রাশিয়ান দম্পতি
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের কোলাহলপূর্ণ স্যানাটোরিও ফিনোচিত্তো হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে লাইনে দাঁড়িয়ে মস্কোর জুয়েলারি ডিজাইনার পোলিনা চেরেপোভিটস্কায়া হঠাৎ রাশিয়ান ভাষার পরিচিত শব্দ শুনতে পান।
তিনি জানান, আটজন গর্ভবতী রাশিয়ান নারী আমার সামনে অপেক্ষা করছিলেন। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম।
তিনি গত ডিসেম্বরে সন্তান প্রসব করেছিলেন। গেল বছর সন্তান প্রসবের জন্য আর্জেন্টিনার রাজধানীতে ভ্রমণ করেছিলেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে বার্থ ট্যুরিজম বাড়ছে। সন্তানের জন্ম দেওয়া এবং নাগরিকত্ব পাওয়ার উদ্দেশ্যেই আর্জেন্টিনায় যাচ্ছেন রাশিয়ানরা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই আমি জানতে পেরেছিলাম আমি গর্ভবতী ছিলাম। চেরেপোভিটস্কায়া তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আমরা দেখেছি যে আমাদের চারপাশে সীমানা দ্রুত বন্ধ হতে শুরু করেছে, আমরা জানতাম যে, আমাদের এমন একটি জায়গা খুঁজে বের করতে হবে যেখানে আমরা সহজেই ভ্রমণ করতে পারি। একটি আর্জেন্টিনার পাসপোর্ট আমার সন্তানের জন্য অনেক দরজা খুলে দেবে।
যদিও বার্থ ট্যুরিজমের ধারণাটি নতুন নয়। যুদ্ধের ফলে মস্কো ও আর্জেন্টিনার মধ্যে বিচ্ছিন্নতার সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে রাশিয়ানদের ভিসার প্রয়োজন হয় না, তাদের সন্তানদের দ্বিতীয় নাগরিকত্বের সুযোগ-সুবিধা দিতেই আর্জেন্টিনায় যান। দেশটিতে ভ্রমণের জন্য রাশিয়ানদের ভিসার প্রয়োজন নেই ।
আর্জেন্টিনাতে জন্ম নেওয়া শিশুর বিদেশি বাবা-মায়েরও আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব পাওয়ার অপেক্ষাকৃত সহজ পথ রয়েছে। যা দুই বছরেরও কম সময়ে পাওয়া যেতে পারে।
কতজন রাশিয়ান মহিলা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে আর্জেন্টিনায় আসছেন তার পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। তবে আর্জেন্টিনায় রাশিয়ান দূতাবাসের প্রধান জর্জি পোলিন গার্ডিয়ানকে বলেন, আমরা অনুমান করছি, ২০২২ সালে দুই থেকে আড়াই হাজার রাশিয়ান আর্জেন্টিনায় পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই রাশিয়ান নারী। তারা আর্জেন্টিনায় সন্তান জন্মদানের পরিকল্পনা করছেন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে।
এসআর