ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

ময়লাবাহী গাড়ি পুড়েছে ৩২টি, বাসাবাড়ি-সড়কে ছিল বর্জ্যরে স্তূপ

​​​​​​​স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ২৬ জুলাই ২০২৪

ময়লাবাহী গাড়ি পুড়েছে ৩২টি, বাসাবাড়ি-সড়কে ছিল বর্জ্যরে স্তূপ

.

বাসাবাড়ি, সড়কে পড়েছিল গৃহস্থালি বর্জ্যরে স্তূপ। ঢাকা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ বর্জ্য সংগ্রহের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা গৃহস্থালি বর্জ্য সংগ্রহে আসছিলেন না। ফলে প্রতিটি বাসা-বাড়িতে জমে স্তূপ হয়ে গিয়েছিল বর্জ্য, সেইসঙ্গে অনেকে সেই বর্জ্য ফেলে গেছে সড়কে। গৃহস্থালি বর্জ্যরে পাশাপাশি হোটেল, রেস্টুরেন্ট দোকানের বর্জ্যরে কারণেও সড়ক এবং অলিগলিতে সৃষ্টি হয়েছিল বর্জ্যরে স্তূপ।

মূলত কোটাবিরোধী আন্দোলন পরবর্তী সহিংসতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৯টি ময়লাবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ছাড়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেরও তিনটি ময়লাবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩২টি ময়লাবাহী গাড়ি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে গত শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত গৃহস্থালি বর্জ্যসহ অন্যান্য বর্জ্যে আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয় বাসা-বাড়ি, সড়ক অলিগলি। বর্তমানে ধাপে ধাপে ময়লা বোঝাই গাড়িগুলো অতিরিক্ত ট্রিপের মাধ্যমে বর্জ্য অপসরণের কাজ করছে।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা এবং তলা বাড়ির মালিক রুহুল আমিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে গৃহস্থালি বর্জ্য সংগ্রহ করতে আসেনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। ফলে প্রতিটি ফ্ল্যাটে বর্জ্যরে স্তূপে রূপ নেয়। পরে আমার বাসার নিচে রাখা দুটি ড্রামে সেই ময়লাগুলো রাখা হয়। এতে করে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের অনেক বাড়ির ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় স্তূপ করে রাখতে দেখেছি, দুর্গন্ধে আশপাশে টেকা যায়নি। এই অবস্থা ছিল পুরো ঢাকা শহরেই, বিশেষ করে ঢাকা উত্তর সিটি এলাকায় আরও বেশি ছিল।

রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা মাইদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন জমাকৃত ময়লার দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছিল না। গত মঙ্গলবার আমাদের এলাকার কিছু কিছু ময়লা নিয়ে গেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

গত কয়েকদিনের বর্জ্য অপসারণে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ডিএনসিসির বর্জ্যবাহী ড্রাম ট্রাক চালক এরশাদ আলী বলেন, আমাদের অনেক বর্জ্যবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে গত কয়েকদিন আমাদের বর্জ্য পরিবহন করা কাজে বাধা সৃষ্টি হয়েছিল। বাসা-বাড়ি থেকে ময়লাও বর্জ্য অপসরণকারীরাও সংগ্রহ করতে পারেনি ঠিকমতো। সব মিলিয়ে বাসা-বাড়ি, সড়ক, অলিগলি ময়লার স্তূপ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের কর্মীরা এগুলো এনে এসটিএস জমা করেছে। পরে নন স্টপভাবে কাজ করে আমরা ময়লা অপসারণ করেছি। এখনো এসটিএসএ প্রচুর পরিমাণে আবর্জনা রয়ে গেছে, যেগুলো অপসারণের কাজ চলছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাদেক আলী বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত অনেক এলাকার বাসা-বাড়ির বর্জ্য অপসারণ করতে পারিনি। কারণ এসটিএসগুলো ময়লা আবর্জনায় ভরা ছিল। মূলত সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে সিংহভাগ আবর্জনা এসটিএস থেকে টেনে ভাগাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবহন বিভাগের বরাত দিয়ে সংস্থাটির মুখপাত্র আবু নাছের বলেন, আন্দোলনে কয়েকদিনে আমাদের বর্জ্যবাহী তিনটি ড্রাম ট্রাক পুড়িয়ে দিয়েছে। সহিংসতার কারণে রাস্তাঘাট ময়লাবাহী গাড়ি চলাচলেরও পরিস্থিতি ছিল না। সবমিলিয়ে আমাদের কর্মীরা গত কয়েকদিন ঠিকমতো বর্জ্য সংগ্রহ করতে পারেনি।

পরবর্তী সময়ে সেগুলো সব এসটিএসসে এনে জমা করে হয়েছে। এসটিএসগুলো বর্জ্যে ভরপুর ছিল। গত সোমবার এবং মঙ্গলবার এই দুই দিনে আমরা এসটিএস থেকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করে ভাগাড়ে নিয়েছি। এখনও আমাদের কাজ চলছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবহন বিভাগের তথ্য জানিয়ে সংস্থাটির মুখপাত্র মকবুল হোসাইন বলেন, আন্দোলনকারীদের সহিংসতায় ডিএনসিসির ২৯টি ময়লাবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে বর্জ্য অপসারণে বিলম্ব হয়েছে। মূলত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল- এর আওতায় মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় আমাদের ময়লাবাহী গাড়ি ডিপোতে রাখা ছিল। মূলত সেখানেই আমাদের ময়লাবাহী ২৯টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। যার প্রভাব পড়েছে আমাদের বর্জ্য অপসারণ কাজে।

×