ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

শংকর লাল দাশ

ড্রাগন চাষে সফল উদ্যোক্তা

প্রকাশিত: ০১:২১, ৭ নভেম্বর ২০২১

ড্রাগন চাষে সফল উদ্যোক্তা

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের কোটখালী গ্রামের সালমা বেগম ড্রাগন ফল চাষে এলাকায় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন। মাত্র পাঁচ শতক পরিত্যক্ত জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করে বছরে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা। যা পরিবারে সচ্ছলতার পাশাপাশি অনেকের কাছে আদর্শ অনুপ্রেরণায় রূপ নিয়েছেন। আশপাশের অনেকেই এগিয়ে এসেছেন ড্রাগন ফল চাষে। একের পর এক তৈরি করছেন কৃষি উদ্যোক্তা। স্থানীয় কৃষি বিভাগও সালমা বেগমের কাজে প্রশংসা করে জানিয়েছে, সকল উদ্যোক্তাকে প্রয়োজনীয় সবধরনের সহায়তা করা হবে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য এলাকাতেও ড্রাগন ফলের চাষ ছড়িয়ে দেয়া হবে। সালমা বেগম পেশায় একটি বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা। বছর পাঁচ আগে পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠি গ্রামে ড্রাগন ফলের চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। সেখান থেকে ৩০টি চারা এনে বাড়ির পাশের এক শতক পরিত্যক্ত জমিতে তা রোপণ করেন। কৃষি কর্মীদের কাছ থেকে জেনে পরিচর্যায় আশানুরূপ ফল পান। পরের বছর তিন শতক এবং তার পরের বছর থেকে পাঁচ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করেন। সালমা বেগম (৪৫) বলেন, যে জমি এক সময় পরিত্যক্ত ছিল, তাতেই এখন বছরে প্রায় লাখ খানেক টাকা আয় হয়। বাড়ি থেকেই লোকজন পাঁচ শ’ টাকা কেজি দরে ড্রাগন ফল কিনে নিয়ে যায়। সংসারের যাবতীয় কাজের পাশাপাশি এ আয় পরিবারের সদস্যদের স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে আসায় সহায়ক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার দেখাদেখি গাঁয়ের বহু মানুষ ড্রাগন ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। অনেকেই আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করছেন। চাষাবাদ পদ্ধতি জেনে যাচ্ছেন। আমিও তাদের যথাসাধ্য সহায়তা করছি। সালমা বেগমের স্বামী মোঃ ইলিয়াস মোল্লা (৫০) জানান, তার স্ত্রী প্রথমে একক প্রচেষ্টায় ড্রাগন ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। এখন পরিবারের সকলেই অবসরে বাগান পরিচর্যা করেন। আগামী বছর বাগানের পরিধি বাড়িয়ে দশ শতক করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, বাগান থেকে বাড়তি অর্থ আসায় ছেলেকে বরিশাল ক্যাডেট কলেজ এবং মেয়েকে গলাচিপা সরকারী ডিগ্রী কলেজে পড়ানো সহজ হয়েছে। গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে সালমা বেগমের সুখ্যাতি। প্রায় প্রতিদিনই উৎসাহী লোকজন আসছেন তার বাগান দেখতে। সে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন ফলের চারা ও জেনে যাচ্ছেন চাষাবাদ পদ্ধতি। কেউ কেউ বাগান করার কাজ শুরুও করে দিয়েছেন। সালমা বেগমের ড্রাগন ফলের চাষের প্রশংসা করে গলাচিপা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আরজু আক্তার বলেন, নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সালমা বেগম যে সফলতার উদাহরণ তৈরি করেছেন, তা নিঃসন্দেহে অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত। তার এ চাষাবাদ দেখে এলাকার অনেকেই ড্রাগন ফলের চাষে এগিয়ে এসেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এসব উদ্যোক্তার পাশে থাকবে এবং সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে।
×