ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ফুলপ্রেমীদের জন্য নতুন উপহার টিউলিপ

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

ফুলপ্রেমীদের জন্য নতুন উপহার টিউলিপ

কাওসার রহমান ॥ ভালবাসা দিবসের প্রধান উপহার ফুল। আর সে ফুলের মধ্যে সবার পছন্দ গোলাপ। তাও আবার লাল গোলাপ। কিন্তু ভালবাসা দিবস উপলক্ষে এরই মধ্যে গোলাপের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আজ বসন্ত ও ভালবাসা দিবসে আরও বাড়বে। তবে এবারের ভালবাসা দিবসে ফুলের বাজারে নতুন মাত্রা এনেছে শীত প্রধান দেশের ফুল টিউলিপ। এবারের ভালবাসা দিবসে ফুলপ্রেমীদের জন্য নতুন উপহার টিউলিপ। গদখালীতে প্রতিটি টিউলিপ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা করে। আর ঢাকায় দু’একটি দোকানে প্রতি পিস টিউলিপ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা করে। ব্যবসায়ীরা জানান, একেক বছর ভালবাসা দিবসে একেক রকমের গোলাপের চাহিদা সৃষ্টি হয়। তিন বছর পর এবারের চাহিদা লাল গোলাপের। ২০১৫ সালের ভালবাসা দিবসে ফুল মার্কেটে চাহিদা ছিল হলুদ গোলাপের। ২০১৮ সালে চাহিদা হয় সাদা গোলাপ। এবার চাহিদা লাল গোলাপের। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার ফুলের চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম তুলনামূলক বেশি। বিশেষ করে ছোটবড় নির্বিশেষে সবার কাছে প্রিয় যে গোলাপ। চাহিদা ও দামও বেশি। রবিবার ভোরে পাইকারি বাজারে ৩০০ পিস গোলাপের বান্ডিল ৭ হাজার থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা কিছুদিন আগেই দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ফুল চাষীরাও বলছে, দুই বছরের ক্ষতি কাটিয়ে এবার ভালবাসা দিবসের ফুল বিক্রিতে সব খরচ উঠে দ্বিগুণ লাভ হবে। তারা জানান, মহামারী করোনার কারণে গত দুই বছরে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাগানের উৎপাদিত ফুল বাগানেই নষ্ট হয়েছে। আয় ছিল না, কিন্তু ফুলগাছ পরিচর্যা করে সার-ওষুধ দিতে হয়েছে। এবার ফুলের চাহিদা বেড়েছে। পহেলা ফাল্গুন, ভালবাসা দিবস ফুলের ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে। ২১ ফেব্রুয়ারিতে ফুলের ভাল দাম পাওয়া যাবে বলে চাষীদের আশা। ভালবাসা দিবসে ফুলের চাহিদা বাড়ে চারগুণ। এক পিস গোলাপের মূল্য ৩০-৪০ টাকা। ফুলের দাম এবার অনেক বেশি। আবার সঠিক সময়ে ফুলচাষীরা ফুল দিতে পারে না। ফুল আমদানি অনেক কমে গেছে। শেষ পার্যন্ত ভালবাসা দিবসে চাহিদা অনুযায়ী ফুলের যোগান দেয়া যাবে কিনা এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা চিন্তায় আছেন। রবিবার ছিল বাংলা মাঘ মাসের শেষদিন। শীতের বিদায়ী দিন শেষে আজ সোমবার ফাল্গুন মাস শুরু হবে। একই দিনে উদ্যাপিত হবে বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এই দুটি দিনকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ফুলের বাজারে বেচাকেনা জমজমাট। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে গড়ে উঠা ফুলের বাজারে বিক্রেতারা এখন ভীষণ ব্যস্ত ফুলের নানা আয়োজন তৈরিতে। কেউ হেডব্যান্ড তৈরি করছেন কেউ ফুল সুন্দর করে গুছিয়ে রাখছেন, আবার কেউ মালা বা তোড়া তৈরি করছেন। রাজধানীর শাহবাগের পাইকারি ও খুচরা ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের ফুল দোকানে তুলেছেন। বিভিন্ন স্থানের স্থায়ী ও ভাসমান ফুল ব্যবসায়ীরা ভিড় করছেন শাহবাগের দোকানগুলোতে। ব্যবসায়ী ছাড়াও সাধারণ মানুষ আগে থেকে ফুল কিনতে এসেছেন। এর মধ্যে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। কাকডাকা ভোরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শাহবাগের পাইকারি ফুলের বাজারে ছোটবড় ব্যবসায়ীরা ফুল কিনতে ছুটে আসেন। দরদাম করে দেশীয়, থাই এবং ইন্ডিয়ান গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা, জুঁই, বেলিমালা, লিলি, ক্যালনডুলা, অর্কিড, কিসিমসিমা মিম, জিপসি, কানডিশন, লিমু, চেরাগে-া এবং ওয়েস্টার ফুল কিনেছেন। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাহবাগের অনন্যা পুষ্প বিতানের মালিক লোকমান হোসেন বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীর শাহবাগসহ অন্যান্য ফুল বাজারে ট্রাকভর্তি ফুল আসতে শুরু করেছে। কিন্তু বিধিনিষেধের কারণে বেচাবিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছি।’ কয়েক বছর আগেও দেশে ফুলের বাজারে হাতেগোনা কয়েক ধরনের ফুল পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে দেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ বেশি হওয়ায় ও আমদানি করায় বাহারি রঙের ফুল পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে জারবেরা, গ্লাডিওলাস, অর্কিড, কসমস, ডালিয়া, টিউলিপ, কালো গোলাপ, ঝুমকা লতা, গাজানিয়া, প্লামেরিয়া, চন্দ্রমল্লিকা অন্যতম। সারাবছর দামও থাকে হাতের নাগালে। কিন্তু বিশেষ দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা থাকায় অতি মুনাফার লোভে বেশি দামে ফুল বিক্রি করেন বিক্রেতারা। এবার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে বাজারে সব ধরনের ফুলের দাম দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত কারণে গত দুই বছর থেকে পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালবাসা দিবসে আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা কম থাকায় আজ ফুলের বেচাকেনা ভাল হতে পারে। ফুলের রাজধানী যশোরের গদখালীর ফুলবাজারেও চলছে ফুল কেনাবেচার মেলা। বসন্ত ও ভালবাসা দিবসের আগমুহূর্তে ফুলের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বিক্রিও বেড়েছে সেই হারে। এই দু’টি দিবসকে ঘিরে ইতোমধ্যে ১০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। আগামী দু’দিনে আরও ৫ কোটি টাকা ফুল বিক্রির আশা এই অঞ্চলের ফুলচাষীদের। গদখালী ফুলবাজার ঘুরে আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে চাষীরা ফুল নিয়ে বাজারে এসেছেন। পাশাপাশি দূর-দূরান্তের ক্রেতারাও হাজির হয়েছেন সেখানে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণা আর হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা ফুলের পসরা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শত শত ফুলচাষী। কেউ ভ্যান, কেউ সাইকেল বা ঝুড়ির মধ্যে ফুল রেখে ঢাকা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ফুলের দরদামে ব্যস্ত। গত চারদিন ধরে ফুলের চাহিদা বাড়তি থাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি ফুল কিনছেন এই বাজার থেকে। একইসঙ্গে বেশি দাম পাওযায় ফুলচাষীরাও বাজারে দ্বিগুণ ফুল এনেছেন। সবমিলিয়ে উৎসবের এই মাসে আবারও ফুল বেচাকেনা জমে ওঠায় ফুলচাষী ও ব্যবসায়ীদের মনে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এদিন গদখালীতে প্রতিপিস গোলাপ ফুল বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। আর চায়না রোজ বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এছাড়া রজনীগন্ধা স্টিক বিক্রি হয়েছে ৯-১০ টাকা, গ্লাডিওলাস ৮-১২ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ১২-১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে প্রতিহাজার ৬-৭শ’ টাকা। দু’সপ্তাহ আগেও এই ফুলের দাম অর্ধেকেরও কম ছিল। পহেলা ফাল্গুনসহ তিন দিবসে ফুলের বাজার চাঙ্গা হওয়ায় প্রায় দুই বছর পর মুখে হাসি ফুটেছে গদখালীর চাষীদের। তারা বলছেন, এই তিন দিবস যত কাছে আসবে ফুলের দামও তত বাড়বে। তারা আশা করছেন, গত দুই বছর ধরে করোনায় লাগাতার যে ক্ষতির শিকার হয়েছেন তারা, এ বছর ফুল বিক্রি করে কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন। গদখালী বাজারে ফুল নিয়ে আসা পানিসারার হাড়িয়া নিমতলা এলাকার তরুণ ফুলচাষী রাসেল হোসেন বলেন, অনেক দিন পর বেচাকেনা অনেক ভাল হচ্ছে। ভালবাসা দিবস ও বসন্তবরণ উপলক্ষে বিক্রি বাড়ায় তিনি খুশি। গদখালীতে প্রথমবারের মতো টিউলিপ চাষ করেছেন পানিসারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন। তার পাঁচ শতক জমিতে ফুটেছে বিভিন্ন রঙের সাত প্রকারের টিউলিপ ফুল। তিনি জানান, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে তার জমিতে টিউলিপ ফোটা শুরু হয়েছে। ভালবাসা দিবসে এসব টিউলিপ বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১২০ টাকা করে। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি একাংশের সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, সরকারের বিধি নিষেধে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে ফুলের বাজার। মানুষ ফুল কিনছে। বিভিন্ন কারণে এবার ফেব্রুয়ারিতে ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোয় এ পর্যন্ত বসন্ত ও ভালবাসা দিবস ঘিরে প্রায় ১০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। পরিস্থিতি ভাল থাকলে আগামী দু’দিনে আরও ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হওয়ার আশা রয়েছে। আব্দুর রহিম আরও জানালেন, দ্বিগুণ দামে ফুল বিক্রি হওয়ায় এবং বাইরে থেকে প্রচুর ক্রেতা আসায় ফুলচাষীরা খুশি। আবহাওয়া ও পরিবেশ ভাল থাকলে একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে আরও ভাল বেচাকেনার আশা করছেন তারা। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্যমতে, যশোরে প্রায় ৬ হাজার ফুলচাষী রয়েছেন। তারা অন্তত ১৫শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফুল চাষ করেন। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা, নাভারণ, নির্বাসখোলার বিভিন্ন মাঠে অন্তত ১১ ধরনের ফুল চাষ হয়ে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শীত প্রধান দেশের ফুল টিউলিপ ফুল চাষের মাধ্যমে গদখালীতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। বসন্ত উৎসব ও ভালবাসা দিবসকে ঘিরে প্রতিবছরই গদখালীর ফুলচাষীরা নতুন জাতের ফুল উপহার দিয়ে থাকেন। এবারের ভালবাসা দিবসে ফুলপ্রেমীদের জন্য নতুন উপহার টিউলিপ। নানান ফসলের জেলা ফরিদপুরে ফুলচাষ একেবারেই নতুন। চাষাবাদ কম। একসময় ফরিদপুরের মানুষ যশোরের ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকত। এখন জেলার তরুণ উদ্যোক্তাদের ফুল দিয়েই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে বৃদ্ধি পাচ্ছে ফুলচাষ। এ ফুলচাষে তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে বাগানে শোভা পাচ্ছে বাহারি রঙের নানান ধরনের ফুল। তারমধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জাতের-রঙের গোলাপ, হরেক রকম জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জিপসি, রজনীগন্ধাসহ নানা জাতের ফুল। প্রতিনিধিরা জানান, ফুলের বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষীরা। সামনে তিনটি দিবস থাকায় তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। বর্তমানে ১টি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, জারবেরা ১৫ থেকে ২০ টাকা, রজনীগন্ধা ১০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৫ টাকা, গ্লাডিওলাস ১২ থেকে ১৫ টাকায়। এবারের ভালবাসা দিবসে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা গ্রামের ফুলচাষী দুই ভাই শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলামও ভীষণ ব্যস্ত ফুল নিয়ে। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাস দিবস উপলক্ষে সকল গাছের ফুল কেটে প্রস্তুত করেছেন তারা। দেশী-বিদেশী লাল গোলাপ, হলুদ ও সাদা গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাসসহ নানান ফুলের সুবাস ছড়াবে ভালবাসা দিবসে। ফুলচাষী শহিদুল ইসলাম বলেন, ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফুলের আবাদ করেছি। ফুলের কোয়ালিটি ও ফলন ভাল হয়েছে। দামও চড়া পাচ্ছি। লাল গোলাপ প্রতি পিস পাইকারি ১৫-১৮ টাকা, হলুদ গোলাপ ১০-১২ টাকা, গাঁদা ৫-৬ টাকা ও রজনীগন্ধা ১০-১২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ বছর সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সিরাজগঞ্জ-বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে তারা ফুল বিক্রি করে থাকেন। আবার কেউ কেউ বাগান থেকে ফুল পাইকারি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বগুড়া থেকে আসা পাইকারি ফুল ব্যবসায়ী মোঃ আসলাম উদ্দিন বলেন, আমার ফুলের দোকান বগুড়া শহরে। চার বছর ধরে এখান থেকেই ফুল সংগ্রহ করি। এখানকার ফুলের কোয়ালিটি খুব ভাল, চাহিদাও বেশি।
×