ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

নদী বা খালে চলবে না, বসার জন্য তৈরি

জার্মানিতে যাচ্ছে বরিশালের কাঠের নৌকা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ২৬ জুলাই ২০২৪

জার্মানিতে যাচ্ছে  বরিশালের  কাঠের নৌকা

প্রথমবারের মতো জার্মানিতে পাঠানোর জন্য বরিশালে তৈরি করা হচ্ছে শৌখিন কাঠের নৌকা

নৌকার জন্য বিখ্যাত বরিশাল বিভাগের পিরোজপুরের নেছারাবাদের আটঘর। সেই আটঘরে তৈরি কাঠের নৌকা এবার সর্ব প্রথম যাবে জার্মানিতে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে নৌকাগুলো হস্তান্তর করা হবে। প্রথম চালানে ১০টি নৌকা যাবে জার্মানিতে।

নেছারাবাদ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, আটঘর বাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা নৌকা তৈরির মিস্ত্রি আজিজুল হক নৌকা তৈরির অর্ডার পেয়েছেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কাঠের নৌকা তৈরিও করেছেন। বাকিগুলোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। রাকিব হোসেন আরও বলেন, দুই মাস আগে জার্মানির নাগরিক এক পর্যটক এসেছিলেন আমাদের এলাকা ঘুরে দেখতে। তিনি আটঘরের কাঠের নৌকা দেখে পছন্দ করেন এবং আজিজুল হকের কাছ থেকে নৌকা তৈরি করে জার্মানিতে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

নৌকার কারিগর আজিজুল হক বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে ডিঙ্গি টালাই নৌকা তৈরি করে আসছি। কয়েকদিন আগে জার্মানির এক লোক এসে ১০টি নৌকার অর্ডার দিয়েছেন। এটাই আমার প্রথম বিদেশে অর্ডার। এর আগে আমাদের এলাকায় নৌকা তৈরির বিদেশ থেকে অর্ডার কেউ পায়নি। প্রতিটি নৌকা তৈরিতে দশ হাজার টাকা চুক্তি হয়েছে। জার্মান নাগরিক অগ্রিম টাকাও দিয়ে গেছেন। মেহগনি গাছ দিয়ে তার দেখানো ডিজাইন অনুসারে নৌকা তৈরি করা হচ্ছে। জার্মান নাগরিক যা বুঝিয়েছেন এই নৌকা নিয়ে সেখানকার মার্কেটে দেখাবেন। বাজারে চললে আরও নৌকা তৈরি করে নেবেন। তবে নৌকাগুলো জার্মানির কোনো নদী বা খালে চলবে না। এসব দিয়ে বসার জন্য শৌখিন আসন বানানো হবে। আজিজুল হক আরও বলেন, প্রথম দফায় ১০টি নৌকা যাবে জার্মানিতে। এরপর আরও ২০টি নৌকা বানাতে হবে ভিন্ন ডিজাইনে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জার্মান নাগরিকের পক্ষে নৌকা তৈরির কাজ তদারকি করা ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে। জন্য আমরা বিস্তারিত জানাতে চাচ্ছি না। তবে সবগুলো নৌকা পুরোপুরি তৈরির পর বিস্তারিত জানানো হবে।

নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন কারণে নেছারাবাদ উপজেলা সারাদেশেই সমাদৃত। বিশেষ করে আটঘরের নৌকার হাট খুব বিখ্যাত। সেখান থেকে জার্মানিতে নৌকা যাচ্ছে সংবাদটি অত্যন্ত আনন্দের। এতে করে বাংলাদেশের পণ্যের বিশ্ববাজার যেমন তৈরি হবে, তেমনি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দুয়ার খুলবে। ইউএনও আরও বলেন, আমি ওই কারিগরের সঙ্গে কথা বলব। তার যে কোনো সহায়তার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই, আমাদের ঐতিহ্যবাহী নৌকা যেন বিশ্বমানের হতে পারে।

×