায় বলে মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট øাদিমির পুতিন। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বদলে কমলা হ্যারিসকে পছন্দ করার কারণ হিসেবে তারঅন্যরকম হাসিরকথা উল্লেখ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে জয়ী দেখতে চাওয়ার বিষয়ে পুতিন এই বিদ্রƒপাত্মক মন্তব্য করেন। 

রুশপন্থি প্রচার চালিয়ে নভেম্বরের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কথিত বেআইনি পরিকল্পনার ঘটনায় রুশ গণমাধ্যমের দুই নির্বাহীকে মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযুক্ত করার একদিন পর পুতিন এই বিদ্রƒপাত্মক মন্তব্য করেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী দৌড় থেকে জো বাইডেন সরে যাওয়ার আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে পুতিন বলেছিলেন, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে জো বাইডেনকে বেশি পছন্দ করেন। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন পুরোনো স্কুলের রাজনীতিবিদ; যাকে আগেই অনুমান করা যায়।

তবে মস্কো প্রকৃতপক্ষে ট্রাম্পের জয় চায় বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে। কারণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প খুব বেশি প্রতিশ্রুতিশীল নন। এখন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের একটি অর্থনৈতিক ফোরামে পুতিন বলেন, এটা আমেরিকান জনগণের পছন্দ। এর পর পরই তিনি বলেছেন, হ্যারিসের প্রতি সমর্থন দেওয়ার জন্য বাইডেন তার সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন। আমরাও তাই করব, আমরা তাকে সমর্থন করব। রুশ প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের সময় অনুষ্ঠানের উপস্থাপক পুতিন-উভয়কে হাসতে দেখা যায়। সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের কাছ থেকেও সাধুবাদ পান তিনি। হ্যারিস সম্পর্কে নিজের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি অত্যন্ত খোলা মনে এবং সংক্রামকভাবে হাসেন যে, এর অর্থ তার সবকিছুই ঠিক আছে। রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট বলেন, এর অর্থ সম্ভবত তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। বিপরীতে প্রেসিডেন্ট হিসাবে হোয়াইট হাউসে অন্য যে কারও চেয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পুতিন বলেন, তবে চূড়ান্ত পছন্দ আমেরিকান জনগণের। আমরা তাদের পছন্দের প্রতি শ্রদ্ধা জানাব। এদিকে কমলা হ্যারিস নিজের প্রথম মেয়াদে আড়াই কোটি ক্ষুদ্র ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের পোর্টসমাউথ শহরে একটি জনসভায় তার ঘোষণা দেওয়ার কথা। কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, যারা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে চান, তাদের জন্য তিনি (কমলা) করছাড় ১০ গুণ বাড়ানোর একটি নাটকীয় প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। পাশাপাশি নিজের প্রথম মেয়াদে আড়াই কোটি ক্ষুদ্র ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পদ থেকে জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর থেকে সফলভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন কমলা হ্যারিস। প্রচারের শুরু থেকেই কমলাসুযোগ অর্থনীতি বা অপরচুনিটি ইকোনমি কথা বলে আসছেন। কিন্তু এর দ্বারা আসলে কী বোঝাচ্ছেন, তা ব্যাখ্যা না করায় তার সমালোচনা হচ্ছিল। এবার সেটা স্পষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যান্য ঘোষণার মধ্যে, কমলা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কর কর্তন হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার ডলার করার ঘোষণা দেবেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য প্রশাসনিক জটিলতাও কমিয়ে আনবেন। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস হাতে হাত রেখে একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। কমলাকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বাইডেনের স্বীকৃতির পর এটিই তাদের প্রথম একসঙ্গে চালানো প্রচার।

নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যটিকে খুব হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এলাকা বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানকার ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টায় সোমবার সেখানে প্রচার চালান বাইডেন কমলা। তারা পিটসবার্গে শ্রমিক সংঘের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। এর পর বাইডেন কমলা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে প্রায় ৬০০ সমর্থকের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। বাইডেন বলেন, আমাদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং একে ভিত্তি করে আমি কমলা আরও অগ্রগতি করছি। বাইডেন আরো বলেন, আমি এবং কমলা এই অগ্রগতি আরও এগিয়ে নেব। আমি সাইডলাইনে থাকব, তবে সহযোগিতা করার জন্য যা কিছু করার, তা আমি করব। ভোটের আগের মাসগুলোতে কমলার নির্বাচনী প্রচারে বাইডেনের ভূমিকা কেমন হবে, তার একটা ধারণা পাওয়া যায়। ৮১ বছর বয়সী বাইডেন ডেমোক্র্যাট দল থেকে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। তবে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে প্রশ্ন তৈরি হয়। এমন অবস্থায় তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। সোমবার উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, এই সময়ে আপনাদের যুক্তিসংগত পছন্দের জন্য শুধু একজনই আছেন। আর তিনি হলেন কমলা হ্যারিস।

কমলার ভূয়সী প্রশংসা করে বাইডেন আরও বলেন, আমি তাকে চিনি, তার ওপর ভরসাও করি। কারণ কমলা হ্যারিসের মেরুদ- লোহার মতো শক্ত, অবস্থান বোঝার ক্ষমতা সাধুর মতো। নারী যা করেন, জেনেবুঝেই করেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আপনারা যদি কমলা হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন, তবে তা হবে যাবৎকালে আপনাদের নেওয়া সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, কমলা হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ডেমোক্র্যাটদের জন্য রিপাবলিকান ট্রাম্পকে পরাজিত করার সুযোগ ক্রমাগত বাড়ছে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা একেবারেই অনিশ্চিত। পিটসবার্গে বাইডেন কমলা কোলাকুলি করমর্দন করেন। এর পর বাইডেনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন কমলা। কমলা বলেন, জো বাইডেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের দেখা সবচেয়ে ভাল প্রেসিডেন্টদের একজন এবং তিনি আন্তরিকতা থেকেই এটা করেন। সত্যি কথা বলতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে শ্রমিক সংঘবান্ধব হওয়ায় আমরা গর্ববোধ করি এবং নিয়ে আমি জো অনেক কথা বলেছি। তখন সমর্থকদের ভিড় থেকে একজন চিৎকার করে বলে ওঠেন, উই আর নট গোয়িং ব্যাক! এটি কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহৃত অন্যতম একটি স্লোগান।

দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে কমলা হ্যারিস সাবেক প্রেসিডেন্ট  ডোনাল্ড ট্রাম্প যুগের বিভাজনমূলক বাগাড়ম্বরেরপাতা উল্টানোরঅঙ্গীকার করেন। আমেরিকার জন্য এখন দিনবদলের সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের নাগরিকরা নতুন পথে যাত্রা শুরু করতে প্রস্তুত। তাদের এখন পাতা উল্টানোর সময়।

সিএনএনের সঞ্চালক ডানা বাশকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হ্যারিসের রানিং মেট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম ওয়ালজও ছিলেন। সরকার, রাজনীতি থেকে শুরু করে অর্থনীতি, সীমান্তনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, জ্বালানিনীতি, অভিবাসন জলবায়ুসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে আসে সাক্ষাৎকারে। কমলা হ্যারিস গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেন। সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে কথা বলতে গিয়ে হ্যারিস জানান, অবৈধ অভিবাসনের প্রসঙ্গে তিনি কঠোর হবেন এবং তেল-গ্যাস উত্তোলনের জন্য বিতর্কিতফ্র্যাকিংপদ্ধতিতে তার সমর্থন থাকবে। তিনি জানান, তার মূল্যবোধ পরিবর্তন হয়নি। বিষয়ে হ্যারিস বলেন, আমি মনে করি আমার নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং সিদ্ধান্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আমার মূল্যবোধ পরিবর্তন হয়নি। সময়ই ট্রাম্প যুগের বিভাজনের পাতা উল্টানোর অঙ্গীকার করেন হ্যারিস। তিনি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকান হিসেবে সত্যিই আমাদের জাতিকে বিভক্ত করেছেন। আমি মনে করি মার্কিন নাগরিকরা একটি কঠিন সময় পেরিয়ে এখন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

ওদিকে, ‘বিরক্তিকর!!’ কেবলমাত্র এই একটা শব্দ উচ্চারণ করেই  ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে হ্যারিসের সাক্ষাৎকার নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, গণমাধ্যম এবং অন্যান্যদের শত্রু হিসাবে দেখা এবং নেতিবাচকতার যে আবহ তৈরি করেছিলেন, সেই সাবেক প্রেসিডেন্ট আমলের পাতা উল্টোনো হিসাবেই এবারের নির্বাচনে হ্যারিসের প্রচারাভিযানকে দেখছে ডেমোক্র্যাটরা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিস তার লড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে সাক্ষাৎকারে বলেন, তার বিশ্বাস, জাতি-লিঙ্গ নির্বিশেষে সব আমেরিকানের জন্য মুহূর্তে দিনবদলের কাজটি করার সেরা ব্যক্তি তিনি। নির্বাচিত হলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম কাজ কী হবে তা জানতে চাওয়া হলে হ্যারিস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী করার ওপর জোর দেবেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের একটি বিষয় হবে মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে শক্তিশালী করা।

হ্যারিস আগেই ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে সব আমেরিকানের প্রেসিডেন্ট হবেন। সেই প্রসঙ্গেই সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে তার মন্ত্রিসভায় একজন রিপাবলিকানকে রাখবেন। কমলা বলেন, আমি আমার কর্মজীবন কাটিয়েছি ভিন্ন মতামতকে আমন্ত্রণ জানিয়ে। আমি মনে করি, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ভিন্নমতের কারও মতামতও জরুরি। এর আগে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস জনপ্রিয়তায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফের পেছনে ফেলেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইপসোসের জরিপে বিষয়টি উঠে এসেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, কমলা ট্রাম্পের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন। ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা যেখানে ৪১ শতাংশ, সেখানে কমলার জনপ্রিয়তা ৪৫ শতাংশ।

তবে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে কমলার চেয়ে পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে জো বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে নতুন উৎসাহ তৈরি হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতার হিসাব-নিকাশও পাল্টে যাচ্ছে। বাইডেনের চেয়ে যেখানে ট্রাম্প এগিয়ে ছিলেন, সেখানে কমলা এখন ট্রাম্পকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে ডেমোক্রেটিক দলের জাতীয় সম্মেলনে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করেন ৫৯ বছর বয়সী কমলা। এর পর থেকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও জোরালো হয়েছে।

 

×