.
ভবন নির্মাণের সময় চারপাশে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ছাড়ার নিয়ম থাকলেও সেটি মানা হয়নি। সামনের সড়ক ঘেঁষে বিল্ডিংটি নির্মাণ করা হয়েছে। নকশায় ৬ তলার অনুমোদন থাকলেও সাত তলার নির্মাণ চলছে। ইতোমধ্যে অর্ধেক নির্মাণ সম্পন্নও হয়েছে। যশোর শহরের পোস্ট অফিস পাড়ার মুন্সী মিনহাজউদ্দীন সড়কের ওই ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের ব্যাপারে দুই দফা পৌরসভায় অভিযোগ করা হলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ভবনের পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কলেজে শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান পৌরসভায় দুই দফা অভিযোগ করেছেন। কেশবপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামানের দাবি, নিয়ম লঙ্ঘন করে নির্মিত ভবনটির মালিক মাহফুজ্জামান মুক্তি।
তিনি যশোর সদরের কচুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা। ২০২২ সালের মাঝামাঝি তিনি ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শুরু থেকেই নিয়ম লঙ্ঘন করলেও তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি যশোর পৌর কর্তৃপক্ষ। যশোর পৌরসভার নকশাকার সুমন আহমেদ জানান, পোস্ট অফিস পাড়ার মুন্সী মিনহাজউদ্দীন সড়কে মাহফুজ্জামান মুক্তি ৬ তলা বাড়ি নির্মাণের জন্য প্লান পাস করিয়েছেন। অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী তিনি ৬ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করতে পারবেন।
পৌরসভায় দুই দফায় করা লিখিত অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেছেন, মাহফুজ্জামান মুক্তি ভবন নির্মাণের সময় চারপাশে একটুও জমি ছাড়েনি। কোনো রকম নিয়ম না মেনে তিনি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এতে তিনি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভুক্তভোগী মো. মনিরুজ্জামানের দাবি, পৌরসভায় অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। নিয়ম না মেনে পাশের জমির মালিক ভবন নির্মাণ চালিয়ে গেছেন। তিনি জানান, ২০২২ সালের ২৭ জুন পৌরসভায় তিনি একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর চলতি বছরের ৩০ জুন আবারও আরেকটি অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। মো. মনিরুজ্জামান বলেন, যখন ওই বাড়িটির পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় তখন আমার বাড়িটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝাঁকুনিতে আমার বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কির পাইপ খুলে ভেঙে গিয়েছিল। আমার বাড়িতে অনেক ফাঁটল সৃষ্টি হয় তখন। এতে আমার অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
চারপাশ জাল দিয়ে ঢেকে ও নিরাপত্তা-মাচা তৈরি করে ভবন নির্মাণের বিধানও থাকলেও কখনো সেটি করা হয়নি। ভবনের কাজ চলাকালে নির্মাণ সামগ্রী অনেকবার আমার বাড়ির মধ্যে পড়েছে। যশোর পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে চারপাশে জায়গা ছাড়ার ক্ষেত্রে পৌরসভার আইনে সুস্পষ্ট কিছু বলা নেই। এক্ষেত্রে ন্যশানাল বিল্ডিং কোড- ১৯৯৬ এ বর্ণিত বিধি বিধান প্রযোজ্য।
পৌরসভাটির শহর পরিকল্পনাবিদ সুুলতানা সাজিয়া জানান, নকশার অনুমোদন বিহীন ও নকশাবর্হিভূত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা ভবন চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত চলছে। বিধি মোতাবেক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পোস্ট অফিস পাড়ার ওই বাড়িটির ব্যাপারে করা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম শরীফ হাসান জানান, অনুমোদিত নকশার বাইরে যেসব ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়েছে; সেসব ভবনের মালিকদের তাদের লোড ক্যাপাসিটি ক্যালকুলেশন করে পৌরসভায় অবহিত করতে বলা হয়েছে।