শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনীর ছবি দেখছেন অতিথিরা
রং আর রেখার আঁচড়ে খুদে শিল্পীরা সাজিয়েছেন চিত্রপট। সেসব ক্যানভাসে উদ্ভাসিত হয়েছে বহুমাত্রিক বিষয়। শিশু চিত্রকরদের মধ্যে কেউ এঁকেছেন ভাষা আন্দোলনের দৃশ্যপট। কারো চিত্রায়নে মূর্ত হয়েছে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায়। আবহমান গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবি ধরা দিয়েছে কারো ক্যানভাসে। শুধু কি তাই? রয়েছে ষড়ঋতুর বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবিময় ঋতু বৈচিত্র্যের দৃশ্যকল্প। রয়েছে স্বদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা চিত্র।
বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি উঠে এসেছে কোনো চিত্রপটে। অসাম্প্রদায়িক উৎসবের সূত্র ধরে চিত্রিত হয়েছে নববর্ষ আবাহনে মঙ্গল শোভাযাত্রার দৃশ্যচিত্র। এছাড়াও ছোটদের আঁকা ছবিতে রয়েছে সবুজায়ন থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ। খুদে চিত্রকরদের চিত্রিত এমন বৈচিত্র্যময় বিষয়নির্ভর চিত্রকর্মসমূহের দেখা বাংলাদেশের শিশু একাডেমির শেখ রাসেল শিশু আর্ট গ্যালারিতে। এখানে চলছে শিশুদের শত ছবিতে সজ্জিত জাতীয় শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশুদের আঁকা ছবি নিয়ে সপ্তাহব্যাপী এই দ্বিতীয় জাতীয় শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনীর সূচনা। প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক শিল্পী রফিকুন নবী ও অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক আলভী।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ভালো মানুষ হওয়ার জন্য ছবি আঁকা, গান শেখা, কবিতা আবৃত্তির বিকল্প নেই। এই বিষয়গুলো শিশুদের মানবিক বিকাশের পাশাপাশি চিন্তাশক্তিকে বিকশিত করে। বক্তব্যের মাঝে প্রতিমন্ত্রী শিশুদেরকে চায়নার রূপকথা থেকে মালিহান-এর গল্প বলে শোনান। তিনি শিশুদের উদ্দেশে আরও বলেন, কখনো প্রতিযোগিতার জন্য কিছু করবে না। প্রতিযোগিতার উদ্দেশে কিছু শিখলে প্রতিভার বিকাশ আটকে যাবে।
আনজীর লিটন বলেন, একটা সময় আমরা বিয়ে বা জন্মদিনে বই উপহার দিতাম। আমি আশা করব, এর পর উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের মধ্যে নতুন ধারা চালু হবে। সেই ট্রেন্ড অনুযায়ী বিয়ে বা জন্মদিনে আপনার ছোট শিশুর আঁকা ছবি উপহার হিসেবে প্রদান করা হবে।
প্রসঙ্গত, সারাদেশ থেকে ৪ হাজার ৫৭৬ শিশুর আঁকা ছবি সংগ্রহ করে বাছাই করে সেরা ১০০টি ছবি নিয়ে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সারাদেশের ৭টি বিভাগে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেসব প্রদর্শনী থেকে বিক্রি হওয়া ছবির মূল্য বিজয়ী শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সপ্তাহব্যাপী এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত।