স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার/ সংবাদদাতা, টেকনাফ ॥ টেকনাফের হৃীলায় এক মেম্বারেরর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা মারধর ও লাঞ্চিত করেছেন কোস্ট নামের এনজিওর ছয়জন কর্মকর্তাকে। তাদের মারধরে আহতদের মধ্যে দুই নারী কর্মীও রয়েছেন। ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ আসছে দেখে পালিয়ে যায় চিহ্নত সন্ত্রাসীরা। হ্নীলার নতুন জেলে পাড়ায় বুধবার দুপুরে ন্যাক্কার জনক এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, নতুন জেলে পাড়ায় প্রকল্পের উপকারভোগীদের সঙ্গে মতামত সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি উঠান বৈঠক করছিলেন এনজিও কর্মকর্তারা। এসময় ওই বৈঠকে এসে এনজিও কোস্ট ফাউন্ডেশনের ৬ জন কর্মকর্তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে লাঞ্ছিত করেন হৃীলা ৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার রেজাউল করিমেরর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা। এসময় সন্ত্রাসী মোহাম্মদ ইসমাইল সহ মেম্বারের সহযোগীরা কিলঘুষি ও লাথি মারে কর্মকর্তাদের।
আহতরা হলেন- কক্সবাজারের কোস্ট ফাউন্ডেশন এনজিও সংস্থার অধীনে প্রকল্প ব্যবস্থাপক তাহরিমা আফরোজ টুম্পা, যুগ্ম পরিচালক ফেরদৌস আরা রুমি, প্রধান-হিউম্যানিটারিয়ান রেসপন্স মো: শাহীনুর ইসলাম, মনিটরিং অফিসার আক্তার হোসেন, ফিল্ড কো-অডিনেটর রহিম উল্লাহ ও ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর মিজানুর রহমান।
কোস্ট ফাউন্ডেশন কক্সবাজার জেলায় ২০০১ সাল থেকে সকল উপজেলার উপকূলীয় দরিদ্র, নারী, শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে আসছিল। ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে রোহিঙ্গা আগমনের পর থেকে কক্সবাজার জেলায় মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলার যে সকল ইউনিয়নে রোহিঙ্গা আগমনের ফলে ক্ষতি হয়েছে, তাদের জীবনমান উন্নয়নে কোস্ট ফাউন্ডেশন বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় টেকনাফের হ্নীলার ১ থেকে ৭ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত ৪৮৫ পরিবারের সঙ্গে কাজ করে আসছিল। সকল কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে কোস্ট।
বুধবার দুপুরে উঠোন বৈঠক চলাকালে সন্ত্রাসী মাদক কারবারি মেম্বার ও তার মামা ৬ জন ঘটনাস্থলে এসে অহেতুক উত্তেজিত হয়ে ৬ জন কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগাজ ও এলাকা হতে এক্ষুনি চলে যাবার বলেন। হুমকি ধমকি দেয়াকালীন মেম্বারকে কাজের ব্যাপারে বোঝানোর চেষ্টা করলেও কোন কথা কর্ণপাত না করে রেজাউল করিম মেম্বার ঝাপিয়ে পড়ে এনজিও কর্মীদের উপর। তাদের ৬ জনের পরিহিত কাপড় ধরে টানা হেচড়া করে। শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত ও লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে সবাইকে এলোপাথারি কিল ঘুষি ও লাথি মারে সন্ত্রাসীরা। তাদের চিৎকারে পাশ্ববর্তী লোকজন এসে উদ্ধার করে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দেয়। সন্ত্রাসীদের পরিস্থিতি ভয়াবহ বুঝতে পেরে কর্মকর্তারা আইনের সহায়তা চেয়ে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে। ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে টেকনাফ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসতে দেখে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে এনজিও সংস্থার আহত কর্মীরা টেকনাফ থানায় এজাহার দায়ের করেন বলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: হাফিজুর রহমান সত্যতা নিশ্চিত করেন।