স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখন থেকে ২৪ ঘণ্টাই অভিবাসন বিষয়ে তথ্য মিলবে প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার থেকে। অভিবাসী এবং তাদের পরিবারকে তথ্য প্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রত্যাশা হটলাইন পরিষেবা সরকারের প্রবাসবন্ধু কল সেন্টারের সঙ্গে একীভূত হওয়ার মধ্য দিয়ে সার্বক্ষণিক এই কল সেন্টার চালু হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নিরাপদ, বিধিসম্মত ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশে হটলাইন পরিষেবা আরও শক্তিশালী হলো। রবিবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসং¯থান মন্ত্রণালয়ে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রত্যাশা হটলাইন পরিষেবাটি ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কাছে স্থানান্তর করা হয় প্রবাসবন্ধু কল সেন্টারের সঙ্গে একীভূত করতে। এই একীভূতকরণ অভিবাসী এবং প্রত্যাবর্তনকারী উভয়কেই আরও সামগ্রিক এবং ব্যাপক তথ্য প্রদান করতে সক্ষম করবে। প্রত্যাশা হটলাইনটি ‘বাংলাদেশ : সাসটেইনেবল রিইন্ট্রিগ্রেশন এ্যান্ড ইমপ্রুভড মাইগ্রেশন গবার্নেন্স’ প্রকল্পের একটি উদ্যোগ। প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে ব্র্যাকের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আইওএম বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ষষ্ঠ সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিবাসী বিদেশে প্রেরণ করে এবং রেমিটেন্সের অষ্টম সর্বোচচ গ্রহণকারী দেশ। প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে যান এবং বর্তমানে আনুমানিক এক কোটি ৩০ লাখের বেশি বাংলাদেশী বিদেশে কাজ করছেন। এই বাংলাদেশী অভিবাসীরা রেমিটেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অনেক বড় অবদান রাখছেন। নিরাপদ অভিবাসন এবং পুনরেকত্রীকরণের বিষয়ে আগ্রহী এবং প্রত্যাবর্তনকারী অভিবাসী এবং তাদের পরিবারকে তথ্য প্রদানের জন্য প্রত্যাশা প্রকল্প ২০১৯ সালে একটি হটলাইন পরিষেবা প্রতিষ্ঠা করে। একইভাবে, প্রবাসী কর্মীদের অবদান এবং তাদের তথ্য প্রদানের গুরুত্ব বিবেচনা করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ২০১৬ সালে প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার চালু করে। অভিবাসী ও তাদের পরিবারেকে ২৪ ঘণ্টা ভিত্তিতে এবং আরও ব্যাপক তথ্য সহায়তা প্রদানের জন্য প্রবাসবন্ধু কল সেন্টারের সঙ্গে প্রত্যাশা হটলাইনটির একীভূত করা হয়।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন এবং রেমিটেন্স বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ সময় সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতীয় উন্নয়নের একটি মূল ক্ষেত্র হিসেবে অভিবাসনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। অষ্টম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় নিরাপদ, সুশৃঙ্খল নিশ্চিত করার জন্য ১০ দফা এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অভিবাসনবিষয়ক তথ্য প্রচার এই পরিকল্পনার সাফল্যের চাবিকাঠি। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোডের মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, ‘বোর্ডের পক্ষ থেকে আমরা প্রবাসী কর্মীদের এবং তাদের পরিবারের কল্যাণে অক্লান্ত পরিশ্রম করছি। প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার এমন একটি উদ্যোগ যা মানুষের কাছে অভিবাসন-সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করে। প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার ও প্রত্যাশা কল সেন্টারের একীভূত হওয়ার ফলে আমরা এখন আরও ভালভাবে এবং সব সময় মানুষের তথ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারব। আইওএম বাংলাদেশের অফিসার ইন চার্জ ফাতিমা নুসরাত গাজ্জালী বলেন, অভিবাসীরা তাদের রেমিটেন্স দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ বিষয়ে বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, ‘নানা সমস্যা এবং সম্ভাবনার সমন্বয়ে অভিবাসন একটি জটিল বিষয়। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রতাশা হটলাইন পরিষেবা প্রতিষ্ঠায় মন্ত্রণালয এবং ওযজে আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডকে সহায়তা করতে পেরে খুশি। প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার অভিবাসন সম্পর্কিত সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে চারটি টেলিফোন নম্বরের মাধ্যমে। বাংলাদেশের যে কেউ বিনা খরচে স্থানীয় নম্বরে (০৮০০০১০২০৩০) যোগাযোগ করে তথ্য চাইতে পারেন। দেশ-বিদেশের কলকারীরাও যে কোন সময় অন্য তিনটি নম্বরে (০৯৬১০১০২০৩০, ০১৭৯৪৩৩৩৩৩৩, ০১৭৮৪৩৩৩৩৩৩) কল করে তথ্য পাবেন। অভিবাসন-সংক্রান্ত তথ্যসেবা প্রদানের জন্য বর্তমানে কল সেন্টারে নয়জন প্রশিক্ষিত কর্মী কাজ করছেন। আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ : মোঃ শরিফুল ইসলাম, ফোন ০১৯১৫৬৩১৬০৮।