ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১০:৫১, ১ ডিসেম্বর ২০২১

সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

অনলাইন ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৎকালীন তরুণ ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান সবার আগে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বাঙালী জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু, বাঙালী ইতিহাসের মহানায়ক ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। ১৯৫২-এর ভাষা-আন্দোলন, জাতির পিতা ঘোষিত ১৯৬৬-এর ছয়দফার ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন ও তার আহ্বানে ১৯৭১-এর মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তী সময়ে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক সত্তার বিকাশ ও দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীরা অগ্রভাগে থেকে অব্যাহতভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চা ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টিতে এ প্রতিষ্ঠানটির অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আাজ বুধবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী-শিক্ষক, অভিভাবক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত অনন্য দক্ষতায় মনন ও মানবিকতায় অভূতপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে এই মহীরুহ বিদ্যায়তন সারাদেশকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে পরিপুষ্ট করে চলেছে। শেখ হাসিনা বলেন, এমন একটি সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে, যখন সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করার ক্ষেত্রেও এ বিশ্ববিদ্যালয় তার গবেষণা-প্রচেষ্টা নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে জেনে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। অধিকতর উন্নত গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যতে যে কোনো সংকট উত্তরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ জ্ঞানের সব শাখায় এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম-আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা-মনন ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই ১৯৭২ সালে একটি সুশিক্ষিত জাতি গঠনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। উচ্চশিক্ষা প্রসারের জন্য তার দূরদর্শী নির্দেশনায় ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করা হয়, যার মূল বার্তা ছিল- বিশ্ববিদ্যালয়ে চিন্তার স্বাধীনতা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করা। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমরা যতবারই সরকার গঠন করেছি, জাতির পিতার মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ততবারই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাঙ্গন সন্ত্রাস-বহিরাগতমুক্ত করে শিক্ষা-গবেষণার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে খুবই গৌরব অনুভব করি, শেখ কামাল, সুলতানা কামালসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের অনেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যালামনাই। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার নাড়ীর সম্পর্ক বিদ্যমান। তিনি বলেন, জাতির পিতা শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আগামী প্রজন্মের ভাগ্য শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করে। ছাত্রছাত্রীদের যথাযথ শিক্ষাদানে ব্যত্যয় ঘটলে কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন হবে।’ তাই নতুন জ্ঞান আহরণ, উদ্ভাবন, অনুশীলন ও বিতরণে সম্মানিত শিক্ষকদের আরও তৎপর ও আন্তরিক ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাই। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করেন।
×