ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কাবুলে নারী অধিকারের পক্ষে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তালেবান

প্রকাশিত: ১০:৩২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

কাবুলে নারী অধিকারের পক্ষে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তালেবান

অনলাইন ডেস্ক ॥ অধিকারের দাবিতে কাবুলে বহু নারীর করা এক বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করেছে তালেবান। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা একটি সেতু থেকে হেঁটে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস এবং পিপার স্প্রে ছোঁড়া হয়। কাবুল এবং হেরাতে মহিলাদের বেশ কয়েকটি বিক্ষোভের মধ্যে এটি সর্বশেষ। নারীরা বাইরে কাজ করার অধিকার এবং সরকারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়েছে এই বিক্ষোভে। তালেবান বলেছে যে, আগামী দিনে তারা তাদের প্রশাসনের গঠন কাঠামো ঘোষণা করবে। তালেবান বলেছে নারীরা সরকারে যোগ দিতে পারবে, কিন্তু মন্ত্রীর পদে থাকতে পারবে না। অনেক নারী ভয় পাচ্ছেন যে, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতায় থাকার সময়ে নারীদের সাথে যে আচরণ করা হয়েছিল, সেই একই আচরণ আবারো করা হবে কিনা। নারীদের বাইরে বের হতে হলে মুখ ঢেকে রাখতে হতো এবং ছোটখাটো অপরাধের জন্যও কঠোর শাস্তি দেওয়া হতো। সাংবাদিক আজিতা নাজিমি আফগান টেলিভিশন টোলোকে বলেন, "পঁচিশ বছর আগে, যখন তালেবান এসেছিল, তারা আমাকে স্কুলে যেতে বাধা দিয়েছিল।" "তাদের শাসনের পাঁচ বছর পর, আমি ২৫ বছর পড়াশুনা করেছি এবং কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমাদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য হলেও, আমরা এটি হতে দেব না।" আরেকজন বিক্ষোভকারী সোরায়া রয়টার্সকে বলেন, "তারা বন্দুকের ম্যাগাজিন দিয়ে মহিলাদের মাথায় আঘাত করে এবং মহিলারা রক্তাক্ত হয়ে পড়ে।" এদিকে, কাবুলের উত্তরে পাঞ্জশের উপত্যকায়ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে স্থানীয় যোদ্ধারা তালেবান দখল রুখতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে দাবি এবং পাল্টা দাবি রয়েছে। তালেবান বলছে যে, তারা আরো দুটি জেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং প্রদেশটির কেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তানের ন্যাশনাল রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) এর একজন মুখপাত্র বলেন, প্রচণ্ড লড়াই চলছে এবং হাজার হাজার তালেবানকে ঘিরে রাখা হয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তান সোভিয়েত দখলে থাকার সময় এবং তালেবানদের আগের শাসনামলে পাঞ্জশের উপত্যকায় দেড় থেকে দুই লাখ মানুষের বাস ছিল। এনআরএফের নেতা আহমদ মাসউদ হেরাতে নারীদের বিক্ষোভের প্রশংসা করেন এবং বলেন পাঞ্জশেরে প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে। এনআরএফ বা তালেবানদের কোনো দাবিই স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছাড়ার পর কাবুল বিমানবন্দরের কার্যক্রম আবারো শুরু হচ্ছে। আফগান বিমান সংস্থা আরিয়ানা তিনটি শহর: হেরাত, মাজার-ই-শরীফ এবং কান্দাহারের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট আবারো চালুর ঘোষণা দিয়েছে। আল-জাজিরা টিভি কাতারের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, কাতারের একটি কারিগরি দল বিমানবন্দর আবারো সচল করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে ত্রাণবাহী ফ্লাইট চলাচল সম্ভব হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন রবিবার কাতার সফর করবেন। দেশটি আফগানিস্তান বিষয়ে অন্যতম মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে। তবে মি. ব্লিংকেন এই সফলে তালেবানদের কারো সাথে সাক্ষাতের আশা নেই। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই -এর প্রধান জেনারেল ফয়েজ হামিদ কাবুলে পৌঁছেছেন। কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদের কোন উত্তর দেননি। একজন কর্মকর্তা এই সপ্তাহের শুরুতে রয়টার্সকে বলেছিলেন যে, তিনি তালেবানকে আফগান সামরিক বাহিনীকে পুনর্গঠনে সহায়তা করতে পারেন। পশ্চিমা পরাশক্তিরা আইএসআই -এর বিরুদ্ধে তালেবানকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করে থাকে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। সূত্র : বিবিসি বাংলা
×