.
তীব্র গরমে ত্বকের যত্নে সানস্ক্রিনের গুরুত্ব অনেক। ঘর থেকে বেরোনোর ৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগানো, লুজ পাউডার দিয়ে সেট করা, প্রতি দুই-তিন ঘণ্টায় পুনরায় প্রয়োগ এবং নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী পণ্য নির্বাচন করা জরুরি।
অতিরিক্ত রোদের ফলে ত্বকে রোদে পোড়া ভাব, ঘামাচি, র্যাশের মতো সমস্যা দেখা দেয়। একই সঙ্গে, ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়া ও স্কিন ক্যান্সারের মতো দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও পড়ে। এই তীব্র রোদে ত্বককে এ ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন সানস্ক্রিন। তবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা নিয়ে অনেকের মনেই দোটানা রয়েছে। এই গরমে সানস্ক্রিন ব্যবহারের সঠিক নিয়মগুলো জেনে নেওয়া যাক।
১. বাইরে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে
ঘর থেকে বের হওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে মুখ ও গলার ত্বকে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন। সানস্ক্রিন লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে ঘর থেকে বের হয়ে গেলে ত্বক সানস্ক্রিনের গুণাগুণ শোষণ করার আগেই তা ঘেমে মুছে যায়। অনেক সময় সানস্ক্রিন মুখে সাদা হয়ে থাকে (হোয়াইট কাস্ট)। বের হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বকে তা ভালোভাবে বসে যায় এবং হোয়াইট কাস্ট কমে আসে।
২. লুজ পাউডার দিয়ে সানস্ক্রিন সেট করে নিন
যাদের অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা আছে কিংবা ত্বক তৈলাক্ত। তারা সানস্ক্রিন ব্যবহারের পর সামান্য লুজ পাউডার দিয়ে তা সেট করে নিন। অনেকে গরমেও মুখে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। অনেক সময় এ জন্যও অতিরিক্ত ঘাম হয়। এ ক্ষেত্রে, ঘরের বাইরে যাওয়ার সময় ভারি ময়েশ্চারাইজার এড়িয়ে চলুন। ত্বক শুষ্ক অনুভূত হলে হালকা কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। ময়েশ্চারাইজার ত্বকে ভালোভাবে মিশে যাওয়ার পর সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করুন। ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজিং সানস্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন।
৩. কয়েক ঘণ্টা পর পর পুনরায় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন অনেকেই ভাবেন যে ৫০+ এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে তা পুনরায় ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। ৩০+ এসপিএফ ত্বককে সুর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ৯৭ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। অপরদিকে ৫০+ এসপিএফ দেয় ৯৮ শতাংশ সুরক্ষা। যা শুধু এক শতাংশ বেশি। এ ছাড়া, কতক্ষণ পর সানস্ক্রিন পুনরায় প্রয়োগ করতে হবে, তা নির্ভর করে আপনি কতটা সময় সরাসরি সূর্যের আলোতে আছেন, তার ওপর। তাই এসপিএফ যতই হোক না কেন অন্তত দুই-তিন ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন পুনরায় ব্যবহার করা উচিত।
৪. ত্বকের রং যা-ই হোক, সানস্ক্রিন এড়ানো যাবে না
শ্যামবর্ণ ত্বক বলে সানস্ক্রিন এড়িয়ে যাবেন না। ফর্সা ত্বকের তুলনায় শ্যামলা ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বেশি থাকে বলে অনেকে মনে করেন এটি সূর্য্যরে ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেবে। কিন্তু ত্বকে থাকা মেলানিন সম্পূর্ণভাবে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দিতে পারে না। তাই সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচতে সবারই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।
৫. নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন নির্বাচন করুন বর্তমানে বাজারে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হাজারো সানস্ক্রিন রয়েছে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা ফর্মুলায় এই সানস্ক্রিনগুলো তৈরি করা হয়। এর মধ্যে থেকে যাঁর যাঁর ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন বেছে নেওয়া উচিত। ত্বক অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হলে কিংবা নিজে ত্বকের ধরন যাচাই করতে না পারলে, ডার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হোন। চাইলে মেডিকেটেড সানস্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন। সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেও সূর্যের আলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। বাইরে গেলে ছাতা নিয়ে যান, স্কার্ফ ব্যবহার করুন। এতে ত্বক সরাসরি সূর্যের সংস্পর্শে আসবে না। এ ছাড়াও, গরমে ত্বক এবং শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন ও মৌসুমি ফল খান।
ফ্যাশন ডেস্ক