ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০২ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নারীর দ্বান্দ্বিক মনোজগতের গল্পময় ‘পারো’ নাটকের মঞ্চায়ন

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৯ জুন ২০২৪

নারীর দ্বান্দ্বিক মনোজগতের গল্পময় ‘পারো’ নাটকের মঞ্চায়ন

শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ ‘পারো’ নাটকের দৃশ্যে সুষমা সরকার

ঘটনাক্রমে একাকী হওয়া এক নারীর দ্বান্দ্বিক জীবনের গল্পময় নাটক ‘পারো’। পারমিতা নামে এই নারীর মনোজগতের  দ্বৈত সত্তা উপস্থাপিত হয়েছে প্রযোজনাটির ঘটনাপ্রবাহে। একদিকে পারমিতা অবতীর্ণ হয় প্রতিবাদী ভূমিকায়, অন্যদিকে তার মনের ভেতর জেগে ওঠে আপোসকামিতা। একই সঙ্গে বিপরীতমুখী দুই সত্তার আবির্ভাবে মানসিক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় পারমিতার। তৈরি হয় নিজের সঙ্গেই নিজের বিরোধ। জীবনে নেমে আসে টানাপোড়েন।

নাট্যদল দেশ নাটক প্রযোজিত প্রযোজনাটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন মাসুম রেজা। নাটকের পারমিতা চরিত্রে একক অভিনয় করেছেন সুষমা সরকার। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও হলে প্রযোজনাটির চতুর্থ মঞ্চায়ন হয়। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় নাটকটির একটানা চারটি প্রদর্শনী হবে।         
প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক মাসুম রেজা বলেন, আমার মনে হয় মানুষের ভেতরে প্রচলিত বিশ্বাসই তাকে পেছনে টেনে ধরে। পরবর্তীতে ওই বিশ্বাসই তার মুক্তির প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। এই বোধটাকেই আমি পারো নাটকে তুলে ধরেছি। 
নাটকটিতে একক অভিনয় প্রসঙ্গে অভিনেত্রী সুষমা সরকার বলেন, জীবনে কত কিছুই প্রথম হয়,  সেই প্রথম নিয়ে অন্য রকম এক অনুভূতি হয় আমাদের । তেমনি আমার অভিনয় জীবনে প্রথমবারের মতো একক অভিনয় করছি মঞ্চে। যদিও থিয়েটারে একক বলে কিছু নেই। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই একটা নাটক মঞ্চে মঞ্চায়িত হয়। তবুও বলব অভিনয় জীবনের এ এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।
নাটকটির কারিগরি মঞ্চায়ন হবে ২১ ও ২২ জানুয়ারি। এর বিষয়বস্তুু নিয়ে মাসুম  রেজা জানান, এক নারীর সংগ্রামী জীবনের কাহিনী  লেখা হয়েছে নাটকটি।  যে নারী তার জীবনের প্রতিবন্ধকতাগুলো  পেরোতে চায়, কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার ভেতরের সত্তা। তার মূল দ্বন্দ্বটা নিজের সঙ্গে নিজেরই।
নাটকের কাহিনীতে দেখা যায়, এক সময় রাফি নামের একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিল পারমিতা।  সুন্দর একটি জীবনের প্রত্যাশায় ঘর বেঁধেছিল তার সঙ্গে। কিন্তু একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাফির সঙ্গে বিরোধ হয় পারমিতার। সেই বিরোধের সূত্র ছিল, পারমিতার অফিসের বস একদিন তার কাঁধের উল্কিতে চুমু খাওয়ার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করে। এতে  সে ক্ষুব্ধ হয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বামী রাফিকে ওই জন্য ব্যবস্থা নিতে বলে। কিন্তু রাফি সে কথায় কর্ণপাত না করে নির্বিকার থাকে।

চাকরি করতে গেলে এমন ধরনের ঘটনা একটুআধটু হতেই পারে বলে পারমিতাকে সান্ত¡না দেয়।  এ ঘটনার একপর্যায়ে পারমিতার  ভেতরে আরেক সত্তা তাকে আপোস করতে বলে। পারমিতা তার এই অন্তঃপুরের অন্য সত্তাকে সহ্য করতে পারে না। ফলশ্রুতিতে নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা সেই ভিন্ন সত্তাকে গলা টিপে হত্যা করে পারমিতা।

×