ছায়ানট মিলনায়তনে নৃত্য উৎসবে শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনা
প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ছায়ানট আয়োজন করেছে নৃত্য উৎসব। শনিবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। নানান ধারার নাচের এ আয়োজনটি ছিল অনবদ্য। একক, দলীয়, মণিপুরী, ভরতনাট্যম, ওড়িশি, গৌড়ীয় ও কত্থক নৃত্যে দর্শক মুগ্ধ হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত কথন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, প্রকৃত শিক্ষার জন্য সংস্কৃতির যোগ জরুরি। সংগীতের, নৃত্যের চর্চা যত প্রসার পাবে সমাজ তত অগ্রসর হবে। নৃত্য দেহের সংগীত মন্তব্য করে বলেন, চোখ, হাত, পা, সারা দেহ সঞ্চালনের শৈল্পিক রূপটি নৃত্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়। আদিকাল থেকে যে শিল্পকলাটি লক্ষ্য করা গেছে, সেটি নৃত্যশৈলী। তাই এ শরীরী সঞ্চালনের মধ্য দিয়ে কোনো ঘটনা ও উপলব্ধির প্রকাশ নৃত্যশিল্পীরা করে থাকেন। মুক্তিযুদ্ধের পর কয়েক দশক ধরে নৃত্য চর্চার বিকাশ ও বিস্তার এ ভূখণ্ডে ঘটতে দেখা যায়। ছায়ানট নৃত্যের ধ্রæপদি রূপের চর্চা করে আসছে। এ নৃত্যের যে ধারা, তার প্রকাশ এ উৎসবের মধ্য দিয়ে দেখা যাবে।
ছায়ানটের শিল্পীদের পরিবেশনায় মণিপুরী নৃত্য ‘মন্দিরা নর্তন’ দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এর পর একে একে মণিপুরী নৃত্য পরিবেশন করে ঢাকার শিল্পী মনোমি তানজানা অর্থী। তার নাচের শিরোনাম ছিল ‘বসন্ত প্রবন্ধ’। ঢাকার ধৃতি নর্তনালয়ের দলীয় পরিবেশনায় ছিল ‘রাধানর্তন’ মণিপুরী নৃত্য। সুইটি দাশ একক পরিবেশন করেন ‘কালিয়দমন’। সিলেটের শিল্পী সান্ত¦না দেবীর পরিবেশনায় ছিল ‘হারিরিহমুগ্ধব’। মণিপুরী নৃত্যের শেষ শিল্পী ছিলেন সিলেটের অর্ণব শর্মা। তার পরিবেশনায় ছিল ‘পুংচলম’।
মণিপুরী নৃত্যের পর শুরু হয় ভরতনাট্যম। এতে ছায়ানটের শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনায় ছিল ‘দেশ বন্দনা ও আলারিপু’। এর পর ঢাকার শিল্পী অমিত চৌধুরী পরিবেশন করেন ‘শিবপদম’। নৃত্যাবৃত্তির দলীয় পরিবেশনায় ছিল ‘পদম’। শিল্পী জুয়েইরিয়াহ মৌলি পরিবেশন করেন ‘পঞ্চরাগ তিল্লানা’।
ঢাকার নৃত্যছন্দের দলীয় পরিবেশনা ‘হংসধ্বনি পল্লবী’ দিয়ে শুরু হয় ওড়িশি নৃত্য। এতে মো. জসিম উদ্দিন ও আফিয়া ইবনাত হালিম পরিবেশন করেন ‘মঙ্গলাচরণ’ এবং চট্টগ্রামের উষি অ্যান্ড টেগর ড্যান্স মুভমেন্ট সেন্টারের শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘মোক্ষ্য’। পরে ঢাকার র্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিসের পরিবেশনায় ছিল গৌড়ীয় নৃত্য ‘শিবনামাবলি’।
উৎসবের শেষ পর্বে ছিল কত্থক নৃত্য। এতে ‘ পমলবন্ধন তাল ধামার’ পরিবেশন করেন শিল্পী এস এম হাসান ইশতিয়াক ইমন। স্নাতা শাহরিনের পরিবেশনায় ছিল ঠুমরী (অভিনয়ভিত্তিক)। কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়ের দলীয় পরিবেশনায় ছিল ‘ছন্দমালিকা’। শিল্পী মুনমুন আহমেদের একক পরিবেশনায় ছিল ‘বসন্ত’। কত্থক নৃত্য পর্বের শেষ পরিবেশনা ছিল ঢাকার নৃত্যাঞ্চলের। তারা দলীয়ভাবে পরিবেশন করে ‘তারানা’। সবশেষে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ছায়ানট আয়োজিত নৃত্য উৎসব।