ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নীলফামারীতে এক শিশু করোনা আক্রান্ত, বাবাও করোনা ইউনিটে

প্রকাশিত: ১৬:০১, ২৯ জুন ২০২১

নীলফামারীতে এক শিশু করোনা আক্রান্ত, বাবাও করোনা ইউনিটে

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ পরিস্থিতি সহজ নয়। অতিমারী করোনার সঙ্গে লড়াই চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে দেশে করোনা আক্রান্তের রেখাচিত্র ঊর্ধ্বমুখী। এবার নজরে পড়ছে করোনা আক্রান্ত শিশুরা হচ্ছে। নীলফামারী শহরে চৌদ্দ মাসের এক শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। শিশুটি তার মা-বাবার সঙ্গে থাকলেও তাঁদের কারও এই ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। আজ মঙ্গলবার নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট (তত্বাবধায়ক) ডাঃ মেজবাহুল হাসান চৌধুরীর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিশুটিকে জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির সঙ্গে তার বাবাও থাকছেন। শহরের উকিলের মোড় মহল্লার বাসিন্দা নীলফামারী সরকারী কলেজের রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্য্যাপক মোঃ নুরুল করিম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মুঠোফোনে তার সঙ্গে কথা বলা হয়। তিনি জানান, সোমবার(২৮ জুন) ভোরে হঠাৎ দেখি আমার ১৪ মাসের ছেলে তাহজিব ছটপট করছে। তার শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ছুটি আসি। চিকিৎসকরা আমার ছেলেকে অক্সিজেন দিয়ে রাখেন। দুপুরে চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুটির র্যাপিট এন্টিজেন্টে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সেই সঙ্গে আমি, আমার সহধর্মীনী ও আমাদের ৪ বছরের মেয়েটিরও নমুনা পরীক্ষা করাই। রির্পোটে শুধু মাত্র আমার ১৪ মাস বয়সের ছেলে তাহজিবের করোনা পজেটিভ আসে। নুরুল করিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাসে লিখেছেন “আমার তাহজিব এর জন্য সবাই দোয়া করবেন। বাবাটা আমার করোনা পজিটিভ, আমরা হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে আইসোলেটেড হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি”। জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অমল রায় জানান, শিশুটির মা-বাবা ও তার বড় বোনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন 'নেগেটিভ' এসেছে। তাই আবার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা জন্য দিনাজপুরের এম আব্দুল রহিম মেডিকেল কলেজের পিসিআরে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির বয়স কম। এটি বিবেচনায় তার সঙ্গে বাবাকেও করোনা ইউনিটে রাখা হয়েছে। বিষয়টি আমরা জরুরী ভাবে তত্বাবধান করছি। শিশুটির শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা ছিল। অক্সিজেন দেয়ার পর শিশুটি এখন বেশ সুস্থ্য আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমার জানা মতে এমন অনেক পরিবার আছে, যাঁদের মধ্যে মা-বাবা ও সন্তান...সকলের করোনা রিপোর্টই পজেটিভ। দশ থেকে আঠেরোর মধ্যে করোনায় আক্রান্তে সংখ্যা এ বার অনেক বেশি। আগে বার মা-বাবা আক্রান্ত হলেও দেখা গিয়েছে, সন্তানের হয়তো কিছু হয়নি। এ বার কিন্তু চিত্রটা বদলাচ্ছে। এর থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, কিয়দংশে এই ভাইরাস বায়ুবাহিত হতেও পারে। এ প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন, কোভিড-১৯-এর জন্য দায়ী সার্স-কোভ-টু ভাইরাস বায়ুবাহিত বলে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যানসেট। সেই গবেষণা থেকে উঠে এসেছে কিছু তথ্য কোভিড আক্রান্তের ঘরের বাতাসে পাওয়া গিয়েছে ভাইরাস, কোভিড হাসপাতালের এয়ার ফিল্টারেও পাওয়া গিয়েছে এই ভাইরাস। । চিকিৎসকদের মতে, পরিবারের সুরক্ষায় সবচেয়ে বড় ঢাল মাস্ক। তাই সচেতন থাকুন। দূরত্ববিধি বজায় রাখুন। যতই কষ্ট হোক, নিয়ম মেনে মাস্ক পরে চলুন। তবেই কিন্তু আগামীর পৃথিবীতে নিশ্চিন্তে শ্বাস নিতে পারবে আপনার আমার সন্তান। নীলফামারী সিভিল সার্জন ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এ পর্যন্ত জেলার ১৩ হাজার ৮৮টি নমুনার ফলাফলে এক হাজার ৮২১ জন করোনা পজেটিভ হয়। এরমধ্যে সুস্থ্য হয়েছে ১ হাজার ৬৩৫জন। মৃত্যুবরণ করে ৩৫ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৫১ জন। নতুন করে আজ মঙ্গলবার ১০৮টি নমুনা সংগ্রহ সহ ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে ৮২৬টি নমুনা।
×