ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

টক-মিষ্টি লটকন

ওয়াসিম আকরাম

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ১৪ জুলাই ২০২৪

টক-মিষ্টি লটকন

.

লটকন অতি জনপ্রিয় একটি টক মিষ্টি ফল। নরসিংদী মানেই সবজি আর লটকনের রাজ্য। এক সময় সাগর কলার জন্য বিখ্যাত নরসিংদী এখন লটকনের নামেও পরিচিত। গাছটি দক্ষিণ এশিয়ার বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া থাইল্যান্ডে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে থাকে। লটকন বা নটকোর বৈজ্ঞানিক নাম Baccaurea motleyana।

গত মাসের ২৫ তারিখ এক চাচাতো ভাই আর এক মামাকে নিয়ে গিয়েছিলাম লটকন বাগানে। বর্তমান সময়ে নরসিংদীর প্রায় প্রতিটি উপজেলায় কম-বেশি লটকন জন্মালেও জেলার শিবপুর, বেলাব এবং রায়পুরা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকন জন্মায়। এক সময় স্থানীয় লোকজন জংলি ফল বলে ডাকতো অত্যন্ত পুষ্টিকর ওষুধি গুণে ভরপুর লটকনকে।

শুরুর দিকে বন-বাদাড় আর ঝোপ-ঝাড়ে জন্ম নেওয়া ফলের তেমন কদর না থাকলেও, সময়ের ব্যবধানে এর কদর বেড়েছে বহুগুণ। যার কারণে বর্তমানে ফলটি দেশের চাহিদা মিটিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। নরসিংদীতে লটকন চাষের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, প্রায় ১২০ বছর পূর্বে শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের আজকিতলা গ্রামে লটকন চাষের গোড়াপত্তন করেন মরহুম হাজী আবদুল আজিজ। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পরে রায়পুরা এবং বেলাব উপজেলার লাল মাটির এলাকায়। লটকনের সৌন্দর্য আসলেই মনোমুগ্ধকর। যেভাবে গাছের নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত ফলন আসে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। আর লটকন গাছের সাইজ থেকে ১২ মিটার হয়ে থাকে। আর প্রতিটি  লটকনের সাইজ সাধারণত ছোট যা অনেকটা দেশি লাল আলুর মতো বা কিছুটা বড়। নরসিংদির এক বাগান মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটা গাছে আনুমানিক থেকে ১০ মণ লটকন উৎপাদন হয়ে থাকে যা আনুমানিক ১২০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। বর্তমানে সিলেট, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাজীপুর জেলাগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে লটকনের চাষ হচ্ছে। আর লটকন চাষাবাদ একদম সহজ এবং বলা যায় খুব অল্প যতেœ গাছ বেড়ে ওঠে।

লটকনের উপকারিতা : টক-মিষ্টি রসালো ফলটি খেতে যেমন মুখরোচক, তেমনি এর উপকারিতাও অনেক। ১০০ গ্রাম লটকনে পাওয়া যায় ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি। একই পরিমাণ লটকনে ভিটামিন সি রয়েছে ১৭৮ মিলিগ্রাম, শর্করা ১৩৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৭৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি- ১৪.০৪ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন বি- শূন্য দশমিক ২০ মিলিগ্রাম। তবে ডায়াবেটিস রোগী হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে

×